পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নিন্ম আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণ বিধির গেজেটটি প্রকাশ হলেও একজন বিচারপতির অনুপস্থিতিতে আপিল বিভাগের শুনানি পিছিয়ে যাওয়ায় তা জমা পড়েনি। যা গতকাল বুধবার এফিডেভিট আকারে আপিল বিভাগে জমা দেয়ার কথা ছিল রাষ্ট্রপক্ষের। আদালত বসার পর দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা শুরুতেই অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে বলেন, বেঞ্চের পাঁচ বিচারকের মধ্যে একজন ব্যক্তিগত কারণে আসতে পারেননি। এই শুনানি যেহেতু ফুল বেঞ্চে হয়ে আসছে, সেহেতু আর হচ্ছে না জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের অবকাশের পর ২ জানুয়ারি আদেশের জন্য পরবর্তী দিন ঠিক করে দেন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি।
দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা ওই গেজেট প্রকাশ করে সরকার। বিচার বিভাগের সঙ্গে নির্বাহী বিভাগের দীর্ঘ টানাপড়েনের পরগেজেট প্রকাশ করে আইন মন্ত্রণালয়। পদত্যাগী প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার আপত্তিতে তা বহু দিন ঝুলে ছিল। এ নিয়ে আইনজীবীরা মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট সিনিয়র আইনজীবীরা। তাদের মতে, সরকার বিচার বিভাগ নিয়ন্ত্রণ নিল। এটা স্বাধীন বিচার বিভাগের জন্য বাধাগ্রস্থ হবে। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এর ভেতরে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার মৃত্যু দেখতে পাচ্ছেন। আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীদের অন্যতম নেতা আমীর-উল ইসলাম বলেছেন, এই গেজেটের মধ্যে দিয়ে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা খর্ব করে তাকে আইন মন্ত্রণালয়ের অধীন করে ফেলা হয়েছে।
মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পর ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা হয়ে বিচার বিভাগের কার্যক্রম শুরু হয়। গত বছরের ৭ মে আইন মন্ত্রণালয় নি¤œ আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালার একটি খসড়া প্রস্তুত করে সুপ্রিম কোর্টে পাঠায়। সরকারের খসড়াটি ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারী বিধিমালার অনুরূপ হওয়ায় তা রায়ের পরিপন্থি বলে গত বছর ২৮ আগাস্ট শুনানিতে জানায় আপিল বিভাগ। এরপর ওই খসড়া সংশোধন করে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। একইসঙ্গে তা চূড়ান্ত করে প্রতিবেদন আকারে আদালতে উপস্থাপন করতে বলা হয় আইন মন্ত্রণালয়কে। শৃঙ্খলা বিধিমালার যে খসড়া সুপ্রিম কোর্টে জমা দেয়া হয়েছিল, গত ৩০ জুলাই তা গ্রহণ না করে কয়েকটি শব্দ ও বিধি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন তখনকার প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। খসড়া নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে ক্ষমতাসীনদের সমালোচনার মুখে বিচারপতি সিনহা ছুটি নিয়ে গত ১৩ অক্টোবর দেশ ছাড়ার পর ছুটি শেষে ১০ নভেম্বর পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন।
বিচারকদের চাকরির বিধিমালা বাতিলের দাবি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির
নিন্ম আদালতের বিচারকদের চাকরির বিধিমালা সংবিধান বহির্ভূত এবং মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী বলে উল্লেখ করেছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি। একই সঙ্গে গেজেট বাতিল করে আগামী ৭ জানুয়ারির মধ্যে নতুন গেজেট প্রকাশের দাবি জানান তারা। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে বলে জািনেয়ছেন আইনজীবী সমিতি নেতৃবৃন্দরা। গতকাল বুধবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির মিলানায়তনে সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন সংবাদ সন্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
জয়নুল আবেদীন বলেন, বিধিমালা যে প্রক্রিয়ার করা হয়েছে সেই প্রক্রিয়াটি সংবিধান বহি:ভূর্ত নয় তা অনভিপ্রেত। বিচার বিভাগ আজ ধবংসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড় করানো হয়েছে। বিধিমালা করতে গিয়ে আইনমন্ত্রণালয় নিন্ম আদালতের বিচারকদের নির্বাহী বিভাগের অধীনস্থ করে ফেলেছেন। যেখানে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিষয়টি সম্পূর্ণ প্রেসিডেন্টের উপর ন্যাস্ত। প্রেসিডেন্ট সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে আলোচনা করে এটি করবেন। কিন্তু এখানে যা করা হয়েছে তাতে আইন মন্ত্রণালয় বা আইনমন্ত্রী প্রেসিডেন্টের ভুমিকা পালন করতে পারবে না। আমাদের সংবিধানে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার যে বিষয়টি ছিল, সেটা নির্বাহী বিভাগ থেকে দূরে রাখার জন্য এখন তা সম্পূর্ণই নির্বাহী বিভাগের হাতে চলে গেছে।
সমিতির সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেছেন, এই গেজেট এর মাধ্যমে সরকার বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমি বিশ্বাস করি না আপিল বিভাগের বিচারপতিরা এ গেজেট নিয়ে একমত হয়েছেন। এই ধরনের বক্তব্য দিয়ে আইনমন্ত্রী আদালতের অবমাননাও করেছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন। এসময় সংবাদ সম্মেলনে সমিতির অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে সংবাদ সন্মেলেনের পরপরই সমিতির সভাপতির এ বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে সমিতির সহ-সভাপতি অজিউল্লাহ। পরে সভাপতির কার্যালয়ের সামনে পাল্টা বক্তব্যে অজিউল্লাহ বলেন, আইনজীবী সমিতির দেয়া বক্তেব্যের সঙ্গে তারা ৬ সদস্য একমত নয়। এটা তাদের নিজস্ব বক্তব্য।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।