পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) সম্মেলন আয়োজনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশন (সিপিএ) সম্মেলনকে আরও জাঁকজমকপূর্ণ করতে চায় বাংলাদেশ। সংস্থাটি সংসদীয় গণতন্ত্রকে সুসংহত করা, আইনের শাসন ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখা এবং জনগণের ক্ষমতায়ন ও কল্যাণ নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। সম্মেলন অনুষ্ঠানের আয়োজক সংস্থা জাতীয় সংসদকে বিভিন্ন ভাবে সাজিয়েছে।
জাতীয় সংসদের স্পিকার ও কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনের (সিপিএ) নির্বাহী কমিটি’র চেয়ারপার্সন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি ইনকিলাবকে বলেন, আগামী বুধবার ১লা নভেম্বর থেকে ৮ নভেম্বর সিপিএ›র ৬৩তম সম্মেলন বাংলাদেশে হচ্ছে। প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। বাংলাদেশ তার সক্ষমতা তুলে ধরতে প্রস্তুত। বাংলাদেশের জন্য এই আয়োজন অনন্য সম্মানের। এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হল- কন্টিনিউয়িং টু এনহ্যান্স দ্য হাই স্ট্যান্ডার্ডস অব পারফরম্যান্স অব পার্লামেন্টারিয়ানস। তিনি বলেন, সংস্থাটি সংসদীয় গণতন্ত্রকে সুসংহত করা, আইনের শাসন ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখা এবং জনগণের ক্ষমতায়ন ও কল্যাণ নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে।
জাতীয় সংসদ সচিবালয় থেকে জানা গেছে,১লা নভেম্বর থেকে ৮ নভেম্বর ঢাকায় সিপিএর ৬৩তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। বুধবার থেকে শুরু হলেও মূল সম্মেলনের উদ্বোধন হবে ৫ নভেম্বর। ওইদিন সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রী ও সম্মেলনের ভাইস প্যাট্রুন শেখ হাসিনা সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় মূল সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। পদাধিকারবলে সিপিএর চিফ প্যাট্রুন যুক্তরাজ্যের রানী এলিজাবেথ। তিনি সম্মেলন উপলক্ষে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠাবেন। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মূল সম্মেলনের শুভ সূচনা করবেন।
ঢাকায় কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারী অ্যাসোসিয়েশন (সিপিএ)৬৩তম সম্মেলন কমনওয়েলথভূক্ত ৫২টি রাষ্ট্রের জাতীয় পার্লামেন্ট ও প্রাদেশিক পার্লামেন্টসহ মোট ১৮০টি ব্রাঞ্চ সমন্বিত একটি ঐতিহ্যবাহী অ্যাসোসিয়েশন। পহেলা নভেম্বর থেকে ৮ নভেম্বর জাতীয় সংসদ ও সিপিএ’র যৌথ উদ্যোগে ঢাকায় সিপিএ’র ৬৩তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। দ্য গ্রেট বৃটেনের রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ সিপিএ’র প্যাট্রন। ২০১৭ সালের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাইস প্যাট্রন হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ৫ নভেম্বর সকাল সাড়ে ১০ টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় ৬৩তম সিপিসি’র উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভাপতিত্ব করবেন সিপিএ’র বর্তমান প্রেসিডেন্ট স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি। সিপিএ’র মূল সম্মেলন বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন (বিআইসিসি) কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে। অন্যান্য সভাগুলো হোটেল রেডিশন বøুতে অনুষ্ঠিত হবে। আরো জানানো হয়, এ পর্যন্ত ৪৪টি দেশসহ প্রায় ১৪৪টি সিপিএ ব্রাঞ্চ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবে। জাতীয় ও প্রাদেশিক সংসদের ৫৬ জন স্পিকার এবং ২৩ জন ডেপুটি স্পিকার ও সংসদ সদস্যসহ প্রায় ৫৫০ এর অধিক প্রতিনিধি সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন। সম্মেলনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে নির্বাহী কমিটির সভা, কমনওয়েলথ ওমেন পার্লামেন্ট রিস্টিয়ারিং কমিটির সভা, স্মল ব্রাঞ্চেস কনফারেন্স, বিভিন্ন সাব কমিটির সভা, রিজিওনাল গ্রæপমিটিং, জেনারেল এসেম্বলি ও ৮টি কর্মশালা রয়েছে। গণতন্ত্রকে সুসংহত করা, আইনের শাসন ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখা, জনগণের ক্ষমতায়ন ও কল্যাণ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্য নিয়ে সিপিএ কাজ করে। ডেমোক্রেসি, ডাইভারসিটি এন্ড ডেভেলপমেন্ট সিপিএ’র প্রতিপাদ্য। সিপিএ’র নয়টি রিজিয়ন রয়েছে। রিজিয়নগুলো হলো- আফ্রিকা, এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, বৃটিশ আইল্যান্ড ও মেডিটেরিনিয়ান, কানাডা, ক্যারিবিয়ান আমেরিকাসও আটলান্টিক, ভারত, প্যাসেফিক ও দক্ষিণপূর্ব-এশিয়া। ২০১৪ সালে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তিন বছরের জন্য সিপিএ নির্বাহী কমিটির প্রথম নারী ও প্রথম বাঙ্গালী চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হন।
এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হল- কন্টিনিউয়িং টু এনহ্যান্স দ্য হাই স্ট্যান্ডার্ডস অব পারফরম্যান্স অব পার্লামেন্টারিয়ানস। সম্মেলনে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল অংশ নেবে। সিপিএ সম্মেলনে ৯টি রিজিয়নের ৫২টি দেশের ১৮০টি জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, সংসদ সদস্যসহ ছয় শতাধিক প্রতিনিধি অংশ নেবেন। ইতিমধ্যে অর্ধশতাধিক স্পিকারসহ ৬০০-এর মতো প্রতিনিধি সম্মেলনে যোগ দিতে রেজিস্ট্রেশন করেছেন।
সম্মেলন উপলক্ষে মেলা : আইপিইউ সম্মেলনের মতো সিপিএ সম্মেলনেও বাংলাদেশি পণ্যের মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। দেশের রফতানিমুখী পণ্যগুলোতে বিদেশিদের আগ্রহী করতে এ মেলার আয়োজন থাকছে। এতে দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের পাশাপাশি হস্তশিল্প সামগ্রীকে প্রাধান্য দেয়া হবে। মেলায় সরকারি- বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে ।
সিপিএ চেয়ারপারসন ও স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী নিজেই প্রস্তুতির যাবতীয় কাজের তদারকি করছেন। সম্মেলনের ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বপ্রাপ্তদের প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করে কাজের অগ্রগতির খোঁজখবর নিয়েছেন এবং দ্রুত কাজ শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছেন। নিরাপত্তার বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারের বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। এক্ষেত্রে আইপিইউ সম্মেলনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। স্পিকার কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করে নিরাপত্তা ইস্যুতে নেয়া পদক্ষেপগুলো অবহিত করলে তারা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে স্পিকার জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে জাতীয় সংসদের স্পিকার ও কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনের (সিপিএ) নির্বাহী কমিটি’র চেয়ারপার্সন ড. শিরীন ও সিপিএ’র সেক্রেটারি জেনারেল আকবর খানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সিপিএ সম্মেলনকে সামনে রেখে আকবর খান গত শুক্রবার বাংলাদেশে এসেছেন। সম্মেলনের আয়োজনের প্রস্তুতির বিষয়ে আলোচনার জন্য তিনি সংসদ ভবনস্থ কার্যালয়ে সাক্ষাত করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।