পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ফ্রিডম পার্টির ১১ জনের কারাদন্ড
আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর শেখ হাসিনা হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের পৃথক দুই মামলায় বঙ্গবন্ধুর খুনি খন্দকার আবদুর রশীদসহ ফ্রিডম পার্টির ১১ নেতাকর্মীকে কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত।
এর মধ্যে হত্যা চেষ্টার মামলায় ১১ আসামির প্রত্যেককে বিশ বছর করে কারাদন্ড এবং ্বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের মামলায় তাদের সবাইকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। গতকাল ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. জাহিদুল কবির এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, বঙ্গবন্ধুকে শেখ মুজিবুর রহমানকে স্ব-পরিবারে হত্যার ঘটনা আর তার শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। একই আসামিদের, একই ষড়যন্ত্রকারীদের পৃষ্ঠপোষকতায় শেখ হাসিনাকেও হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। এ হামলার ঘটনায় প্রথমে সাধারণ ডায়েরি করা হলেও পরে তা মামলায় রূপান্তর করা হয়। ওই এজাহার ছিল দুর্বল। কিন্তু মামলার তিন আসামি পরে আদালতের কাছে ঘটনার বিষয়ে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবদুল্লাহ আবু স্বস্তি প্রকাশ করে সাংবাদিকদের জানান, অনেক বাধা-বিপত্তির পেরিয়ে ২৮ বছর পরে এ মামলায় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। রায়ে বিচারক বলেছেন, দন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিরা আদালতে আত্মসমর্পণ করা কিংবা পুলিশের হাতে গেফতার হওয়ার সময় হতে তাদের সাজার মেয়াদ শুরু হবে।
রায় ঘোষণার পর আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুল্লাহ মাহমুদ হাসান জানান, তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন। এছাড়া খালাস পাওয়া হুমায়ুন কবির ওরফে কবিরের আইনজীবী এ এস এম গোলাম ফাত্তাহ এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
আদালতের পেশকার ইফতেখার হোসেন সোহাগ জানান, গতকাল সকালে প্রথমে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের ব্যারক ভবনের অস্থায়ী বিশেষ এজলাসে বসে হত্যাচেষ্টা মামলার রায় ঘোষণা করেন বিচারক। পরে বিকালে জনসন রোডে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত ভবনের দ্বিতীয় তলার এজলাস বসে বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের মামলার রায় ঘোষণা করেন।
দন্ডপ্রাপ্ত ১১ আসামি হলেন- বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল খন্দকার আবদুর রশীদ, মো. জাফর আহম্মদ, হুমায়ুন কবির ওরফে হুমায়ুন, মিজানুর রহমান, শাজাহান বালু, গাজী ইমাম হোসেন, খন্দকার আমিরুল ইসলাম কাজল, গোলাম সারোয়ার ওরফে মামুন, ফ্রিডম সোহেল, সৈয়দ নাজমুল মাকসুদ মুরাদ ও জর্জ মিয়া। এছাড়া অপরাধের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত না হওয়ায় আরেক আসামি হুমায়ুন কবির ওরফে কবিরকে দুই মামলাতেই বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালত।
দন্ডিত আসামিদের মধ্যে রশীদ, জাফর ও হুমায়ুন কবির ওরফে হুমায়ুন পলাতক। আর জামিনে থাকা শাজাহান বালুর জন্য বেশ কিছু সময় অপেক্ষার পরও তিনি না আসায় বিচারক তার অনুপস্থিতিতেই রায় ঘোষণা করেন। জামিনে থাকা মিজান, ইমাম হোসেন, কাজল রায়ের জন্য আদালতে উপস্থিত ছিলেন। কারাগারে থাকা মামুন, সোহেল, মুরাদ ও জর্জ মিয়াকেও হাজির করা হয়েছিল। রায়ের পর দন্ডপ্রাপ্তদের সবাইকে সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলা সুত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর শেখ হাসিনাকে ১৯৮৯ সালের ১০ অগাস্ট মধ্যরাতে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে হত্যা চেষ্টা চালায় আসামিরা। এসময় গুলি ও বোমা ছুড়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টা করা হয়। এ ঘটনায় ১৯৮৯ সালের ১১ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু ভবনের (বর্তমানে জাদুঘর) নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কনস্টেবল জহিরুল হক বাদী হয়ে মামলা করেন। পরে পুলিশ ঘটনার তদন্ত করে সিআইডির এএসপি খালেকুজ্জামান ১৯৯৭ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ফ্রিডম পার্টির ১২ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যাচেষ্টা ও বিষ্ফোরক আইনে দুটি অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ফ্রিডম পার্টির সদস্য কাজল ও কবিরের নেতৃত্বে ১০-১২ জনের একটি দল অতর্কিত গুলিবর্ষণ ও বোমা হামলা করে এবং হামলাকারীরা ‘কর্নেল ফারুক-রশিদ জিন্দাবাদ’ বলে শ্লোগান দিতে দিতে পালিয়ে যায়। ২০০৯ সালের ৫ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন বিচারক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।