বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ফাঁকা গুলি বর্ষণ ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। এসময় এক পক্ষ আরেক পক্ষের বাড়িঘর, অফিস ও বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ব্যপক লুটপাট চালিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি বর্ষণ করেছে। রোববার রাতে উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের চনপাড়া পূর্ণবাসন কেন্দ্রে ঘটে এ সংঘর্ষের ঘটনা। রাত সাড়ে ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলছিলো। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, দলীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চনপাড়া ইউনিয়ন (প্রস্তাবিত) এর আওয়ামী মহিলালীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য বিউটি আক্তার কুট্রির সঙ্গে বঙ্গবন্ধু যুব পরিষদের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছিলো। গত প্রায় এক মাস আগেও তাদের দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ফাঁকা গুলি বর্ষণ ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ওই সময় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়।
রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিউটি আক্তার কুট্রি সমর্থিত শাহাদাত নামে এক কর্মীকে চর-থাপ্পর মারে আনোয়ার হোসেন। এরপর বিষয়টি কায়েতপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জায়েদ আলী বিষয়টি মিমাংশা করে দিবেন বলে আশ^স্থ্য করেন। কিন্তু বিষয়টি কোন পক্ষই না মেনে ধারালো ও বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে এক পক্ষ আরেক পক্ষের উপর হামলা চালায়। শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, দোকানপাট, অফিস, বাড়িঘর ভাঙচুর, ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। এ সময় প্রায় ৩০ থেকে ৪০ রাউন্ড গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটে। এতে করে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। লোকজন ছোটাছুটি করতে শুরু করে। প্রায় ১০ থেকে ১৫টি দোকানঘর, অফিস ও বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের হাছান মুহুরী, মুর্শেদা, স্বপন, জুয়েল, ফারুক, রহিম, রুবেল, হাসান, মোজাহিদ, জনি, ইমাম হাসান, শাহজাহান, উজ্জলসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
খবর পেয়ে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেনের নেতৃত্বে বিপুল পরিমাণ পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালায়। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে গিয়ে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি বর্ষণ করা হয়। এলাকাবাসী অভিযোগ করে জানিয়েছেন, কয়েক দিন পর পরই তারা দুই গ্রুপ গুলাগুলি, হামলা ভাংচুর ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে। এতে আহত হচ্ছে সাধারন মানুষ থেকে শুরু করে পথচারীরাও। উভয় গ্রুপের লোকজনই একে অপরের সঙ্গে অপরাধ মুলক কর্মকান্ডে ব্যবহৃত হওয়ার জন্য সাধারন মানুষকে ডেকে নেয়। তাদের ডাকে না গেলেই নির্যাতন, হামলা মামলা শুরু হয়। এ থেকে রেহাই পেতে চাই চনপাড়াবাসী। নিরীহ ও সাধারন মানুষ তাদের দুই গ্রুপের হামলার আতঙ্কে থাকে সব সময়।
এ ব্যপারে বিউটি আক্তার কুট্রি জানায়, কোন কারন ছাড়াই শাহাদাত নামের ছেলেটিকে চর-থাপ্পর মারে আনোয়ার হোসেন। এর প্রতিবাদে বিচারও চাওয়া হয়েছে। বিচার চাওয়ায় আনোয়ার হোসেনসহ তার লোকজন হাতে পিস্তল হাতে নিয়ে তার লোকজনের উপর হামলা চালায় এবং বাড়িঘর, দোকানপাট ও আওয়ামীলীগ অফিসে ব্যপক ভাঙচুর করে।
অপরদিকে আনোয়ার হোসেন জানায়, বিউটি আক্তার কুট্রিসহ তার লোকজন অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আনোয়ার হোসেনের লোকজনের উপর হামলা চালিয়ে অন্তত ১০ থেকে ১২ জনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেছে। আর ওই হামলার কারনেই তারা পাল্টা হামলা চালিয়েছেন।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, ঘটনাস্থল অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। যারা এ ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে তাদের কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। পুলিশি অভিযান চলছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।