পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর যানজট নিরসনে বিমানবন্দর থেকে কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) নির্মাণ করা হবে। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে এটির নকশা চূড়ানÍ করা হয়েছে। বিমানবন্দর-কেরানীগঞ্জ (দক্ষিণ) বিআরটি প্রকল্পের আওতায় বিমানবন্দর সড়ক থেকে কেরানীগঞ্জের ঝিলমিল পর্যন্ত ২২ দশমিক তিন কিলোমিটার দীর্ঘ বিআরটি নির্মাণে ব্যয় হবে ৪ হাজার ৭৪৭ কোটি টাকা। অথচ নকশা প্রণয়নকালে প্রাথমিক হিসাবে এ ব্যয় ধরা হয়েছিল ২ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ নকশা চূড়ান্ত করতেই ইতোমধ্যে দুই হাজার ৭৪৭ কোটি টাকা বা ১৩৭ শতাংশ ব্যয় বেড়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এ রুটে থাকা একাধিক ফ্লাইওভারের কারণে এটির নকশা তিন দফা পরিবর্তন করতে হয়। এতে নকশা চূড়ান্ত করতে বিলম্ব হয়েছে। আর এর মধ্যেই ব্যয় বেড়ে দ্বিগুণের বেশি হয়ে গেছে। যদিও বিআরটি প্রকল্পে প্রস্তাবিত ফ্লাইওভারটি বাদ দেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিআরটি ব্যবস্থা চালুতে খুব বেশি কাজের প্রয়োজন হয় না। বিদ্যমান সড়কের দুই পাশে ডিভাইডার দিয়ে বাসের জন্য পৃথক লেন করলেই চলে। আর বাসে ওঠানামার জন্য কিছু স্টপেজ তৈরি করতে হয়। এক্ষেত্রে ভূমি থেকে দুই-তিন ফুট উঁচুতে ছাউনির ব্যবস্থা করতে হয়। বাস স্টপেজের সামনে থামার পর সোজা হেঁটে তাতে ওঠে যান যাত্রীরা। আর চলাচলের রুটের মধ্যে কোনো জংশন (মোড়) থাকলে সেখানে বিআরটির বাসকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে প্রতিটি মোড়ে স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল ব্যবস্থা স্থাপনের প্রয়োজন পড়ে। বাস মোড়ের কাছাকাছি আসার পর সিগন্যাল বাতি জ্বলে। এতে মোড়ে অন্যান্য যানবাহন বন্ধ করে বিআরটির বাসকে আগে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। এসব কারণে বিআরটি নির্মাণে ব্যয় অনেক কম হয়। যদিও বাংলাদেশে বিআরটি নির্মাণ খুবই ব্যয়বহুল বলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক মানদন্ডে বিআরটি নির্মাণে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় হয় ১০ থেকে ৩০ লাখ ডলার। কিন্তু বাংলাদেশ এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। সে হিসাবে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত বিআরটি নির্মাণে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় হচ্ছে আড়াই কোটি ডলারের বেশি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রকল্পটির আওতায় বিআরটি লাইন ও বাস ডিপো নির্মাণে তিন দশমিক ৪৮ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে, যার প্রায় সম্পূর্ণটাই সরকারি। তবে বেসরকারি কিছু জমিও লাগবে। সব মিলিয়ে জমি অধিগ্রহণে ব্যয় হবে ১ হাজার ১০৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আর ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে ব্যয় হবে ২৬৭ কোটি ৬০ লাখ। এছাড়া বিআরটির জন্য আর্টিকুলেটেড (দুই বগির জোড়া লাগানো) বাস কেনায় ব্যয় হবে ৩৯২ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এ ছাড়া মূল বিআরটি লাইন, ইন্টারসেকশন মডিফিকেশন, স্টেশন, আন্ডারপাস, বক্স কালভার্ট, সেতু ও ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণে ব্যয় হবে এক হাজার ১৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এর পাশাপাশি ফিডার সড়ক উন্নয়ন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কার ও ফুটপাত নির্মাণে ব্যয় হবে ৪৮৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা। প্রকল্পের আওতায় মহাখালী বাস টার্মিনাল সংস্কার ও বাস ডিপো নির্মাণে ব্যয় হবে এক হাজার ১৬৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা, কেরানীগঞ্জে বাস ডিপো নির্মাণে ১৩২ কোটি ৫০ লাখ, ইন্টালিজেস্ট ট্রান্সপোর্টেশন সিস্টেম স্থাপনে ১২৩ কোটি, স্বয়ংক্রিয় ভাড়া আদায় ও টিকেটিং ব্যবস্থায় ৫২ কোটি টাকা ব্যয় হবে। সব মিলিয়ে ব্যয় হবে চার হাজার ৭৪৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা। প্রকল্প সূত্র জানায়, বর্তমানে বিমানবন্দর সড়ক থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত ২০ দশমিক দুই কিলোমিটার দীর্ঘ বিআরটি উত্তরের নির্মাণকাজ চলছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে দুই হাজার ৩৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় পড়ছে প্রায় ১০১ কোটি টাকা। যদিও এর আওতায় আট লেনের টঙ্গী সেতুসহ সাড়ে চার কিলোমিটার দীর্ঘ ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে। এর বাইরে আরও সাতটি ছোট ফ্লাইওভার রয়েছে। আবার প্রকল্পটির আওতায় বিশদ নকশা প্রণয়নও রয়েছে।
প্রকল্পের বিস্তারিত নকশায় বলা হয়েছে, বিমানবন্দর থেকে কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত রুটে দৈনিক সাড়ে ছয় লাখ মানুষ যাতায়াত করে। অনিয়ন্ত্রিত বাস রুটের কারণে এতে যানজট লেগেই থাকে। তাই এ রুটে বিআরটি নির্মাণ করা জরুরি। পুরো রুটে বাস স্টপেজ থাকবে ১৬টি। এগুলো হলো- খিলক্ষেত, কুড়িল, ক্যান্টনমেন্ট, কাকলী, আমতলী, মহাখালী বাস টার্মিনাল স্টেশন, বিজি প্রেস, মগবাজার, বেইলি রোড, কাকরাইল, পল্টন, গুলিস্তান, স্টেডিয়াম, নয়াবাজার, কদমতলী ও কেরানীগঞ্জ। এর মধ্যে আমতলী ও মহাখালী স্টপেজ হবে উড়ালপথে (এলিভেটেড)। বাকিগুলো হবে ভূমির সমতলে। ফ্লাইওভারসহ পুরো বিআরটি নির্মাণের সময়কাল ধরা হয়েছে তিন বছর। তবে প্রস্তাবিত শান্তিনগর-ঝিলমিল ফ্লাইওভারের জন্য এটি পুরোটা একবারে নির্মাণ করা যাবে না। এক্ষেত্রে প্রথম পর্যায়ে বিমানবন্দর থেকে মহাখালী বাস টার্মিনাল পর্যন্ত নির্মাণ করা হবে। আর সেখান থেকে দুই রুটে ফিডার বাস সার্ভিস চালু করা হবে। একটি ফিডার মহাখালী থেকে ফার্মগেট ও অন্যটি মহাখালী থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত যাতায়াত করবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।