পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মিয়ানমারের ইচ্ছে অনুযায়ী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে ১৯৯২ সালের চুক্তি অনুসরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ১৯৯২ সালের চুক্তি তারা (মিয়ানমার) অনুসরণ করতে চায়। সেভাবেই জিনিসটি করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়া। এতে ত্রুটি-বিচ্যুতি আছে, এটা নাই সেটা নাই- এসব বলে লাভ নাই।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। উল্লেখ পররাষ্ট্রমনন্ত্রী সম্প্রতি মিয়ানমার সফর করেন। রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার ব্যাপারে মিয়ানমারের মন্ত্রী কিয়া তিন্ত সোয়ের সঙ্গে সমঝোতার সম্মতিপত্র বিনিময় করেন। এর আগে তিনি অং সান সুচির সঙ্গে বৈঠক করেন। মিয়ানমারের সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত এই চুক্তি হওয়ার আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একাধিকবার বলেছেন, ১৯৯২ সালের ওই চুক্তি অনুসরণযোগ্য নয়। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার তথ্য অনুযায়ী গত বছরের ৯ অক্টোবর সেনা অভিযানের মুখে ৮৫ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। আর এবার ২৫ অগাস্টের পর নতুন করে বাংলাদেশে আসে সোয়া ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে চলে আসে।
সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী মিয়ানমার গত ৯ অক্টোবর ২০১৬ এবং ২৫ আগস্ট ২০১৭ এর পরে বাংলাদেশে আশ্রয়গ্রহণকারী বাস্তুচ্যুত রাখাইন রাজ্যের অধিবাসীদের ফেরত নিবে। মিয়ানমারের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তিতে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়া সংক্রান্ত কোনও সময়সীমা নেই? প্রশ্ন করা হলে মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার কোনও টাইমফ্রেম দেওয়া যায় না। প্র্যাককটিক্যাল ব্যাপার হলো এরকম কোনও টাইমফ্রেম দিয়ে কোনও লাভও নেই। মন্ত্রী জানান, ২০১৬ সালের অক্টোবরের পর থেকে যেসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে তাদের আগে পাঠানো হবে। আর এর আগে থেকেই যারা আছে (প্রায় তিন লাখের মতো) তাদের ফেরত পাঠানোর বিষয় পরে বিবেচনা করা হবে। তিনি আরো বলেন, মিয়ানমারে ফেরত নেওয়ার পর রোহিঙ্গাদের তাদের সাবেক আবাসস্থল বা পছন্দ অনুযায়ী কাছাকাছি কোনও স্থানে পুনর্বাসিত করা হবে। প্রাথমিকভাবে তাদের অস্থায়ী আশ্রয়স্থলে সীমিত সময়ের জন্য রাখা হবে। এছাড়া যৌক্তিক সময়ের মধ্যে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দুই পক্ষ সম্মত হয়েছে। তবে যাচাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ফের নেওয়া হবে। এই প্রক্রিয়ার জটিলতা আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
এই প্রত্যাবাসন চুক্তির কোনও আইনি বাধ্যবাধকতা আছে কিনা জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাধ্যবাধকতা আছে। কিন্তু আইন থাকলেও লঙ্ঘন হয়। আইন দিয়ে কিছু হয় না। মূল কথা হলো কোনও দেশ এটি মানছে কিনা। চুক্তিতে বাংলাদেশের স্বার্থ উপেক্ষিত হয়েছে এক সাংবাদিক এরকম মন্তব্য করলে মন্ত্রী বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, আমি সন্তুষ্ট। আপনার মন্তব্য অত্যান্ত চমৎকার। আমার মনে হয় এটি অত্যন্ত হাস্যকর মন্তব্য। গোটা পৃথিবী একদিকে বলছে আপনি বলছেন এটি কোনও চুক্তি হয়নি। স্বার্থ কে ঠিক করে? যে সরকার ক্ষমতায় আছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে ‘জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠন এবং ‘টার্মস অব রেফারেন্স’ চূড়ান্ত করা হবে। জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ এই চুক্তি বাস্তবায়নে কাজ করবে। এই প্রক্রিয়ায় চীন ও ভারতের সহযোগিতা নেওয়ার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় নাফ নদীর স্থায়ী সীমানা নির্ধারণের উপর ২০০৭ সালে চূড়ান্ত করা একটি প্রটোকল সই হয়। ১৯৯৮ সালে স্বাক্ষরিত নাফ নদীর উত্তরে স্থলভাগের সীমানা নির্ধারণ চুক্তির ‘ইনস্ট্রুমেন্ট অব রেটিফিকেশন’ও বিনিময় হয়। এছাড়া রাখাইন রাজ্যের জন্য বাংলাদেশের উপহার হিসেবে তিনটি অ্যাম্বুলেন্স মিয়ানমারের সমাজসেবা, ত্রাণ ও পুর্নবাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।