পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
২৬ জেলার ৪৭০ কিমি সড়ক সঠিক নকশায় নির্মাণের কার্যক্রম শুরু করেছে এলজিইডি
বগুড়ার ধুনট থেকে শেরপুরের চান্দাইকোনা পর্যন্ত ৩৩ কিলোমিটার পাকা সড়কে ১০৯টি বাঁক আছে। এ কারনে এ সড়কে যানবাহন চলাচল করে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ধুনট থেকে মথুরাপুর বাজার হয়ে শেরপুর উপজেলার সিমাবাড়ি-চান্দাইকোনা মহাসড়ক পর্যন্ত রাস্তার দূরত্ব প্রায় ৩৩ কিলোমিটার। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এক দশক আগে কয়েক দফায় সড়কটি পাকা করে। বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, ভটভটি ও অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন ওই সড়কে চলাচল করে। এক বছর আগে ধুনটের বথুয়াবাড়ি এলাকায় বাঙ্গালী নদীর ওপর সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হওয়ায় ধুনট-শেরপুর রাস্তায় যোগাযোগ ব্যবস্থার বিপর্যয় ঘটে। তখন থেকে জেলা শহরে যাতায়াতের বিকল্প পথ হিসেবে ধুনট-চান্দাইকোনা সড়কে যানবাহন চলাচল বেড়ে যায়। কিন্তু পথটির প্রশস্ততা কম হওয়ায় একটি যানকে আরেকটির পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময় ঝুঁকির মধ্যে পড়তে হয়। এছাড়া ৩৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এ রাস্তায় ১০৯টি বাঁক থাকায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। এ রাস্তায় গতিরোধক কিংবা ট্রাফিক সিগনালের ব্যবস্থাও নেই। এ কারণে গত এক বছরে সেখানে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে আটজন নিহত ও অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছে। এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ সড়কে প্রতিদিনই দুর্ঘটনায় তাজা প্রাণ ঝরে যাচ্ছে। চলতি বছরে এ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে দুই হাজারেরও বেশি মানুষ। সারা দেশে এলজিইডির আওতাধীন সড়ক নিয়ে গত জানুয়ারিতে একটি গবেষণা সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এআরআই) ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। গাজীপুর, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, কক্সবাজার, সিলেট, পাবনা, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ, রাজশাহী, দিনাজপুর, বরিশাল, বরগুনা, খুলনা ও যশোর জেলায় এলজিইডির আওতাধীন সড়কগুলো নিয়ে গবেষণাটি সম্পন্ন হয়েছে। এলজিইডির বিগত কার্যক্রম পর্যালোচনার পাশাপাশি গবেষণায় সংশ্লিষ্ট ছিলেন খ্যাতিমান সড়ক নিরাপত্তা উপদেষ্টা স্টেন লুন্ডিবাই।
গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব কারণে সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে তার মধ্যে রয়েছে সড়কের প্রচলিত নকশা, সড়ক পারাপারের বিষয়ে সচেতনতার অভাব ও আইন না মানার প্রবণতা। গবেষণায় চিহ্নিত বিষয়গুলো আমলে নিয়ে বিদ্যমান অপরিকল্পিত সড়কগুলো সঠিক নকশায় পুননির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে এলজিইডি।
এলজিইডির পরিকল্পনা বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, গবেষণায় উঠে আসা সমস্যাগুলো গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে এলজিইডি। অপরিকল্পিত কোনো সড়ক আর নির্মাণ করা হবে না। বরং যেগুলো অপরিকল্পিত বা ঝুঁকিপূর্ণ সড়ক আছে সেগুলো ক্রমান্বয়ে ঝুঁকিমুক্ত করার হবে। ওই কর্মকর্তা জানান, গবেষণার সুপারিশ অনুযায়ী এরই মধ্যে ২৬ জেলার ৪৭০ কিমি সড়ক সঠিক নকশায় নির্মাণের কার্যক্রম শুরু করেছে এলজিইডি। পরবর্তীতে বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় এলজিইডির বিদ্যমান সব সড়ক পরিকল্পিতভাবে পুননির্মাণ করা হবে।
গবেষণা প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে জানা গেছে, দেশের কোনো কোনো সড়কে রয়েছে শতাধিক অপ্রয়োজনীয় বাঁক। অপরিকল্পিত ও ভুল নকশার কারণে অনেক সড়ক হয়ে উঠেছে ঝুঁকিপূর্ণ। গবেষণায় নকশাগত ত্রুটির পাশাপাশি সড়কে যানবাহনের আধিক্য, লাইসেন্স ও ফিটনেসবিহীন চালক ও যানবাহন, দ্রুতগতিতে গাড়ি চালানো, চালকের মাদক সেবন, সিটবেল্ট না বাঁধা, হেলমেট ব্যবহার না করা, ট্রাফিক আইন না মানা এবং শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকার বিষয়গুলোও উঠে এসেছে। মূলত এ কারণগুলোকেই সড়ক ব্যবহারকারী তথা চালক, যাত্রী ও পথচারীদের দুর্ঘটনায় পড়ার অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এলজিইডি সূত্র জানায়, সংস্থার অধিকাংশ সড়কের জায়গা অধিগ্রহণকৃত নয়। সড়কসংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষরাই এসব জায়গা প্রয়োজন অনুযায়ী দান করেছে। প্রধানত এ কারণেই সড়কগুলো পরিকল্পিতভাবে তৈরি করা সম্ভব হয়নি। কোথাও সড়ক অনেক অপ্রশস্ত হয়ে গেছে, কোথাও নিচু, কোথাও বা আঁকাবাঁকা। আবার কোথাও সড়কে রয়ে গেছে ঝুঁকিপূর্ণ সংযোগস্থল। গবেষণার আলোকে সড়ক নিরাপত্তায় শিশুদের প্রয়োজনীয় পাঠদান ও সচেতনতা সৃষ্টি করতে নানা ধরনের কার্যক্রম হাতে নিয়েছে এলজিইডি। সড়ক নিরাপত্তার প্রয়োজনীয় বিষয়াদি ও নির্মাণ কৌশল নিয়ে এলজিইডির প্রকৌশলীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ সড়কগুলোর তালিকাও তৈরি করছে এলজিইডি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।