বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
আবারও পিছিয়ে গেল টাঙ্গাইলের মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ। এমপি আমানুর রহমান খান রানা অসুস্থতা জনিত কারণে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় গতকাল সোমবার সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি। টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আবুল মনছুর মিয়া সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী দিন ধার্য করেন আগামী ২২ জানুয়ারি। এ নিয়ে তৃতীয় দফায় সাক্ষ্য গ্রহণের দিন পেছাল। তবে অসুস্থতাজনিত কারণ দেখিয়ে ১১বার তারিখ পেছানো হলো মামলার কার্যক্রম।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পিপি মনিরুল ইসলাম খান জানান, আদালতের বিচারক আবুল মনছুর মিয়া সকাল ১১টায় এজলাসে বসেন। প্রথমেই চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার কার্যক্রম শুরু করেন। রাষ্ট্রপক্ষ মামলার বাদী নাহার আহমেদ, ছেলে আহমেদ মজিদ সুমন ও মেয়ে ফারজানা আহমেদ মিথুনের হাজিরা দাখিল করেন। কিন্তু মূল আসামী উপস্থিত না থাকায় রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামী পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেন ২২ জানুয়ারি ২০১৮। চার্জশীটভুক্ত ১৪ আসামীর মধ্যে তিনজন রয়েছেন জামিনে। এমপি রানাসহ চারজন কারাগারে রয়েছেন। এরা হলেন, মোহাম্মদ আলী, সমীর ও আমিনুল ইসলাম এবং জামিনে থাকা ফরিদ আহমেদ, নাসির উদ্দিন নুরু, মাসুদুর রহমান মাসুদ। এদের মধ্যে ছয় আসামীর হাজিরা দাখিল করা হয়। পলাতক আসামীরা হলেন, এমপি রানার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান ওরফে মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান ওরফে কাকন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সানিয়াত খান ওরফে বাপ্পা এবং রানার ঘনিষ্ঠজন কবির হোসেন, চাঁনে, সানোয়ার হোসেন ও দাঁত ভাঙ্গা বাবু।
ঢাকা কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবির তার প্রতিবেদনে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন রানা। ওই বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. আ ন ম নুরে আজম জানিয়েছেন, রানা ফিস্টুলা রোগে আক্রান্ত হওয়ায় তার সার্জারি অপারেশন হয়েছে। তাকে দুই মাস বিশ্রামে রাখা প্রয়োজন। শারীরিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় তার জন্য ভ্রমণ নিরাপদ নয়। এরই প্রেক্ষিতে তাকে টাঙ্গাইল আদালতে হাজির করা সম্ভব হয়নি।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ টাঙ্গাইলে তাঁর কলেজপাড়া এলাকায় নিজ বাসার সামনে পাওয়া যায়। ঘটনার তিন দিন পর তাঁর স্ত্রী নাহার আহমেদ টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। প্রথমে থানা পুলিশ ও পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মামলার তদন্ত করে। ২০১৪ সালের আগস্টে এ মামলার আসামি আনিসুল ইসলাম ওরফে রাজা ও মোহাম্মদ আলী গ্রেপ্তার হন। আদালতে তাঁদের দেওয়া স্বীকারোক্তিতে সাংসদ আমানুর রহমান খান ও তাঁর তিন ভাই সাবেক পৌর মেয়র শহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার এ হত্যাকাণ্ডের জড়িত থাকার বিষয়টি বের হয়ে আসে। এরপর আমানুর ও তাঁর ভাইয়েরা আত্মগোপনে চলে যান। গত বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি আমানুর ও তাঁর তিন ভাইসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ মামলার অভিযোগপত্র জমা দেয় তদন্ত কর্মকর্তা। এরপর বিভিন্ন সময় মামলার চার্জ গঠনের দিন নির্ধারিত হলেও অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়নি। গত ৬ সেপ্টেম্বর আমানুরকে আদালতে হাজির করে চার্জ গঠনের মধ্যদিয়ে বিচারকার্যক্রম শুরু হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।