পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রতি মাসে ৩০ মে:টন রাসটিক কম্পোস্ট জৈব্য সার উৎপাদন
প্রকল্পের উপার্জিত অর্থে পরিচালিত হচ্ছে দু’টি কারিগরি স্কুল
এশিয়ার বৃহৎ মানববর্জ্য শোধনাগার এখন খুলনায়। এটি বিশ্বের বৃহৎ শোধনাগারের অন্যতমও বটে। সুবিশাল এক কর্মযজ্ঞ্য চলে প্রতিদিন। গৃহস্থলীল ৩শ মেট্রিকটন গৃহস্থলীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে প্রায় ৩০ মে:টন রাসটিক কম্পোস্ট জৈব্য সার প্রতিমাসে এখানে উৎপাদিত হচ্ছে। খুলনা মহানগরীর পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি উৎপাদিত জৈব সার বৃহত্তর খুলনাঞ্চলের সবুজ বিপ্লব ঘটাতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। কেসিসি মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান এর উদ্যোগ এবং বিশেষ তদারকিতে এই প্রকল্পটি এখন দেশের অন্যতম মডেল। এই প্রকল্পের উপার্জিত অর্থে পরিচালিত হচ্ছে দু’টি কারিগরি স্কুল। যেখান থেকে আত্মনির্ভরশীল হচ্ছে শত শত শিক্ষার্থী। এসব শিক্ষার্থীরা এ অঞ্চলের বোঝা না হয়ে বরং সম্পদে পরিনত হচ্ছে।
সূত্রমতে, খুলনা-সাতক্ষীরা সড়কের পাশে রাজবাধ এলাকায় কেসিসি নির্মাণ করেছে এই প্লান্টটি। ১.৩ একর জমির ওপর আধুনিক প্রযুক্তি ও প্রাকৃতিক পদ্ধতির সমন্বয়ে খুলনা সিটি কর্পোরেশন এই মানববর্জ্য পরিশোধন কেন্দ্রটি নির্মাণ করেছে। স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করতে পরিশোধনাগারের সিংহভাগ জুড়ে রয়েছে ফুলের বাগিচা। লাল আর হলুদের সমারোহে দেখে বোঝার উপায় নেই নগরীর হাজার হাজার টন বর্জ্য এখানে ফেলা হয়। কোনরূপ দুর্গন্ধও নেই। অথচ এক সময় এটি ছিল দুর্গন্ধের এক বিশাল আধার। এলাকাবাসী আর পথচারীদের ভোগান্তির অন্ত ছিল না। অথচ এখন সেখানে এক ভিন্ন স্বাস্থ্য সম্মত পরিবেশ। এর সফল পরিচালক কেসিসি’র ক্লিন ইমেজের মেয়র মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মাদ মনিরুজ্জামান। যিনি নগরবাসীর সেবা দিতে সাধ্যমত প্রচেস্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সিটি মেয়র এর আন্তরিক প্রচেষ্টায় বিল এন্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে মানব বর্জ্য শোধনাগারটি গড়ে তোলা হয়েছে। কেসিসি এলাকায় প্রতিদিন ১২-১৫ হাজার মে:টন গৃহস্থলীর বর্জ্য উৎপন্ন হয়। বাড়ী বাড়ী থেকে পরিচ্ছন্ন কর্মীরা এই বর্জ্য সংগ্রহ করে নগরীর সেকেন্ডারী ট্যানেসফার স্টেশনে ল্যান্ডিং করে। সিটি কর্পোরেশন তাদের গাড়ীতে করে এই বর্জ্য নিয়ে যায় প্লান্টে। সেখানে বাছাই শেষে তৈরী হয় জৈব সার। এই শোধনাগারটি নেদারল্যান্ড ডেভেল্পমেন্ট অর্গানাইজেশনের (এসএনভি)’র তত্ত¡াবধানে নির্মিত হয়েছে। সহযোগতিা করেছে থাইল্যান্ডের এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। মানববর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি আধুনিক করতে তিন বছর আগে উল্লিখিত সংস্থাগুলি কাজ শুরু করে। তবে মূল কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের জানুয়ারী মাসে এবং শোধনাগারটি চালু হয় চলতি বছরের ৪ঠা মার্চ। প্রতিদিন প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার লিটার মানববর্জ্য পরিশোধনের সুযোগ রয়েছে এ পরিশোধন কেন্দ্রে। গত ৮ মাসে এখানে ৩ লাখ ১৬ হাজার লিটার বর্জ্য পরিশোধন করা হয়েছে। পানি শোধনাগারের আদলেই এটি নির্মাণ করা হয়েছে। বিভিন্ন বাসাবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি স্থানে যে বর্জ্য উৎপাদিত হয় তা ভ্যাকুটাগ এর মাধ্যমে আধুনিক পদ্ধতিতে আনা হয় শোধনাগারে, ফেলা হয় নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানে পাইপের মাধ্যমে ভাগ হয়ে সমস্ত মল কয়েকটি বেডে ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিটি বেড প্রতিদিন ৩৬ হাজার লিটার বর্জ্য ধারণ করতে পারে। বেডগুলির নিচে ইটের খোয়া, পাথর ও বালু দিয়ে ফিল্টার পদ্ধতিতে বর্জ্য পানি পরিশোধন করা হয়। বর্জ্য শোধনের জন্য এর পার্শ্বে উচু জায়গায় কলাবতি ফুলের চাষ করা হয়েছে। এই ফুলের গাছ মানববর্জের ব্যাকটেরিয়া শোষন করে থাকে।
মানববর্জ্য শোধনাগারে খুলনা সিটি কর্পোরেশন এখন মানববর্জ্য ব্যবহার করে জৈব সার, বায়োগ্যাস এবং সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে মানববর্জ্য শোধনাগারের পাশ্ববর্তী স্থানে রাজবাধের ট্রেন্সিং গ্রাউন্ডে বর্জ্য দ্বারা কম্পোস্ট সার উৎপাদন করা হচ্ছে। খুলনা সিটি কর্পোরেশনের সহযোগতিায় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা রাজটিক কয়েক বছর যাবত কম্পোস্ট উৎপাদন করছে।
সম্প্রতি খুলনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এস এম হাবীবের নেতৃত্বে সাংবাদিকবৃন্দ রাজবাধে মানববর্জ্য শোধনাগার পরিদর্শনে যান। সিটি মেয়র ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ এ প্রকল্পের বিভিন্ন কার্যক্রম ও এর সুফল সম্পর্কে সাংবাদিকগণকে অবহিত করেন।
এ সময় কেসিসি’র প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল আজিজ, কঞ্জারভেন্সী অফিসার মোঃ আনিসুর রহমান, জনসংযোগ কর্মকর্তা সরদার আবু তাহের, এসএনভি’র প্রকৌশল অ্যাডভাইজার সহিদুল ইসলাম, বিসিসি এ্যাভাইজার এস এ এম হুসাইন, প্রোগ্রাম অফিসার সাকের আহমেদসহ সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে কেসিসি মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, খুলনা মহানগরী এলাকায় স্বাস্থ্যস্মমত পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে খুলনা সিটি কর্পোরেশন মানব বর্জ্য শোধনাগার নির্মাণ করেছে। নগরবাসীর কল্যাণে আরো নতুন নতুন প্রকল্প বাস্তাবয়ন করা হবে।
তিনি বলেন, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মানববর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম গতিশীল করা হয়েছে। নগরীর পরিবেশ স্বাস্থ্যসম্মত রাখতে কেসিসি কর্তৃপক্ষ বদ্ধপরিকর। তিনি নগরীর বাড়ির মালিকদের প্রতিবছর অন্তত একবার সেপটিক ট্যাংক পরিস্কার করার আহবান জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।