বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
হাটহাজারী, রাউজান ও ফটিকছড়ি উপজেলার মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে সরকারী নিষেধাঞ্জা অমান্য করে ইজারা না নিয়ে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে একটি মহল। এতে প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীর পরিবেশ তথা মা মাছের অবাধ বিচরণ, মা-মাছ মারা যাওয়া ও নদী ভাঙনসহ নানান সমস্যা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
এছাড়া সরকার লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তবে এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কোন তদারকি নেই। সরজমিনে দেখা গেছে, হাটহাজারী উপজেলার মেখল ইউনিয়নের রুহুলাপুর সুইচ গেইট, সত্তার ঘাট, মদুনাঘাট, মাদার্শা, গড়দুয়ারা, ছিপাতলী, নাঙ্গলমোড়া উপজেলার বেশ কয়েকটি স্থানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে।
জানা গেছে, উপজেলার এক শ্রেণীর অসাধু বালু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে সরকারের কাছ থেকে ইজারা নেওয়ার নাম করে বালু ব্যবসা দেদারসে চালিয়ে যাচ্ছে। হালদার সাথে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছে যে, হালদা নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করা না হলে হালদার উপর নির্ভরশীল মানুষগুলোকে বেশ দুর্ভোগে পড়তে হবে। হালদার তীরবর্তী এলকার বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে বিরতিহীন ভাবে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করে পরিবাহন করা যান্ত্রিক নৌযান দিয়ে। বেপরোয়া ভাবে নদীর বালু উত্তোলনে নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙনসহ বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। মানুষের বাড়ি-ঘরসহ ব্রিজ-কালবার্ট ভেঙে পড়ছে। এছাড়া কয়েকটি ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে হালদার ভাঙনের ফলে হুমকির মাঝে পতিত হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিশ্চুক পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে জানান, কিছু অসাধু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের আশ্রয়-প্রশয়ে এসব অসাধু ব্যাক্তিরা দিনে দুপুরে হালদা নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে কোন প্রকার ইজারা ছাড়াই বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। এত করে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে লাখ লাক্ষ টাকার রাজস্ব আয় থেকে।
গড়দুয়ারা ইউনিয়নের বাসিন্দা ওসমান গনি এই প্রতিবেদককে জানান, হালদা থেকে বালু উত্তোলনের ফলে আমাদের এলাকার ঘরবাড়ি, ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের জন্য প্রতিবাদ করতে গিয়ে এলাকার অসহায় লোকজনকে বহুবার হামলা-মামলার স্বীকার হতে হয়েছে। হালদা নদীর মদুনা ঘাট হতে সত্তরঘাট পর্যন্ত হাটহাজারীর সীমানা কোন ব্যাক্তিকে সরকার ইজারা দেয়নি, তবুও থামছেনা বালু উত্তোলন। হাটহাজারীর সীমানায় অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আক্তার উন নেছা শিউলী বেশ কয়েবার অভিযান পরিচালনা করলেও এরপরও থামছে না বালু উত্তোলন। হালদা থেকে বালু উত্তোলনের ফলে হালদার উপর কেমন প্রভাব পড়বে জানতে চাইলে হালদা বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ আলী আজদী এই প্রতিবেদককে জানান, ডিম ছাড়ার পূর্বে মা মাছ খুব দূর্বল থাকে। এ সময় নদীতে মা মাছের অবাধ বিচরণ নিশ্চিত করতে হয়। এছাড়া এসময় হালদা নদী থেকে ড্রেজার বা অন্য কোন মাধ্যম দিয়ে বালু উত্তোলন করা ঠিক নয়। এতে প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীর পরিবেশ তথা মা মাছের অবাধ বিচরণ, মা-মাছ মারা যাওয়া ও নদী ভাঙনসহ বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।