পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর পৃথিবীতে শুভাগমন স্মরণে রাজধানীসহ সারাদেশে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে মাধ্যমে পালিত হয়েছে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। গত শনিবার ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও আশেকে রাসূলগণের বিপুল উপস্থিতিতে জসনে জুলুস তথা বর্ণাঢ্য র্যালি, আলোচনা ও মিলাদ মাহফিল, জিকির আযকার ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে শনিবার ছিল রাষ্ট্রীয় ছুটি। এ উপলক্ষ্যে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের সবচেয়ে বড় সমাবেশ ঘটেছে বন্দনগরী চট্টগ্রামে। এছাড়া ঢাকা, নারায়ণগঞ্জে এবং বিভিন্ন জেলায় বিশাল বিশাল জশনে জুলুস ও সমাবেশ-মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া ঢাকায় আঞ্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভান্ডারীর উদ্যোগে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে বিশাল জসনে জলুস শেষে বিরাট মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। বদরপুর দরবারের উদ্যোগে সদরঘাটস্থ দরকবার থেকে জসনে জলুস বের হয়, জলুস শেষে মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া নারায়ণগঞ্জে আল্লামা বাহাদুর শাহর নেতৃত্বে বিরাট জসনে জুলুস বের হয়।
পবিত্র মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে সর্ববৃহৎ জসনে জুলুস বের হয় চট্টগ্রামে। বিপুল ধর্মপ্রাণ মুসল্লির অংশগ্রহণে জুলুসে নেতৃত্ব দেন দরবারে সিরিকোট শরীফের আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ (মা.জি.আ)। জুলুসটি সকালে চট্টগ্রামের আনজুমানে আহমাদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক ঘুরে মাদ্রাসা মাঠে গিয়ে মুসলিম উন্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন আল্লামা তাহের শাহ (মা.জি.আ)।
পবিত্র মিলাদুন্নবী (সা.) পালনে ডিএমপির নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা নিয়ে রাজধানী ঢাকায় পবিত্র মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে বিশাল জশনে জুলুশ করেছে রাজারবাগ দরবার শরীফ। সকাল ৯ টায় দরবার শরীফ প্রাঙ্গন থেকে বিশাল জশনে জুলুস বের হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ও সড়ক প্রদক্ষিণ করে। বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় শহর থেকে আগত বিপুলসংখ্যক মুসল্লি জুলুসে অংশ নেয়। প্রায় দুইশো গাড়ির বহর নিয়ে রাজধানীর সকল গুরুত্বর্পূণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে রাজারবাগ দরবার প্রাঙ্গনে ‘কোটি কণ্ঠে মীলাদ শরীফ’ অনুষ্ঠানে মিলিত হয়। মিলাদ শরীফ শেষে রাজারবাগের সুন্নতি জামে মসজিদে ওয়াজ মাহফিলের পর উম্মাতে মোহাম্মদীর জন্য রহমত কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতের পূর্বে বিশাল জমায়েতের উদ্দেশ্যে মীলাদুন্নবী ও মিলাদ-ক্বিয়াম শরীফকে কেউ বিদয়াত প্রমাণ করতে পারলে তাকে বা তাদেরকে ১০০ কোটি টাকার প্রকাশ্য চ্যালেঞ্জ ঘোষণা করা হয়।
উল্লেখ্য পোপের আগমনের কারনে ডিএমপি জুলুম ও সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা জারী করে। এরপ্রেক্ষিতে রাজারবাগ দরবার শরীফের পক্ষ থেকে আদালতে নির্দেশনা চাইলে পবিত্র মীলাদুন নবী (সাঃ) উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রা, র্যালি, মিছিল, মীলাদ মাহফিল করতে কোনো বাধা নেই বলে নির্দেশনা দেয় হাইকোর্ট। এরপরেও আদালতের নির্দেশকে উপেক্ষা করে মিলাদ মাহফিল বিরোধী কিছু পুলিশ কর্মকর্তা বিশেষ করে শাহজাহানপুর থানার পুলিশ কর্মকর্তা শোভাযাত্রা, মিছিল বের করতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে আদালতের নির্দেশের অবমাননা করেছে বলে রাজারবাগ দরবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। তবে রাজধানীর অনেক এলাকায় এবং অন্যান্য জেলায় ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা এবং বিপুল আশেকে রাসূলের ব্যাপক অংশগ্রহণে জশনে জুলশ সমাবেশ, মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। বিপুল অংশগ্রহণে অগণিত জশনে জুলুশ বের হওয়ায় মিলাদুন্নবী (সাঃ) বিরোধীদের বিরোধীতা করার কোন খবর পাওয়া যায়নি।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, বন্দরনগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামে গত শনিবার যথাযোগ্য মর্যাদায় ও ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) উদযাপিত হয়েছে। বায়তুশ শরফ আনজুমনে ইত্তেহাদ আয়োজিত ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) মাহফিল বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সে পীর শাহ সূফী মাওলানা মোহাম্মদ কুতুব উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতির বক্তব্যে পীর সাহেব বলেন, আধ্যাত্মিক সাধনার অন্যতম মহান ব্রত হলো আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ভালবাসা লাভ করা। মুমিন জীবনের উৎকর্ষ সাধনের নিমিত্ত এবং আধ্যাত্মিকতার ফসল কাটার জন্য মুসলিম বান্দাহকে উত্তম চরিত্রের অধিকারী হতে হবে। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মাদরাসার প্রিন্সিপ্যাল ড. মাওলানা সাইয়েদ মুহাম্মদ আবু নোমান, মাওলানা মীম ছিদ্দীক আহমদ ফারুকী, মাওলানা কাজী নাছির উদ্দিন, মাসিক দ্বীন দুনিয়ার সহকারী সম্পাদক ড. মাওলানা ঈসা শাহেদী, মাওলানা মামুনুর রশিদ নূরী, মাওলানা কাজী জাফর আহমদ প্রমুখ।
গারাংগিয়া ইসলামিয়া কামিল মাদরাসার উদ্যোগে ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন মাদরাসা গভর্ণিং বডির সভাপতি ও পীর শাহ মাওলানা মুহাম্মদ আনওয়ারুল হক সিদ্দিকী। মাস্টার মহিউদ্দিনের পরিচালনায় আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা আবদুল মালেক, মাওলানা নুরুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুল হাই, মাওলানা শিব্বির হোসাইন প্রমুখ। সভাপতির বক্তব্যে পীর সাহেব গারাংগিয়া শাহ মাওলানা মুহাম্মদ আনওয়ারুল হক সিদ্দিকী বলেন, মানবতার মুক্তির দূত মহানবী (সাঃ)কে আল্লাহ পাক বিশ্ব জগতের জন্য রহমত হিসেবে পাঠিয়েছেন।
ছিপাতলী জামেয়া গাউছিয়া মুঈনীয়া কামিল মাদরাসা ও আঞ্জুমানে কাদেরিয়া চিশতীয়া আজিজিয়ার যৌথ উদ্যোগে ১২ দিনব্যাপী ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) মাহফিল আল্লামা মুহাম্মদ আজিজুল হক আল-কাদেরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। মাহফিলে বক্তব্য রাখেন মাদরাসার অধ্যক্ষ আল্লামা আবুল ফরাহ মুহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন, উপাধ্যক্ষ আল্লামা মুহাম্মদ আবদুল অদুদ আল-কাদেরী, মাওলানা আবদুস ছমদ, মাওলানা মুহাম্মদ শফিউল আলম নেজামী, মাওলানা শফিউল আলম আজিজী প্রমুখ। সভাপতি তার বক্তব্যে বলেন, বিশ্ব নবীর শুভাগমন মানবজাতির জন্য রহমত স্বরূপ।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশের মধ্যদিয়ে রাজশাহীতে পালিত হয়েছে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। দিনটি উপলক্ষে বিভিন্ন মসজিদ ও সংগঠনের উদ্যোগে মহানগরীতে জশনে জুলুস বের করা হয়। নগরীর কেন্দ্রীয় শাহ মখদুম (রহ.) দরগা শরীফে গিয়ে তা শেষ হয় আয়োজন করা হয় দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা ও মিলাদ মাহফিল। সেখানে দেশ, জাতি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সুখ-সমৃদ্ধি এবং কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। নগরীর সিরোইল কলোনি বাইতুল মামুর জামে মসজিদ এবং আনজুমান আশরাফিয়া সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বিশাল জশনে জুলুস বের করে। সকাল ৯টায় খানকায়ে গাওসুল আজম গাওসিয়া, তালীমে কোরআন তামাউয়াফি মাদরাসা, ইস্কে নবী ভক্তদের উদ্যোগে মহানগরীতে পৃথক জশনে জুলুস বের করা হয়।
গাউছিয়া কমিটি মহানগর শাখার উদ্যোগে বের করা জশনে জুলুসটি সিরোইল কলোনির ৪ নম্বর গলির শেষ মাথায় বায়তুল মামুর জামে মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে বের করা হয়। এটি হযরত শাহ মখদুম (রহ.) এর মাজারে গিয়ে শেষ হয়। মাজারে চাদর চড়ানোর পর পুস্পস্তবক অর্পণ ও মাজার জিয়ারত করে।
মোনাজাত পরিচালনা করেন, সিরোইল কলোনি বায়তুল মামুর জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা আতাউল মোস্তাফা কাদেরী। শোভাযাত্রা শেষে মসজিদে ফিরে মিলাদ মাহফিল ও দোয়া খায়ের করে শিরনি বিতরণ করা হয়। এসময় গাউছিয়া কমিটির সভাপতি ড. শরিফুল ইসলাম, সহ-সভাপতি জাহিদ হোসেন মুন্না, সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম রবি, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলী, প্রচার সম্পাদক খালেদ হোসেন ভোলা, আজাহার আলী, মাহবুব আলম, অ্যাডভোকেট আলী সিদ্দীক, জমসেদ আলী, আসলাম, নজরুল কাওশার সালাহ উদ্দিনসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। মহানগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে বাংলাদেশ সুফী ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে নূরানী আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। কেন্দ্রীয় শাহ মখদুম (রহ.) দরগা মসজিদে সীরাতুন্নবী (সা.) উদযাপনের লক্ষ্যে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
বরিশাল ব্যুরো জানায়, বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের সর্বত্র যথাযথ ধর্মীয় মর্জাদার সাথে পবিত্র ঈদ ই মিলাদুন নবী(সাঃ) পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বিভিন্ন মসজিদে ওয়াজ ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। বরিশালের ঐতিহ্যবাহী চকবাজার জামে এবাদুল্লাহ মছজিদে তিন দিন ব্যাপী ওয়াজ মাহফিল শেষে দেশ ও জাতী সহ মুসলিম উম্মাহর জন্য বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
জাকের পার্টির উদোগে বরিশাল মহানগরী সহ দক্ষিণাঞ্চলের সবগুলো জেলা সহ বিভিন্ন উপজেলার সদরে মিলাদ-দোয়া এবং র্যালীর আয়োজন করা হয়। শনিবার সকালে বরিশাল মহানগরীর জাকের পার্টির অফিসে আলোচনা সভা, মিলাদ ও দোয়া শেষে এক বিশাল র্যালী বের করা হয়। নগরীর প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিন করে ঐ র্যালী দলীয় অফিসে এসে শেষ।
নোয়াখালী ব্যুরো জানায়, যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর্য পরিবেশে নোয়াখালীর সর্বত্র পবিত্র ঈদ মিলাদুন্নবী (সা.) পালিত হয়েছে। দিনটি উপলক্ষে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন পৃথক পৃথক কর্মসূচী গ্রহণ করে। পদুয়া দরবার শরীফের উদ্যোগে চন্দ্রগঞ্জ খালেকগঞ্জ বাজারে এক বিরাট র্যালী অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন মাজার, দরবার শরীফ ও ধর্মীয় সংগঠন ঈদ মিলাদুন্নবী উপলক্ষে আলোচনা সভা. মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
পাবনা জেলা সংবাদদাতা জানান, পাবনায় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা:) গত শনিবার পালিত হয়েছে। ১২ রবিউল আউয়ালে রাছুল (সা:) জন্ম ও ওফাত দিবস উপলক্ষে শহরের বিভিন্ন মসজিদে বাদ মাগরিব মিলাদ মাহফিল ও রাছুলের জীবনাচরণ নিয়ে আলোচনার আয়োজন করা হয়। মসজিদের ইমামগণ বয়ান করেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন ধর্ম প্রাণ মুসলমানদের বাড়িতে মিলাদ মাহফিল ও ঈদে মিলাদুন্নবী (সা:) উপলক্ষে নফল নামাজ ও ইবাদত বন্গেী করা হয়।
নাটোর জেলা সংবাদদাতা জানান, যথাযথ ধর্মীয় ভাব গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে নাটোরে পবিত্র মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাত দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে নাটোরে বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে বর্নাঢ্য শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল। শনিবার সকালে ঈদ-ই মিলাদুন্নবী উপলক্ষে শহরে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা অংশগ্রহণ করে। শোভাযাত্রাটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন করে নাটোর প্রেসক্লাব কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে এসে শেষ হয়। সেখানে এক পথসভায় বিভিন্ন আলেমগন বক্তব্য রাখেন ।
লালমনিরহাট জেলা সংবাদদাতা জানান, শনিবার লালমনিরহাটে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে সকাল সকাল সাড়ে ১০ টায় লালমনিরহাট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মাওঃ আতিকুর রহমানের নেতৃত্বে মসজিদ এলাকা থেকে একটি বিশাল র্যালী বের হয়ে শহরের আলোরুপা মোড়, মিশন মোড়, রেল স্টেশন এলাকা হয়ে লালমনিরহাট কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গনে এসে শেষ হয়। র্যালী শেষে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন, লালমনিরহাট নেছারিয়া কামিল মাদ্রাসার আরবী প্রভাষক মাওঃ হামিদুর রহমান,মাওঃ আইয়ুব আলী বসুনীয়া,মাওঃ রুহুল আমিন,রেজা আহম্মেদ প্রমুখ। দিবসটি উপলক্ষে মসজিদে মসজিদে মিলাদ মাহফিল, আলোচনা সভা, বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা হয়।
হাজীগঞ্জ (চাঁদপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, গত শুক্রবার বাদ জুম্মা হাজীগঞ্জে বর্নাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে জশনে জুলুছে ঈদে মিলাদুন্নবী (সঃ) অনুষ্ঠিত হয়েছে। ধেররা ইমামে রাব্বানী দরবার শরীফের আয়োজনে ঈদে মিলাদুন্নবীর জশনে জুলুছের র্যালীর নেতৃত্ব ও মোনাজাত পরিচালনা করেন ঐতিহ্যবাহী ধেররা ইমামে রাব্বানী দরবার শরীফের পীরে তরিকত আল্লামা সৈয়দ জাহান শাহ মোজাদ্দেদী আল মাদানী। মোনাজাতে দেশ ও দশের কল্যানে বিশেষ মোনাজাত পরিচালিত হয়। প্রতিবছরের ন্যায় এবারো ধেররা ইমামে রাব্বানী দরবার শরীফ থেকে জশনে জুলুছের বিশাল র্যালী শুরু হয়ে হাজীগঞ্জ বাজার প্রদক্ষিন করে পুনরায় দরবার শরীফে শেষ হয়। বাদ আসর ধেররা দরবার শরীফের জামে মসজিদে জশনে জুলুছে আগত মুসল্লিদের মাঝে ঈদে মিলাদুন্নবীর তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তব্য ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
দোয়া পূর্বক জশনে জুলুছের তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা সভার সঞ্চালনা করেন জশনে জুলুছের প্রস্ততি কমিটির সচিব মাও.শফিকুর রহমান। জশনে জুলুছ উদযাপন প্রস্ততি কমিটির সভাপতি ও হাজীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রোটা. মো.আহসান হাবীব অরুনের সভাপ্রধনে এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন, ইমামে রাব্বানী দরবার শরীফের বড় শাহেবজাদা সৈয়দ মাও. আলমগীর শাহ্ মোজাদ্দেদী, ধেররা মাদ্রাসা আবেদীয়া মুজাদ্দেয়া আরবী শিক্ষক মাও. আবুল হাসেম শাহ্, মাও.মো.শাহ মোজাদ্দী, বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত আল জামাআতের জেলা সভাপতি প্রিন্সিপ্যাল মাও.মফিজুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি প্রিন্সিপ্যাল মাও. মোহাম্মদ আলী নকশীবন্দী, বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত আল জামাআতের হাজীগঞ্জ উপজেলার সভাপতি জাকির হোসেন মিজি, সাধারন সম্পাদক মাষ্টার দেলোয়ার হোসেন, সাহেবজাদা সৈয়দ মাখদুম শাহ্ মুজাদ্দেদী। এ সময় ধেররা মাদ্রাসায়ে আবেদীয়া মুজাদ্দেীয়া দাখিল মাদরাসার সুপার মোহাম্মদ আলীসহ জেলা ও জেলার বাইরের কয়েক হাজার মুসল্লী ও ধেররা ইমামে রাব্বানী দরবার শরীফের আশেকান ও মরিদান উপস্থিত ছিলেন।
গফরগাঁও উপজেলা সংবাদদাতা জানান, গত শনিবার সকালে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) ১৪৩৯ হিজরী উদযাপন উপলক্ষ্যে গফরগাঁও উপজেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক আয়োজিত র্যালি ,আলোচনাসভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডাঃ শামীম রহমানের সভাপতিত্বে বিভিন্ন মসজিদের ইমাম ও শিক্ষকগণ সভায় হজরত মোহাম্মদ (সাঃ) জীবনী ও আর্দশ নিয়ে আলোচনা করা হয়। আলোচনা সভা শেষে ইসলামিক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এ ছাড়াও গফরগাঁও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে মসজিদ ও মাদ্রাসায় অনুরুপভাবে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) উদযাপন হয়েছে।
দাগনভূঞা (ফেনী) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী(সাঃ) উদযাপন উপলক্ষে ফেনীর দাগনভূঞাতে শনিবার সকালে উপজেলা বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত এক আনন্দ মিছিল বের করে। মিছিলে হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমান অংশ গ্রহণ করেন। মিছিলটি হযরত মাইজ্জা হুজুর(রহঃ) এর মাজার শরীফ থেকে বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ন সড়ক প্রদক্ষিন করে দাগনভূঞা বড় মসজিদে গিয়ে মিলাদ, মুনাজাত ওতাবারুক বিতরণের মাধ্যমে শেষ হয়। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের উপজেলা সভাপতি ও দাগনভূঞা বড় মসজিদের খতিব মাওলানা মুফতী আবুল কালাম আজাদ। মিছিলের অগ্রভাগে ছিলেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য আবু বাসার, দাগনভূঞা উপজেলা চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন, দাগনভূঞা পৌর মেয়র ওমর ফারুক খান, দাগনভূঞা হযরত মাইজ্জা হুজুর(রহঃ) এর নাতি মাওলানা ওয়ায়েছ উল্যাহ,ফেনী প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক শেখ ফরিদ উদ্দিন আত্তার, দাগনভূঞা গাউছিয়া মডেল মাদরাসার সভাপতি মোঃইসমাঈল,বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের উপজেলা সহ সভাপতি মাওলানা কারী আবদুল মালেক, মাও,কাজী এটিএম শরফুদ্দিন আল হারুনি, সাধারন সম্পাদক মাওলানা কাজী জুলফিকার আলম,সহ সাধারন সম্পাদক মাইন উদ্দিন,ইসলামিক ফ্রন্টের উপজেলা সভাপতি মাওলানা হামিদুল হক,সহ সাধারন সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসাইন,মোঃইউসুফ ইসলামী ছাত্রসেনার সভাপতি জহিরুল হক রাসেল ও সাধারন সম্পাদক কমরুদ্দিন তারেক ও আন্জুমানে খোদ্দামুল মুসলেমিন, গাউছিয়া কমিটি, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার অন্যান নেতৃবৃন্দ।
ফান্দাউক দরবার শরীফের জশনে জুলুছ
ফান্দাউক দরবার শরীফ থেকে কে এম শামছুল হক আল মামুন : মুসলিম ওম্মার শান্তি কামনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে আঞ্জুমানে ইসলামী ছাত্রমহল ও ফান্দাউক দরবার শরীফের উদ্যোগে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপিত হয়েছে। গত শনিবার দরবার শরীফ থেকে এক বিরাট জশনে জুলুছ রেব হয়ে ফান্দাউক বাজারসহ প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে দরবার শরীফ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ফান্দাউক মদিনাতুল উলূম মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে এসে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দরবার শরীফের গদ্দীনিশিন পীর আলহাজ মাওলানা মুফতি শাহসূফী সৈয়দ ছালেহ আহমাদ আল-হোসাইনীর সভাপতিত্বে এবং পীরজাদা মাও: সৈয়দ জাকারিয়া আহমদের পরিচালনায় এতে বক্তব্য রাখেন, নাছিরনগর উপজেলা চেয়ারম্যান এটিএম মনিরুজ্জামান সরকার, পীরজাদা আলহাজ মাও: মুফতি সৈয়দ মঈনুদ্দিন আহমদ আল হোসাইনী, ছাত্রমহলের কেন্দ্রীয় সভাপত্বি পীরজাদা আলহাজ সৈয়দ আবু বকর সিদ্দিক আল হোসাইনী, পীরজাদা আলহাজ সৈয়দ বাকের মস্তোফা আল হোসাইনী, মাও: কামাল উদ্দিন আনসারী, হাফেজ আব্দুর রহমান, মাও: হুমায়ূন কবির, মাও: মুফতি মোয্যাম্মিল হক মাছুমী, মুফতি শাহ আলম মাছুমীসহ অন্যান্যরা। জশনে জুলুছে হুজুর ক্বিবলার মুরিদান, আশেকান ও ভক্তবৃন্দসহ হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ অংশগ্রহণ করেন। সভা শেষে পীর সাহেব সর্বশক্তিমান আল্লাহর নিকট মোনাজাত পরিচালনা করেন।
জৌনপুরী দরবার
গত শনিবার, আব্বাসী মঞ্জিল জৌনপুরী দরবার শরীফের উদ্যোগে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নাবী (সা.) উপলক্ষে আজিমুশ্বান বার্ষিক ইসলামী মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব ও বিদায়ী মোনাজাত পরিচালনা করেন আমিন তাহরিকে খাতমে নবুওয়্যত বাংলাদেশ, আল্লামা মুফতি ড. সাইয়্যেদ মোহাম্মাদ এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী ও সিদ্দিকী পীর সাহেব জৌনপুরী হুজুর।
সভাপতির বক্তব্যে পীর সাহেব জৌনপুরী হুজুর বলেন, ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) হলো দেড় হাজার বছর আগে নূরনাবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) সুমহান সর্বশ্রেষ্ঠ রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ এ পৃথিবীতে আগমন করেছেন। সেই দিনের স্মরণে আনন্দ প্রকাশ করা এবং আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করাই হলো ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালন করার পক্ষে কুরআন হাদীসে যথেষ্ঠ দলিল রয়েছে। মূলত ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) মিলাদ কেয়াম ইত্যাদির সম্পর্ক রাসুল (সা.) এর আজমতের সাথে। যাদের শুধুমাত্র রাসুল (সা.) এর সুন্নতের ওপর এলেম আছে তারাই ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) খুঁজে পায় না।
ইসলামী মহা-সম্মেলনে হাজার হাজার শ্রোতাদের সমাগম হয়। ইসলামী সম্মেলনে আলোচনা পেশ করেন পীরজাদা সাইয়্যেদ মাওলানা মুফতি মুহাম্মাদ এহসান উল্লাহ আব্বাসী ওয়া সিদ্দিকী জৌনপুরী, কোরআন তেলাওয়াত করেন পীরজাদা, সাইয়্যেদ মাওলানা মুহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ আব্বাসী ওয়া সিদ্দিকী জৌনপুরী, পীরজাদা, এ ছাড়াও আলোচনা পেশ করেন দেশবরেণ্য ওলামায়ে কেরাম।
আলোচনা শেষে বিদায়ী মোনাজাতে মিয়ানমারসহ বিশ্বের নির্যাতিত মুসলমানদের জন্য দোয়া করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।