পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রশাসনে চার স্তরে (উপ-সচিব, যুগ্ম সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব) পদোন্নতি হচ্ছে। এ লক্ষ্যে কাজ শেষ করছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সম্ভাব্য পদোন্নতির প্রক্রিয়া চূড়ান্ত ও প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাইয়ের লক্ষ্যে সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড (এসএসবি) দফায় দফায় বৈঠক করেছে। এবারে পদোন্নতির তালিকায় নারী কর্মকর্তাদের প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আসাদুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত সচিব পদে বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডে মহাপরিচালক পদে বদলি করে গতকাল প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রসাশনে পদোন্নতির ফাইলে স্বাক্ষর করেছেন বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোজাম্মেল হক খান ইনকিলাবকে বলেন, প্রশাসনে পদোন্নতি একটি চলমান প্রক্রিয়া। ইতোমধ্যে যে কয়েকজন সচিবের চাকরির মেয়াদ শেষ হয়েছে, তাদের স্থলে নতুন সচিব নিয়োগ দেয়া হয়েছে। চলতি মাস এবং আগামী মাসের মধ্যে কয়েকজন সচিব অবসরে যাবেন। তাদের স্থলে কয়েকজনকে নিয়োগ দেয়া হবে। এ ছাড়া পদোন্নতির দেয়ার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, আজ না হলে এ সপ্তাহে প্রশাসনে পদোন্নতি হবে।
সূত্র জানায়, দক্ষ ও শক্তিশালী প্রশাসন গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে নতুন রূপে সাজানোর কাজ শুরু করেছে। চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একাধিক মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে পরিবর্তন করা হচ্ছে। সরকারের আস্থাভাজন, কয়েকজন কর্মকর্তাকে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্বে বসানোর চিন্তাভাবনা রয়েছে। উপ-সচিব থেকে যুগ্ম সচিব এবং সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে উপ-সচিব পদে পদোন্নতি দেয়ার চিন্তাভাবনাও রয়েছে। একই সাথে মাঠ প্রশাসনের ডিসি ও ইউএনও পদেও পরিবর্তন আনা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ডিসি ফিটলিস্টের কাজ শেষ হয়েছে, আগামী ডিসেম্বরে এ প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে।
প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, বর্তমান সরকারের মেয়াদকাল রয়েছে দেড় বছর। অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, এ রকম উত্তরণকালে একদিকে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি রাজপথ গরম করে, অন্যদিকে প্রশাসনের ভেতর থেকে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে নানা ধরনের চাপ ও অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা হয়। এসব বিষয়ে সরকার সচেতন। প্রশাসনের কয়েকটি পর্যায়ে বড় ধরনের পদোন্নতির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (এপিডি) শেখ ইউসুফ হারুন ইনকিলাককে বলেন, পদোন্নতি একটি চলমান প্রক্রিয়া। এ নিয়ে আমরা কাজ করছি। যে কোনো সময় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হবে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রশাসনে তিন স্তরে পদোন্নতির ব্যাপারে গত সপ্তাহেও বৈঠক করেছেন এসএসবির সদস্যরা। ইতোমধ্যে অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতিপ্রাপ্তদের তালিকা চ‚ড়ান্ত হয়েছে। চলতি সপ্তাহে আরো প্রয়োজনীয় বৈঠক করে উপ-সচিব থেকে যুগ্ম সচিব পদের তালিকা চ‚ড়ান্ত করা হবে। এবার পদোন্নতি পেতে যাচ্ছেন বিসিএস নবম, ১৩তম ও ২৪তম ব্যাচের কর্মকর্তারা। যোগ্যতা থাকা সত্তে¡ও অতীতে পদোন্নতি বঞ্চিত হয়েছেন এমন অনেক কর্মকর্তাও আছেন এই তালিকায়।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরীর চাকরিতে চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ডিসেম্বরে। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ না পেলে তাকে সরকারের অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব দেয়া হতে পারে। সে ক্ষেত্রে মুখ্যসচিব পদে নিয়োগ পেতে পারেন জনপ্রশাসন সচিব ড. মোজাম্মেল হক খান। এ কর্মকর্তা প্রশাসনে সজ্জন হিসেবে পরিচিত। বিএনপির আমলে তিনি পদে পদে বঞ্চিত ছিলেন। ওই পদে নিয়োগের জন্য বর্তমানে তার ব্যাচে তিনিই সিনিয়র কর্মকর্তা। এ বিবেচনায় তাকেই মুখ্যসচিব পদে নিয়োগ দেয়ার সম্ভাবনা জোরালো। সে ক্ষেত্রে তার স্থলে শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসেনকে দায়িত্ব দেয়া হতে পারে। আর ’৮৫ ব্যাচের এক কর্মকর্তাকে দেয়া হতে পারে শিক্ষা সচিবের দায়িত্ব। এ ছাড়া চলতি মাসে ও ডিসেম্বর মাসে অনেক সচিব অবসরে যাচ্ছেন, সে ক্ষেত্রে সচিব পদেও পদোন্নতি দেয়া হচ্ছে।
সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত ১০০ জনের কিছু বেশি কর্মকর্তার তালিকা চ‚ড়ান্ত করা হয়েছে। এ পদে পদোন্নতির যোগ্যতা অর্জন করেছেন নবম ব্যাচের ৫২ জন ও দশম ব্যাচের ১০২ জন যুগ্ম সচিব। এ ছাড়া যোগ্যতা থাকা সত্তে¡ও পদোন্নতি বঞ্চিত ১৯৮২ বিশেষ ব্যাচের ১৪ জন, ১৯৮৪ ব্যাচের ৬১ জন, ১৯৮৫ ব্যাচের ১৬০ জন, ১৯৮৬ ব্যাচের ৩২ জনও এ পদে পদোন্নতির দাবিদার। তবে এ দফায় দশম ব্যাচের কর্মকর্তাদের পদোন্নতির জন্য বিবেচনায় নেয়া হচ্ছে না, তা অনেকটাই নিশ্চিত।
যুগ্ম সচিব পদে ১৩তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের বিবেচনায় নেয়া হচ্ছে। কিছু লেফট আউট কর্মকর্তাসহ এ ব্যাচের ১৬৫ জন যুগ্ম সচিব হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছেন পাঁচ বছর আগেই। তবে এ ক্ষেত্রে প্রায় দেড় শ’ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়া হতে পারে। উপ-সচিব পদে পদোন্নতির সুপারিশ করতে ২৪তম ব্যাচের ৩৩৩ জন কর্মকর্তার মধ্যে ২৯০ জনের প্রয়োজনীয় তথ্য যাচাই-বাছাই হয়েছে। এ ছাড়া ২২তম ব্যাচের লেফট আউটসহ উপ-সচিব পদে পদোন্নতির জন্য প্রায় ২০০ কর্মকর্তাকে বিবেচনা করা হতে পারে। যারা বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে সিনিয়র সহকারী সচিব পদে কর্মরত রয়েছেন। সর্বশেষ ২৪ এপ্রিল ২৬৭ জন সিনিয়র সহকারী সচিবকে উপ-সচিব পদে পদোন্নতি দেয়া হয়। এর মধ্যে ২২তম ব্যাচেরই ১৯৩ জন কর্মকর্তা ছিলেন। এ ব্যাচের ৫২ জন কর্মকর্তাকে বঞ্চিত করার অভিযোগ ওঠে। এর আগে গত বছরের ২৭ নভেম্বর প্রশাসনের তিন স্তরে উপ-সচিব, যুগ্ম সচিব ও অতিরিক্ত সচিব পদে ৫৭০ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয় সরকার। এর মধ্যে উপ-সচিব পদে ২২৭, যুগ্ম সচিব পদে ১৯৫ এবং অতিরিক্ত সচিব পদে ১৪৮ জনকে পদোন্নতি দেয়া হয়। অভিযোগ আছে, পদোন্নতি দিতে গিয়ে এর দ্বিগুণেরও বেশি কর্মকর্তাকে সে সময় পদোন্নতি বঞ্চিত করা হয়। প্রসঙ্গত, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, বর্তমানে উপ-সচিবের নিয়মিত (ডিউটি) ৮৩৫টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন এক হাজার ৫৫৩ জন। যুগ্ম সচিবের ৪৩০টি স্থায়ী পদের বিপরীতে এ স্তরে কর্মকর্তা আছেন ৭৯৩ জন। অতিরিক্ত সচিবের ১১১টি স্থায়ী পদের বিপরীতে আছেন ৪৪৬ জন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।