Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোকেয়া পদক পাচ্ছেন ৫ নারী

আজ বেগম রোকেয়া দিবস মন্ত্রণালয়ের নানা কর্মসূচি

| প্রকাশের সময় : ৯ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসনের বাণী
পঞ্চায়েত হাবিব : আজ ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া দিবস। বাংলার নারী জাগরণের অগ্রদূত মহীয়সী বেগম রোকেয়ার ১৩৭তম জন্ম ও ৮৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। বাংলার নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতি বছর এদিন সারা দেশে সরকারিভাবে রোকেয়া দিবস পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারো প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন। এ ছাড়া এ উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
নারী উন্নয়ন ও নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখায় জন্য এবার পাঁচজন নারীকে রোকেয়া পদক দেয়া হবে। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় রোকেয়া দিবস উপলক্ষে সকাল সাড়ে ১০টা রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে পদক বিতরণ অনুষ্ঠান করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত বছর আরোমা দত্ত ও বেগম নূরজাহানকে রোকেয়া পদক প্রদান করা হয়। এ সময় রোকেয়া পদক দুইজন থেকে বাড়িয়ে পাঁচজনকে দেয়ার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব বেগম নছিমান বেগম ইনকিলাবকে বলেন, নারী উন্নয়ন ও নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখায় জন্য এবার পাঁচজন নারীকে রোকেয়া পদক দেয়া হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেগুলো বিতরণ করবেন।
প্রেসিডেন্ট তার বাণীতে বলেন, বেগম রোকেয়া নারীমুক্তি, সমাজ সংস্কার ও প্রগতিশীল আন্দোলনের পথিকৃৎ। কুসংস্কার ও ধর্মীয় গোঁড়ামির বিধিনিষেধের অন্ধকার যুগে শৃঙ্খলিত বাঙালি মুসলিম নারীদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লক্ষে তিনি পর্দার অন্তরালে থেকেই নারীশিক্ষা বিস্তারে প্রয়াসী হন এবং মুসলমান মেয়েদের অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তির পথ সুগম করেন। তিনি বলেন, সামাজিক নানা বিধিনিষেধ, নিয়ম-নীতির বেড়াজাল অগ্রাহ্য করে বেগম রোকেয়া আবিভর্‚ত হন অবরোধবাসিনীদের মুক্তিদূত হিসেবে। আবদুল হামিদ আশা করেন, বৈষম্যহীন সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে বেগম রোকেয়ার জীবনাদর্শ ও কর্ম আমাদের নারী সমাজের অগ্রযাত্রায় প্রেরণা যোগাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, বেগম রোকেয়া ছিলেন নারী শিক্ষা ও নারী জাগরণের অগ্রদূত। বিশ শতকের প্রথম দিকে বাঙালি মুসলমানদের নবজাগরণের সূচনালগ্নে নারী শিক্ষা ও নারী জাগরণে তিনিই প্রধান নেতৃত্ব দেন। সাহিত্যচর্চা, সংগঠন পরিচালনা ও শিক্ষা বিস্তারের মাধ্যমে বেগম রোকেয়া সমাজ সংস্কারে এগিয়ে আসেন এবং স্থাপন করেন উজ্জ¦ল দৃষ্টান্ত। বেগম রোকেয়ার আদর্শ, সাহস, কর্মময় জীবন নারী সমাজের এক অন্তহীন প্রেরণার উৎস। জানা গেছে, বেগম রোকেয়া ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার পায়রাবন্দ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেও তিনি নারী জাগরণের অগ্রদূতের ভ‚মিকায় অবতীর্ণ হন। ঊনবিংশ শতাব্দীর একজন খ্যাতিমান বাঙালি সাহিত্যিক ও সমাজ সংস্কারক।
১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর তিনি ভারতের কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন। দিবসটি পালন উপলক্ষে বাংলা একাডেমি আগামী রোববার বিকেল ৪টায় একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে একক বক্তৃতানুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানে বক্তৃতা প্রদান করবেন অধ্যাপক সোনিয়া নিশাত আমিন। সভাপতিত্ব করবেন অধ্যাপক পারভীন হাসান। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ঢাকায় ও শাখাগুলোতে আলোচনা সভা, সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। এদিকে বেগম রোকেয়ার জন্মস্থান রংপুরের পায়রাবন্দে দিবসটি পালন উপলক্ষে বেগম রোকেয়া জেলা প্রশাসক ও বিভিন্ন সামাজিক ফোরাম দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। যে সময় এ উপমহাদেশে নারীদের শিক্ষা অর্জনের কথা ভাবাই যেত না, সে সময় বেগম রোকেয়া পরিবার ও সমাজের সমস্ত প্রতিক‚লতা ডিঙ্গিয়ে শিক্ষার্জনে ব্রতী হন। তার সেই সাধনার পথ ধরেই রচিত হয় নারী শিক্ষার পথ। তারপর দিনে দিনে প্রশস্ত হয় সেই পথ। তারই ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশেও আজ শিক্ষা ও সব ধরনের কর্মক্ষেত্রে নারীদের সদম্ভ পদচারণা আমাদের দেশের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করছে। তৎকালীন মুসলিম সমাজব্যবস্থা অনুসারে বেগম রোকেয়া ও তার বোনদের বাইরে পড়াশোনা করতে পাঠানো হয়নি। তাদের ঘরে আরবি ও উর্দু শেখানো হয়। তবে রোকেয়ার বড় ভাই ইব্রাহিম সাবের আধুনিকমনস্ক ছিলেন। তিনি তার দুই বোন রোকেয়া ও করিমুন্নেসাকে ঘরেই গোপনে বাংলা ও ইংরেজি শেখান।
১৮৯৮ সালে বেগম রোকেয়ার বিয়ে হয় খান বাহাদূর সাখাওয়াত হোসেনের সাথে। তিনি ছিলেন উর্দুভাষী। তা সত্তে¡ও তিনি রোকেয়াকে শিক্ষা এবং সাহিত্য সাধনায় অনুপ্রেরণা দিতেন। ১৯০২ সালে রোকেয়া লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন পিপাসা রচনার মধ্য দিয়ে। ১৯০৯ সালে সাখাওয়াত হোসেন মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পাঁচ মাসের মাথায় বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি আঞ্জুমানে খাওয়াতিন নামে একটি ইসলামি নারী সংগঠনেরও প্রতিষ্ঠাতা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোকেয়া

১০ ডিসেম্বর, ২০২১
৯ ডিসেম্বর, ২০২১
৯ ডিসেম্বর, ২০২১
৯ ডিসেম্বর, ২০২০
৯ ডিসেম্বর, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ