পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ইনকিলাব ডেস্ক : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ওপর আবারো জঙ্গিবিমান ও ট্যাংক দিয়ে কয়েক দফা হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস শহর নিয়ে যখন গোটা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে তখন ইসরাইল বার বার গাজার ওপর এ ধরনের হামলা করছে। ইরানের প্রেস টিভি জানিয়েছে, শুক্রবার বিকেলে ইসরাইলি বিমানগুলো গাজা উপত্যকার পূর্বে তুফাহ অঞ্চলে ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের কয়েকটি অবস্থানে আঘাত হানে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ কিদরা জানান, ইহুদিবাদীদের হামলায় কেউ হতাহত হয়নি। ইসরাইলি সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, ফিলিস্তিনের যোদ্ধারা অধিকৃত ভূখন্ড লক্ষ্য করে তিনটি রকেট ছুঁড়েছে যার মধ্যে দুটি রকেট ইসরাইলি আয়রন ডোম ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে প্রতিহত করা হয়েছে আর তৃতীয় রকেটটি ইসরাইলের একটি ভবনে আঘাত হেনেছে। এতে ভবনটি সম্পুর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয় বলে দাবি করেছে ইসরাইল। পুলিশ জানিয়েছে, এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এদিকে, অধিকৃত পশ্চিম তীরের বিভিন্ন শহরে শুক্রবারের বিক্ষোভ দিবসে ইসরাইলি পুলিশ ও সেনাদের হামলায় অন্তত ২৫০ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ইসরাইলি সেনারা তাজাগুলির পাশাপাশি টিয়ারগ্যাস ছোঁড়ে ও লাঠিচার্জ করে। জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে আসছে ফিলিস্তিনিরা। গত শুক্রবারও কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি গাজা ও ফিলিস্তিনের ইসরাইল অধিকৃত পশ্চিম তীরে ট্রাম্প-বিরোধী বিক্ষোভ করেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিক্ষোভ চলাকালে ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত ৫০ জন বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন। এদের অধিকাংশই গাজা সীমান্ত বরাবর এলাকায় জখম হয়েছেন। ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, সৈন্যরা তাদের বিরুদ্ধে হুমকি হয়ে ওঠা ‘প্রধান উস্কানিদাতাদের’ গুলি করেছেন, যারা সীমান্তের নিরাপত্তা বেড়াগুলো ভাঙার চেষ্টা করছিল। তিনি আরো জানান, পশ্চিম তীর ও গাজায় প্রায় চার হাজার ফিলিস্তিনি রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে। তারা ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ে ও পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনী মূলত কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করে এর জবাব দেয় বলে দাবি করেন তিনি। গাজার বিক্ষোভকারীরা ‘আমেরিকার মৃত্যু হোক, ইসরাইলের মৃত্যু হোক, ট্রাম্পের মৃত্যু হোক’ বলে শ্লোগান দেয়। অপরদিকে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা ইসরাইলের দিকে রকেট ছোড়ে। এর জবাবে ইসরাইলি ট্যাঙ্ক থেকে গাজায় গোলা নিক্ষেপ করা হয় এবং ইসরাইলি জঙ্গিবিমান ফিলিস্তিনি ভূখন্ডটিতে হামলা চালায়। ইসরাইলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ইসরাইলের দিকে ছোড়া তিনটি রকেটের মধ্যে দুটি প্রতিহত করার পর তারা গাজা নিয়ন্ত্রণকারী ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের অবস্থানগুলোতে হামলা চালিয়েছে। ইসরাইলি পুলিশ জানিয়েছে, তৃতীয় রকেটটি একটি ভবনে আঘাত করেছে, এতে ভবনটির কিছু ক্ষয়ক্ষতি হলেও কেউ আঘাত পায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের অনুসৃত নীতি উল্টে দিয়ে ৬ ডিসেম্বর জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ইসরাইল-ফিলিস্তিনি দ্ব›েদ্বর সবচেয়ে স্পর্শকাতর বিষয়টিতে ট্রাম্পের এই একপেশে সিদ্ধান্তে ফিলিস্তিনিরা চরম ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং পুরো মধ্যপ্রাচ্য ও বিশ্ব শক্তিগুলোর মধ্য ক্ষোভ তৈরি হয়। পুরো জেরুজালেমকে নিজেদের ‘শাশ্বত’ রাজধানী হিসেবে বিবেচনা করে ইসরাইল। অপরদিকে পূর্ব জেরুজালেমকে নিজেদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে চায় ফিলিস্তিন। ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরাইল যুদ্ধের সময় পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নিজেদের ভূখন্ডের অন্তর্ভুক্ত করে নেয় ইসরাইল। কিন্তু আন্তর্জাতিক স¤প্রদায় ইসরাইলের এ পদক্ষেপের স্বীকৃতি দেয়নি। বিশ্বের বেশিরভাগ রাষ্ট্রই চায়, জেরুজালেমের মর্যাদা ইসরাইল-ফিলিস্তিনের সমঝোতার মাধ্যমে নির্ধারিত হোক। এএফপি, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।