চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
প্রশ্ন : বেলাদত শরীফের দিনটি মূলত ঈদের দিন কিনা?
উত্তর : আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে হযরত ঈসা (আ:) এর কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি ( ঈসা (আ:) বলেন - হে আল্লাহ , আমাদের প্রতিপালক! আমাদের উপর আসমান থেকে একটি খাদ্যের খাঞ্জা পাঠাও। যাতে তাহা আমাদের পূর্ববর্তী এবং পরবর্তীদের জন্য ঈদ বা উৎসবের হতে পারে । (সূরা মায়েদা, আয়াত-১১৪)
দেখুন হযরত ঈসা (আ:) খাদ্যের খ্ঞ্জাা অবতীর্ণের দিনকে পূর্ববর্তী এবং পরবতীদের জন্য ঈদের দিন ঘোষনা দিয়েছেন। এ জন্য খৃস্টানেরা এখনো পর্যন্ত রবিবারকে ছুটির দিন হিসেবে গন্য করে এবং খুশী উদযাপন করে। কেননা, ঐ দিন খাদ্যের খাঞ্জা অবতীর্ণ হয়েছিল।
একটু চিন্তা করুন, যে দিন খাদ্যের খাঞ্জা আসমান থেকে অবতীর্ণ হয়, সে দিন হযরত ঈসা (আ:) এবং তাঁর পূর্ববর্তী-পরবর্তীদের জন্য ঈদ হল। আর যে দিন মহান আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত এবং রহমত প্রিয় নবী (সা:) তাশরীফ এনেছেন সেদিন কী মুসলমানদের জন্য ঈদের দিন হবে না ? অবশ্যই হবে।
হযরত তারেক বীন শিহাব (রা:) বলেন-এক ইহুদী আমীরুল মু’মেনীর হযরত ওমর ফারুক (রা:) এর খেদমতে উপস্থিত হয়ে বলল, হে মুসলমানদের আমীর! আপনাদের কিতাব কুরআন শরীফে এমন একটি আয়াত আছে, যদি সেটি আমরা ইহুদীদের উপর অবতীর্ণ হতো, তাহলে উহার অবতীর্ণের দিনকে ঈদ হিসেবে পালন করতাম। তিনি (হযরত ওমর (রা:)) বললেন, কোন আয়াতটি ইহুদী বললো- “ আল ইয়াওমা আকমাল্তু লাকুম দিনাকুম”
অতঃপর আমীরুল মু’মেনীন হযরত ওমর (রা:) বললেন -সে দিন এবং সে স্থানকে আমি জানি, যাতে আয়াতটি অবতীর্ণ হয়েছিল। স্থান ছিল আরাফাতের ময়দান আর দিন ছিল জুমাবার। হযরত ওমর (রা:) তাকে বুঝাতে চেয়েছিলেন যে, আমাদের জন্যও ঐ দিনটি ঈদের দিন ছিল। (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা:) কে অনুরূপ এক ইহুদী এভাবে বললো- তিনি বললেন যে দিন উক্ত আয়াতটি অবতীর্ণ হয়েছিল ঐ দিন আমাদের দুটি ঈদ ছিল জুমা এবং আরাফা। (তিরমিজী ওখাজেন)
উক্ত হাদীস দুটিতে একটু চিন্তা করলে বুঝা যায় যে, ইহুদীর উদ্দেশ্য ছিল এটি এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ আয়াত, যদি তা আমাদের (ইহুদীদের) উপর অবতীর্ণ হতো, তাহলে আমরা অবতীর্ণের দিনকে ঈদের দিন ঘোষনা করতাম। পক্ষান্তরে এর উত্তরে দু’জন জলীলুল কদর সাহাবী (রা:) এ কথা বলেননি যে, আমরা মুসলমানরা যে দিন কোন খুশীর দিন হবে অথবা যেদিন আল্লাহর পক্ষ থেকে কোন নিয়ামত অবতীর্ণ হবে সে দিনকে ঈদ করা বা উদযাপন করা বেদাত মনে করি। উপরন্তু বলেছেন- আমাদের কাছে ঐ দিনটি দু’ ঈদই ছিল।
বুঝা গেল, বিশেষ কোন নিয়ামত প্রাপ্তি দিনকে ঈদের দিন বলা কিংবা উদযাপন করা কিতাবুল্লাহ এবং হাদীস দ্বারা সুপ্রমাণিত।
অতএব, হুজরের (সা:) শুভ আগমনের দিনকে নিসন্দেহে ঈদের দিন বলতে হবে। তাই কুরআনুল করিম, হাদীস শরীফ, ইমামগণ এবং ওলামায়ে কেরামগণের বাণী অনুযায়ী মীলাদ শরীফ জায়েজ এবং অনেক রহমত ও বরকতের কারণ হওয়া প্রমাণিত হলো।
মহান রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে প্রিয় নবী (সা:)-এর মীলাদ উদযাপনের মাধ্যমে তাঁর রহমত ও বরকত হাসিল করার তাওফিক দান করুণন! আমিন !! বেহুরমতে সায়্যিদিল মুরসালিন ওয়াল হামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।