পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সব কাজ শেষ। পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেনও চালানো হয়েছে। আগামী ৯ নভেম্বর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দ্বিতীয় ভৈরব ও তিতাস রেলসেতুর উদ্বোধন করবেন। রেলওয়ে এপ্রোচসহ প্রায় এক হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু দুটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এরমধ্যে ১৩৩ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে সরকারি তহবিল (জিওবি) থেকে। বাকী ৮২৬ কোটি ২০ লক্ষ টাকা অর্থায়ন করেছে ভারতীয় ঋণ সহায়তা (এলওসি)। আশুগঞ্জ-ভৈরবের মেঘনা নদীর ওপর ৬২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯৮২ দশমিক ২ মিটার দীর্ঘ ডুয়েল গেজ রেলসেতুর নির্মাণকাজ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ২০১৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু করে ইরকন ও এফকন জেভি নামে ভারতের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর গত শুক্রবার সেতুটি দিয়ে ২০ কিলোমিটার গতিতে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকামুখি সূবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেন পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হয়। এ দুটি সেতু চালু হলে কমে যাবে ঢাকা-চট্টগ্রাম ট্রেন চলাচলের সময়। ডাবল লাইনে ক্রসিং ছাড়াই চলবে ট্রেন। বাড়বে ট্রেনের সংখ্যাও। রেলমন্ত্রী মোঃ মুজিবুল হক বলেন, পণ্য পরিবহনে সময় কম লাগবে বলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা রাখবে সেতু দুটি। একই সাথে ট্রেনে ভ্রমনের সময়ও কমবে। এতে করে যাত্রীরা অনেক উপকৃত হবে। রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে এখন যে সময় লাগে তার চেয়ে কমপক্ষে ১৫ মিনিট সময় কমে আসবে সেতু দুটি চালু হলে। সেতু দুটির প্রকল্প পরিচালক রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল মহাব্যবস্থাপক (জিএম) প্রকৌশলী মো. আব্দুল হাই গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, সব কাজ শেষে উদ্বোধনের জন্য দ্বিতীয় ভৈরব রেলসেতুটি প্রস্তুত করা হয়েছে। আগামী ৯ নভেম্বর বেলা সাড়ে ১১টায় বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুটি উদ্বোধন করবেন। উল্লেখ্য, একই সময়ে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী খুলনা-কলকাতা রেলপথে ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ নামে নতুন একটি ট্রেনের উদ্বোধন করবেন।
কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরবে মেঘনা নদীর ওপর ১৯৩৭ সালে নির্মিত হয় ভৈরব রেল সেতু। দীর্ঘ ৭৯ বছর ধরে ওই সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল করছে। পুরনো সেতুটি মেরামত ও সংস্কার করে ট্রেন চলাচলের উপযোগী করে রাখা হয়েছে। ২০১০ সালের ৯ নভেম্বর পুরাতন এই সেতুর পাশাপাশি আরেকটি নতুন রেল সেতু নির্মাণের প্রস্তাব জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় (একনেক) অনুমোদন পায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেকের ওই সভা শেষে জানানো হয়, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ ডাবল লাইন হবে। এ লক্ষ্যে রেলওয়ে অ্যাপ্রোচসহ দ্বিতীয় ভৈরব এবং দ্বিতীয় তিতাস রেলসেতু নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। রেলওয়ে সূত্র জানায়, রেলওয়ে এপ্রোচসহ ৯৫৯ কোটি ২০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সেতু দুটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এরমধ্যে ১৩৩ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে সরকারি তহবিল (জিওবি) থেকে। বাকী ৮২৬ কোটি ২০ লক্ষ টাকা অর্থায়ন করেছে ভারতীয় ঋণ সহায়তা (এলওসি)।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, দীর্ঘ ৮০ বছর পর ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে ডাবল লাইন নির্মাণের সুফল তুলতে দ্বিতীয় ভৈরব সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। দ্বিতীয় ভৈরব সেতু চালু হওয়ার পরে পুরাতন সেতুটিও চালু থাকবে। তখন দুই সেতু দিয়েই ট্রেন চলাচল করবে। একটি দিয়ে চলবে আপ ট্রেন এবং অপরটি দিয়ে চলবে ডাউন ট্রেন। রেলওয়ে মহাপরিচালক মো. আমজাদ হোসেন জানান, দ্বিতীয় ভৈরব ও তিতাস সেতু যাতে ডুয়েল গেজ হিসেবে ব্যবহার করা যায় এজন্য দুটি সেতুর উপর ডুয়েল রেললাইন স্থাপন করা হয়েছে।
জানা গেছে, ১২টি পিলার ও ৯টি স্প্যান দিয়ে তৈরী দ্বিতীয় ভৈরব সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৬২০ কোটি টাকা। এই সেতুর দৈর্ঘ্য ৯৮৪ মিটার এবং প্রস্থ সাত মিটার। ২০১৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইরকন-এফকন জেভি’র সাথে ভৈরব সেতু নির্মাণে চুক্তি হয়। একই বছরের ২৫ ডিসেম্বর প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। প্রথম দফায় গত বছরের ডিসেম্বরে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও দ্বিতীয় ধাপে মেয়াদ বাড়ানো হয়। একইভাবে ২০১৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তিতাস সেতু নির্মাণের চুক্তি হয় নিয়োজিত ঠিকাদার গ্যানন-এফএলসিএলের সাথে। ২০১৪ সালের ২৭ জানুয়ারি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ১৯১ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে তিতাস সেতুটি। রেল সূত্র জানায়, লাকসাম-আখাউড়া ডাবল লাইন প্রকল্প বাস্তবায়নে আরও দেড় বছরের মতো সময় লাগবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যেতে সর্বোচ্চ চার ঘণ্টা সময় লাগবে। এ প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক বলেন, আমাদের কাজ হলো মানুষকে সেবা দেয়া। লাকসাম-আখাউড়া ডাবল লাইনের কাজ যতো তাড়াতাড়ি শেষ করা যাবে ততোই ভালো। আমরা চেষ্টা করছি এই কাজ দ্রæত শেষ করে জনগণকে সেবা দিতে। রেলমন্ত্রী বলেন, দ্বিতীয় ভৈরব ও তিতাস রেল সেতু চালু হলে বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম এবং উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় পর্যটন অঞ্চল তেল-গ্যাস খনিজ সমৃদ্ধ সিলেটের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ সহজতর হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।