পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
এএফপি : সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের (আইএস) শক্ত ঘাঁটি রাক্কার পতনের পর উগ্রপন্থী গ্রæপটির হাজার হাজার যোদ্ধা অন্যান্য দেশে পালিয়ে গেছে। তারা এখনো অব্যাহত হুমকি। তবে এসব বিদেশী যেদ্ধাদের কি অবস্থা, তারা কোথায় সে বিষয়ে সঠিক খবর নেই।
আইএস ২০১৪ সালে সিরিয়া ও ইরাকের বিস্তৃত ভ‚খন্ড দখল করার পর তাদের পক্ষে যুদ্ধ করার জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ৪০ হাজার লোক আসে। পাশ্চাত্য সমর্থিত সিরীয় ও ইরাকি জোট বাহিনীর বিজয়াভিযানের মুখে আইএস ইরাক ও সিরিয়ায় তাদের প্রায় সবটুকু ভ‚মিই হারিয়েছে। তবে আইএসের কয়েকশ’ যোদ্ধা এখনো লড়াই চালাচ্ছে বলে ধারণা করা হয়।
কিন্তু বাকিদের কি হল?
প্রচন্ড লড়াইয়ে কয়েক হাজার যোদ্ধা নিহত হয়েছে। তবে মার্কিন বিশেষজ্ঞদের মতে বহু যোদ্ধা প্রাণে রক্ষা পেয়েছে যারা ভবিষ্যতের জন্য এক বিরাট হুমকি।
র্যান্ড কর্পোরেশনে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা নীতি কেন্দ্রের পরিচালক সেথ জোনস বলেন, প্রশ্ন হচ্ছে কত সংখ্যক আইএস যোদ্ধা নিহত হয়েছে। কত সংখ্যক যোদ্ধা এখনো রয়ে গেছে এবং যুদ্ধ করতে ইচ্ছুক? তাদের মধ্যে কতজন আত্মসমর্পণ করেছে? আমার মনে হয়, আমাদের কাছে ভালো জবাব নেই।
আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবিরোধী গ্রæপগুলো এ সব প্রশ্নের জবাব পেতে বহু চেষ্টা করছে। তারা আইএসের বিদেশী যোদ্ধাদের নাম, সংখ্যা ও সন্ধান বের করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে।
কর্মকর্তারা বলেন, ফ্রান্স থেকে ২০১৩ সালে ১৩০০ ব্যক্তি আইএসে যোগ দিতে ইরাক ও সিরিয়ায় যায়। তাদের মধ্যে ৪০০-৪৫০ নিহত হয় ও ২৫০ জন ফ্রান্স ফিরে আসে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাঁ-ইভস লা ড্রিয়ান ৮ ডিসেম্বর বলেন যে প্রায় ৫শ’জন ইরাক ও সিরিয়ায় রয়ে গেছে। তাদের পক্ষে এখন দেশে ফেরা খুবই কঠিন।
কিন্তু আরো ৫শ’ জনের খবর এখনো মেলেনি। তাদের অনেকেই যুদ্ধের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন, অস্ত্রধারী এবং বোমা তৈরি করা জানে।
সন্ত্রাসবাদ বিশেষজ্ঞ জর্জটাউন বিশ^বিদ্যালয়ের ব্রæস হফম্যান বুধবার এক সম্মেলনে বলেন, হাজার হাজার বিদেশি যোদ্ধা রণাঙ্গন থেকে পালিয়েছে বলে তার ধারণা। তিনি বলেন, তাদের মধ্য্রে কিছু সংখ্যক এখন খুব সম্ভবত বলকান দেশগুলোতে আছে। পরিস্থিতির কারণে তারা চুপচাপ আছে। আর ইউরোপের দেশগুলোতে প্রবেশের জন্য অপেক্ষা করছে।
সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ ট্রান্সন্যাশনাল প্রজেক্টের টমাস স্যান্ডার্সনের মতে, কিছু কিছু যোদ্ধা অন্য জিহাদি ফ্রন্টগুলোতে গেছে।
উদাহরণ স্রূপ তিনি বলেন, মরক্কো, রাশিয়া, সউদী আরব ও ইয়েমেনের কমপক্ষে ৮০ জন যোদ্ধা গত মে মাস থেকে দক্ষিণ ফিলিপাইনে সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইরত আইএসের সাথে সংশ্লিষ্ট আবু সায়াফ গ্রæপের সাথে যোগ দিয়েছে।
উত্তর আফগানিস্তানের জাওজান প্রদেশে স্থানীয় লোকেরা এএফপিকে বেেল, ফ্রান্স অথবা উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোর ফরাসি ভাষী আইএস যোদ্ধারা সম্প্রতি সেখানে শিবির স্থাপন করেছে।
আইএস যোদ্ধাদের উত্তর আফ্রিকার অন্যান্য যুদ্ধ কবলিত দেশেও যাবার স্বাধীনতা আছে। যেমন লিবিয়া, সোমালিয়া, ইয়েমেন ও অন্যান্য দেশ যেখানে আইএসের সাথে সংশ্লিষ্ট গ্রæপগুলো সহিংসতায় লিপ্ত রয়েছে।
সিরিয়া ও ইরাকে আইএসের পরাজয় তাদের পলায়নের পথ বন্ধ করেনি। আইএস যোদ্ধারা বেসামরিক লোকদের সাথে মিশে কিংবা ঘুষ দিয়ে তুরস্কে ঢুকে পড়েছে।
জোনসের মতে, অনেকেরই যুদ্ধ করা ছাড়া আর উপায় নেই। তাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা কখনোই ছিল না, যেখানে অধিকাংশ মামলাতেই তাদের দন্ড হবে। তিনি বলেন, অনেকের জন্য এটা ছিল একমুখী পথ। তারা ইসলামিী খিলাফতে স্থায়ী ভাবে বাস করতে চেয়েছিল। সুতরাং তাদের বেশির ভাগকেই আমরা ফিরতে দেখব না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।