Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নোটিশ প্রত্যাহার না করলে আইনি ব্যবস্থা

খালেদা জিয়াকে আ‘লীগের পাল্টা হুঁশিয়ারি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ৩০ দিনের মধ্যে ক্ষমা চাইতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পাঠানো উকিল নোটিশ প্রত্যাহার না করলে এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারী দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
গতকাল বুধবার বিকাল ৫টায় দলের ধানমন্ডি নির্বাচন পরিচালনা কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারীর কথা জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী এবং দলের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ও দলের অন্যতম মুখপাত্র হাছান মাহমুদ বক্তব্য রাখেন।
সংবাদ সম্মেলনে মতিয়া চৌধুরী বলেন, খালেদা জিয়া আইনি নোটিশ দিয়েছে। আমরা আইনিভাবেই বিষয়টি মোকাবিলা করব।
হাছান মাহমুদ বলেন, যে সময় খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতি দেশে-বিদেশে ফলাও করে প্রচার হচ্ছে, দুর্নীতির মামলায় তাদের শুনানি চলছে, ঠিক এই সময়ে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতেই খালেদা জিয়া আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন। তিনি শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছেন। খালেদা জিয়াকে আমরা বলতে চাই, অবিলম্বে এই আইনি নোটিশ প্রত্যাহার করতে হবে। তা না হলে, এর বিরুদ্ধেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
হাছান মাহমুদ জানান, ১২টি দেশে খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের এক হাজার দুইশ কোটি মার্কিন ডলার পাচারের অভিযোগ এসেছে। এসময় তিনি ২০০১ সাল পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের ‘দুর্নীতি ও অর্থ পাচারে’র বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন। খালেদা জিয়া জরিমানা দিয়ে কালো টাকা সাদা করেছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন। এসময় দুর্নীতি ও অর্থপাচারের জন্য খালেদা জিয়াকে জনগণের ক্ষমা চাওয়ার আহŸান জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের সদস্যদের অর্থ বিনিয়োগের যে অভিযোগ উঠেছে, এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের কাছে কোনও তথ্যপ্রমাণ আছে কিনা। এ প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের কাছে অবশ্যই তথ্যপ্রমাণ আছে। তাছাড়া বিভিন্ন অনলাইনে এই বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছে।
এসময় মতিয়া চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ তথ্যপ্রমাণ ছাড়া ভিত্তিহীন কোনও তথ্য প্রচার করে না। আওয়ামী লীগ কোনোদিন কোনও বানোয়াট কথা বলে না, ভিত্তিহীন তথ্য দেয় না।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, উকিল নোটিশ এখনও আমাদের কাছে আসেনি। গণমাধ্যম থেকে আমরা নোটিশের বিষয়টি জেনেছি। নোটিশ পেলে এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। এসময় তিনি ২০০১ সাল পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরে বলেন, দুর্নীতি ও অর্থপাচারের জন্য খালেদা জিয়াকে জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার ৩০ দিনের মধ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার আহŸান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আইনি নোটিশ পাঠান। রেজিস্ট্রার্ড ডাকযোগে (উইথ এ/ডি) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ঠিকানায় নোটিশটি পাঠানো হয়।
নোটিশে বলা হয়, ‘গত ৭ ডিসেম্বর গণভবনে মিডিয়া ব্রিফিংকালে আপনি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কিছু মানহানিকর বিবৃতি দিয়েছেন, যা ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় স¤প্রচারিত হয়েছে। এছাড়া, দৈনিক পত্রিকা, অনলাইন ও অনেক সামাজিক মিডিয়া আউটলেটে প্রচার হয়েছে। ব্রিফিংয়ে আপনি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কিছু মিথ্যা ও বিদ্বেষমূলক বিবৃতি দিয়েছেন। আপনি বলেছেন, যে সৌদি আরবে খালেদা জিয়া একটি শপিং মলের মালিক এবং সেখানে তার বিপুল সম্পদ রয়েছে। তিনি মানি লন্ডারিংয়ের সঙ্গে জড়িত। আপনি তার ছেলেদের সম্পর্কেও কিছু মিথ্যা কথা বলেছেন। আপনি খালেদা জিয়া এবং তার ছেলেদের সম্পর্কে যে অভিযোগ এনেছেন তা সাজানো, বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং বিদ্বেষমূলক।’
নোটিশের বিষয়ে গতকার বুধবার সকালে সংবাদ সম্মেলন করে জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘৩০ দিনের মধ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা না চাইলে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ আদায়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়েছে নোটিশে।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ