মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
জাপানে পদার্পণের মধ্য দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১১ দিনের এশিয়া সফর শুরু করলেন। জাপানে পদার্পণের মধ্য দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১১ দিনের এশিয়া সফর শুরু করলেন। গতকাল রোববার সকালে জাপানের রাজধানী টোকিওতে পৌঁছান তিনি। এ সময় ট্রাম্পকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। খবর সিএনএন। জাপান যাওয়ার পথে ডোনাল্ড ট্রাম্প হাওয়াইতে যাত্রা বিরতি করেন। সেখানে তিনি পার্ল হারবারের ইউএসএস অ্যারিজোনা মেমোরিয়াল পরিদর্শন করেন। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের একটি ব্রিফিংয়েও অংশ নেন তিনি। এদিকে সংলাপের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে পারমাণবিক কর্মসূচি বাড়ানোর হুমকি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এশিয়া সফরের পূর্ব মুহূর্তে ট্রাম্প প্রশাসনকে লক্ষ্য করে এ হুমকি দিলো উত্তর কোরিয়া। এ খবর দিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার প্রথম এশিয়া সফরের শুরুতে গতকাল রোববার স্থানীয় সময় সকাল ১১টার দিকে জাপানের ইয়োকো বিমান ঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা সদস্যদের মাঝে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখেন ট্রাম্প। ফার্স্টলেডি মেলানিয়া ট্রাম্পকে সঙ্গে নিয়ে ডায়াচে ওঠেন তিনি। স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে এগিয়ে যান মাইকের সামনে। এ সময় তাকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা সেনাবাহিনীর জন্য নির্ধারিত জ্যাকেট নিয়ে এগিয়ে যান ট্রাম্পের কাছে। ট্রাম্প মাইকে বলতে থাকেন- আমার কি এটা পরা উচিত? সামনে থেকে সম্মতিসূচক উত্তর আসে। তিনি নিজের বেøজার খুলে ফেলেন। পরে নেন ওই জ্যাকেট। কিছুটা কৌতুক করে বলেন, এখন অপেক্ষাকৃত আরাম লাগছে। এক পর্যায়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্র-জাপান সম্পর্কের ওপর গুরুত্ব দেন। বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ অংশীদার জাপান। তিনি জাপানের নাগরিকদের প্রতি জানান উষ্ণ অভিনন্দন। উল্লেখ্য, ট্রাম্পের এ সফরের দিকে তাকিয়ে আছে বিশ্ব। তিনি এমন এক সময়ে এশিয়া সফর করছেন, বিশেষ করে জাপান যখন উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধংদেহী অবস্থা। কোরিয়া উপদ্বীপ অঞ্চলে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে দু’দেশ। যুদ্ধ আতঙ্কে শিহরিত হচ্ছে এশিয়ার কোটি কোটি মানুষ। ট্রাম্প এমন এক সময়ে সেই উত্তর কোরিয়ার খুব কাছাকাছি চলে এসেছেন। স্বাভাবিকভাবে তার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে উত্তর কোরিয়ার দিকে। তবে ট্রাম্পের সফরের আগে উত্তর কোরিয়া তার পারমাণবিক কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয়াকে দেখা হচ্ছে, ট্রাম্পের এশিয়া সফরের বিরুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের তুরুপের তাস হিসেবে। স্পষ্টত ট্রাম্প এ সফরের কোরিয়া ইস্যুতে এশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় দেশগুলোর সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছার চেষ্টা করবেন। তবে এ ব্যাপারে তিনি কতটুকু সফল হবেন তা নিয়ে গভীর উদ্বেগে বিশ্ব। সফরসুচি অনুযায়ী মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়া পৌঁছার কথা তার। অন্যদিকে, উত্তর কোরিয়ার বার্তা সংস্থা কেসিএনএ এক বিবৃতিতে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত অবান্তর ইচ্ছা করা বাদ দেয়া। এটা কোনভাবেই আশা করা উচিত না যে, তাদের আন্তর্জাতিক অবরোধের হুমকিতে উত্তর কোরিয়া দমে যাবে। আমরা যে কোন অবস্থাতেই পারমাণবিক স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের প্রচেষ্টা থেকে পিছু হটবো না। সুতরাং, যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচি বন্ধের সংলাপ নিয়ে দিবাস্বপ্ন দেখা বাদ দেয়া উচিত। আরো বলা হয়, উত্তর কোরিয়া সময়ের সঙ্গে প্রতিরক্ষামূলক পারমাণবিক কর্মসূচীর ব্যাপ্তি বাড়াতে থাকবে যতদিন না যুক্তরাষ্ট্র আজীবনের মতো শত্রæভাবাপন্ন মনোভাব পরিহার করছে। হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়াকে দমনে- দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় সমাবেশে ট্রা¤প দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্মিলিত পদক্ষেপের ব্যাপারে বক্তব্য দেবেন। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার পক্ষ থেকে আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, ট্রাম্প পরিস্থিতি আরো বিগড়ে দিতে পারেন। উত্তর কোরিয়াকে নিয়ে তার সা¤প্রতিক আক্রমণাত্মক আচরণের কারণেই এমনটি আশঙ্কা করা হচ্ছে। কয়েক মাস ধরে ট্রাম্প এবং কিম জং উনের মধ্যকার দ্ব›দ্ব তীব্র রূপ নিয়েছে। তারা একে অপরকে ক্রমাগত যুদ্ধের হুমকি দিচ্ছেন এবং আক্রমণাত্মক কথা বলছেন। এ পরিস্থিতিতে উত্তর কোরিয়ার নর্থ কোরিয়ান স্টাডিস-এর অধ্যাপক ইয়াং মো জিন এএফপিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ট্রাম্পের উদ্ধত আচরণের অভ্যাস নিয়ে কোরিয়ানরা উদ্বিগ্ন। তিনি মেজাজ হারিয়ে সঙ্কটকে ঘনীভূত করে তুলতে পারেন এমনটি আশঙ্কা করা হচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়ার সিউল শহরে শনিবার প্রায় ৫০০ মানুষ ট্রাম্প বিরোধী মিছিল করেন। ব্যানার এবং শ্লোগানে মুখরিত করে তোলেন শহর। তাদের আশঙ্কা, ট্রাম্প কোরীয় দ্বীপপুঞ্জে যুদ্ধ ডেকে আনবেন। একটি ব্যানারে লেখা দেখা যায়- ট্রাম্প এবং যুদ্ধ, কোনটিই চাই না। অন্যদিকে প্রায় ১০০ মানুষ একইদিন ওই শহরে ট্রাম্পের পক্ষে মিছিল করেন। স্বাগতম প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প! আমরা আপনার ওপর আস্থাশীল- বলে শ্লোগান দেন তারা। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অবশ্য শুরু থেকেই বলে আসছেন যে, উত্তর কোরিয়ার সাথে সমঝোতার চেষ্টা সময় ক্ষেপণের নামান্তর এবং অর্থহীন। তিনি এ বছরের শুরুতে ক্ষমতায় আসা দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জাই ইনের উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সমঝোতা সংলাপের প্রচেষ্টাকে অকার্যকর ভাবনা বলে উল্লেখ করেন। এ বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার নীতি সংক্রান্ত উপদেষ্টা কোহ ইয়ু হান বলেন, আমরা আশা করি, সফরকালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার প্রতি যুদ্ধংদেহি বক্তব্য অব্যাহত রেখে প্রেসিডেন্ট মুনকে মুশকিলে ফেলবেন না। বিশেষ করে, ফেব্রুয়ারিতে দক্ষিণ কোরিয়া শীতকালীন অলিম্পিকের আয়োজক। এই অবস্থাতে কোন ধরনের সঙ্কট তৈরি হতে দেয়া যাবে না। অবস্থাদৃষ্টে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একটি দোটানায় পড়লেন বলে মনে হচ্ছে। একদিকে তার অনুগত অনুসারীরা চাইছেন, তিনি কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। অন্যদিকে বৈশ্বিক মত, একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের পক্ষে। এ অবস্থায় তিনি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন তা হবে ভীষণ তাৎপর্যবহ। সিএনএন, বিবিসি, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।