Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইসি বাইরে ফিটফাট ভিতরে সদরঘাট : রিজভী

৫ জানুয়ারি ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ সারাদেশে কালো পতাকা মিছিল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

নির্বাচন কমিশন (ইসি) বাইরে ফিটফাট, ভিতরে সদরঘাট বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। তিনি বলেন, নানা কেলেঙ্কারীর হোতা বর্তমান সরকার ও এই ইসির অধীনে কখনোই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। কারণ অবৈধ ক্ষমতার মোহে রাবিশ ও জঞ্জালরা এমনভাবে ভিড় করেছে যে গোটা জাতি তাদের হাত থেকে এখন পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য হা-হুতাশ করছে। একমাত্র নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার মাধ্যমেই জনগণ নির্বোধ-রাবিশদের হাত থেকে নিজেদের স্বাধীনতা ফিরে পাবে। আর এজন্য বছরের প্রথম দিনে জনগণের প্রত্যাশা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে হবে। গতকাল (সোমবার) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
“নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিএনপি’র পরাজয় নিশ্চিত” আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন, যদি তাই হয় তাহলে ওবায়দুল কাদের সাহেবরা নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে ভয় পান কেন? ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে দেশকে গণতন্ত্রীহীনতার গভীর খাদের দিকে ঠেলে দিলেন কেন? তিনি বলেন, বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে তাদের গণবিরোধী কার্যক্রমে গোটা দেশ আজ অন্ধকারে নিমজ্জিত। যে দেশের ক্ষমতার ঘাড়ে রাবিশরা বসে আছে সেই দেশ রসাতলে যেতে বাধ্য।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চতুর্থ বর্ষপূর্তির দিন ৫ জানুয়ারি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ ও সারা দেশের জেলা-উপজেলা সদরে কালো পতাকা মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতির বিষয়ে গতকাল পর্যন্ত কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো আশ্বাস পায়নি বিএনপি। রিজভী বলেন, আজকের ভোটারবিহীন সরকার গায়ের জোরে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচন করে গণতন্ত্রকে হত্যা করে। বিএনপি এই দিবসটিকে গণতন্ত্র হত্যা দিবস, গণতন্ত্র অপহরণ দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। আমরা ঢাকা মহানগরীতে সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে সমাবেশ করার কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। একইসঙ্গে আগামী ৫ জানুয়ারি সারা দেশে জেলা ও উপজেলা সদরে কালো পতাকা মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতির বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে রিজভী বলেন, আমরা পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি চেয়েছি; গত পরশুদিন এই চিঠি দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত তাদের কাছ থেকে কোনো কথা জানতে পারিনি। তবে ৫ জানুয়ারি আমরা জনসভা অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি রাখছি।
বাংলাদেশের গণতন্ত্র লাল দেয়ালের ভেতরে বন্দী উল্লেখ করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘এক আইন, এক প্রভু হলে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের পক্ষে ভয়ঙ্কর সঙ্কট’। গণতন্ত্রে অপরিহার্য শর্ত হলো বিরোধী দল। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি সরকারি নির্যাতনে আক্রান্ত। গেল বছরেও জনগণের অগ্রযাত্রাকে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী বলপূর্বক প্রতিহত করেছে। গণতন্ত্রে স্বীকৃত সভা-সমাবেশকে তারা বানচাল করেছে। কন্ঠরোধ করার জন্য গণমাধ্যম থেকে শুরু করে নানা চিন্তা, মত ও বিশ্বাসের মানুষের ওপর নেমে এসেছে সরকারের নানা প্রকার আক্রমণের আঘাত। বিএনপি’র শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত নেতাকর্মীরা বিভিন্ন মিথ্যা ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক মামলায় জর্জরিত। জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রতীক এসময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ভুয়া ও জালিয়াতি করে সাজানো মামলায় জড়িয়ে হয়রানী করার জন্য প্রতি সপ্তাহে কয়েকদিন আদালতে হাজিরা দিতে হচ্ছে। এছাড়াও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান, বিএনপি মহাসচিব, জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যবৃন্দসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে প্রায় সারাবছরই আদালতে হাজিরা দিতে ব্যস্ত থাকতে হয়েছে। তিনি বলেন, সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের প্রতি অপপ্রচার, মিথ্যা কথা, কলঙ্ক লেপন, অশ্রাব্য-কুশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার ইত্যাদি অব্যাহত ছিল। গুম, গুপ্তহত্যা, বিচার বহির্ভূত হত্যার ছড়াছড়ি ছিল গত বছর। গুম থেকে রেহাই পাননি রাজনৈতিক নেতা, রাজনৈতিক বিশ্লেষক, সাংবাদিক, ব্যাংকার, কুটনীতিক, ব্যবসায়ী, ছাত্র তথা বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। ক্ষমতাসীনরা নিজেদের অঙ্গ সংগঠনগুলোকে বিষাক্ত সরীসৃৃপে পরিণত করেছে। তারা গোক্ষুরের মতো ঘৃনায় অন্যের জমি দখল, বাড়ী দখল, টেন্ডারদখল, নারী পুরুষ নির্বিশেষে সাধারণ মানুষ এবং রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর হামলা করেছে। ক্ষমতাসীনদের সৃষ্ট নৈরাজ্যের অন্ধকারে মানুষের সম্মান ধুলিধুসরিত। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে দলের ভাইস চেয়াপারসন এজেডএম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরফত আলী সপু, মুনির হোসেন এবং রফিকুল ইসলাম মাহতাব উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ