পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ষ টেন্ডারবাজি স্মাগলিং মাদক চোরাচালানে এরা এখন হটকেক
ষ রাজনৈতিক লেবাসধারী নেতারা এদের ব্যবহার করছে
আবু হেনা মুক্তি : বৃহত্তর খুলনায় আমন মৌসুমে বিবাদমান জমির ধান কাটা নিয়ে একের পর এক রক্তপাতের ঘটনায় উদ্বেগ উৎকন্ঠা সর্বত্র। খুন-জখমের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখন ধান কাটার মৌসুম। কথিত লাঠিয়াল বাহিনীর লেবাসে কিশোর সন্ত্রাসী ও ক্যাডারদের ইশারায় বেদখল হয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার একর ফসলী জমির পাকা ধান। সম্প্রতি মোড়েলগঞ্জে বিবাদমান এক বিঘা জমির ধান কাটাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২ জন নিহত ও মহিলাসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। গত শুক্রবার বেলা ৯টার দিকে পুটিখালী ইউনিয়নের পূর্ব সোনাখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন আমবাড়িয়া গ্রামের শাজাহান শেখের ছেলে পলাশ শেখ (৪৫) ও পাতাবাড়িয়া গ্রামের তোরাব আলী শেখের ছেলে ইব্রাহিম শেখ (৫২)। এরা দুজনই পেশায় মটর শ্রমিক। এই জোড়া হত্যা ঘটনার প্রধান শহিদুল খানসহ ৬ জনকে পুলিশ আটক করেছে।
জানা গেছে, গত শুক্রবার সকালে পূর্ব সোনাখালী গ্রামের আব্দুর রহিম খানের জমিতে তার বংশীয় শহিদুল খান ২০/২৫ জন লোক নিয়ে ধান কাটতে শুরু করে। এ সময় রহিম খানের লোকজন বাধা দিতে গেলে তাদেরকে পিটিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন মটর শ্রমিক পলাশ শেখ ও ইব্রাহিম শেখ।
এ ঘটনায় রক্তাক্ত জখমী নিহত পলাশের স্ত্রী রিনা বেগম (৩৫), আওয়ামী লীগ নেতা কবির শেখ (৫০), মজিবর হাওলাদার (৪৮), হেমায়েত খান (৬৬), মাসুমা বেগম (৪২) ও জাহিদ শেখ (৪২)-কে মোড়েলগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর জখমী কবির ও মজিবরকে খুলনা সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
পৌষের এই নবান্নে উৎসবের পরিবর্তে অনেক কৃষক পরিবার রিক্ত নি:স্ব হয়ে পথে বসছে। গোলযোগপূর্ন জমিতে এই কিশোর সন্ত্রাসীরা হামলা করে লুটে নিচ্ছে সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত ধান। টেন্ডারবাজি, স্মাগলিং, মাদক চোরাচালানসহ সকল কর্মকান্ডে প্রভাব বিস্তারে কিশোর ক্যাডাররা এখন হটকেক। আন্ডারওয়ার্ল্ডে এদের পজিশন ও ডিমান্ড চোখে পড়ার মত। বৃহত্তর খুলনাঞ্চলে এনকাউন্টারে বাঘা বাঘা সন্ত্রাসীরা নিহত হওয়ায় পর দল পরিচালনার দায়িত্ব এবং আন্ডারওয়ার্ল্ডের নিয়ন্ত্রণ চলে যাচ্ছে কিশোর সন্ত্রাসীদের হাতে। উঠতি বয়সী এসব কিশোর সন্ত্রাসীরা এ অঞ্চলে হত্যা, অপহরণসহ নানা অপরাধ কর্মকান্ড ঘটাচ্ছে। তারা চরমপন্থী দলগুলোকেও অনেকটা সংগঠিত করছে। র্যাব পুলিশের অভিযান সত্তে¡ও কিশোর সন্ত্রাসীরা মাদক দ্রব্য পাচার, বিক্রি, অস্ত্র বেচা কেনা, মোবাইল ফোনে চাঁদাবাজি ও চরমপন্থী পরিচয়ে বেনামে চিঠি দিয়ে তটস্থ করছে সাধারন মানুষকে।
সূত্রমতে, খুলনাঞ্চলের চলতি আমন মৌসুমে কথিত জোর্দ্দার ও টাউট বাটপারদের হয়ে এরা অন্যের জমির ধান কাটিয়ে দিচ্ছে মোবাইল ফোনের হুমকির মাধ্যমে। ভয়ে অনেকেই মুখ খুলছে না। এদের সিদ্ধান্তই এখানে চ‚ড়ান্ত। অনেক রাজনৈতিক লেবাসধারী নেতারা এদেরকে ব্যবহার করছে। টেন্ডারবাজিতেও শোডাউন করছে তারা। বিষয়টি খোদ সরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েরই মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ কারণে এসব কিশোর সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বহু অভিযোগ পুলিশ বিভাগ র্যাব ও খোদ সরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা পড়লেও এরা থেকে যাচ্ছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
জানা গেছে, খুলনা মহানগরীসহ বিভাগের চরমপন্থীপ্রবন জেলাগুলোতে তালিকা করা হয়েছে সহস্রাধিক কিশোর সন্ত্রাসীর। এসব সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের জন্য দ্রæত র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা অভিযানে নামবে। ইতোমধ্যে তালিকাভ্ক্তু এসব উঠতি বয়সী সন্ত্রাসীদের ওপর র্যাব পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা কড়া নজরদারি শুরু করেছে। তবে র্যাব পুলিশ এ বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ। এদেরকে এতদিন বিশেষ কোন গুরুত্ব দেয়া হয়নি। অথচ সা¤প্রতিক সময়ে বড় ধরনের কিলিং মিশনে কিশোর ও যুবক বয়সী টেররদের অংশগ্রহণ উদ্বেগজনকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কারণে এই কিশোর সন্ত্রাসীরাই এখন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার কাছে বিষ ফোড়ার মত।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মূলত র্যাবের অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে গত চার পাঁচ বছরের মধ্যে খুলনা মহানগরীসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বাঘা বাঘা সন্ত্রাসীরা এনকাউন্টার নিহত হয়। এছাড়া পুলিশ ও র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়ে অনেকেই বর্তমানে করাগারে অবস্থান করছে। কিন্তু এরই মধ্যে দীর্ঘদিন পরিস্থিত স্বাভাবিক থাকার পর আবারো আইন-শৃঙ্খলার অবনতি পরিলক্ষিত হয়। একের পর এক বোমা হামলা, ধর্ষণ, অপহরণ, ছিনতাই, চুরি, ডাকাতির ঘটনা ঘটতে থাকে। মুলত ক্রস ফায়ারে সন্ত্রাসীরা নিহত হওয়া, আবার অনেকেই গা ঢাকা দেয়ায় দলের অস্তিত্ব রক্ষার জন্যই উঠতি বয়সী এসব কিশোরদের সংগঠিত করা হয়। তারা নতুন করে এ অঞ্চল আবারো অশান্ত করে তোলে। অধিকাংশ ঘটনার সাথে কিশোর অপরাধীদের কানেকশন প্রমাণ হাতে পায় গোয়েন্দারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।