পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারীদের হাতে শিক্ষক লাঞ্চিত হবার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে দফায় সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। এসময় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া সহ ক্যাম্পাসে ব্যাপক ভাংচুর করা হয়। গতকাল শনিবার বেলা ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত দফায় দফায় এই সংঘর্ষ চলে। ক্যাম্পাসে চরম উত্তোজনা বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক অনুষদ বিভাগের ডিন পদ থেকে ড. আব্দুল আলীমকে অপসারণ করা না পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারী সমিতি। পাবনা সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় তুচ্ছ ঘটনায় পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডীন ড. আবদুল আলীম কর্মচারীর হাতে লাঞ্চিত হন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী লিটনের কথা কাটাকাটি হয়। পরে শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপর হামলা চালায়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামসহ ৪/৫ জন আহত হয়। পরে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সংগঠিত হয়ে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করতে গেলে ক্যাম্পাসে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ। দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের প্রায় ২০ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে ৮ জনকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতরা হলেন, সেকশন অফিসার রফিকুল ইসলাম, তৌফিকুর রহমান সৈকত, সিনিয়র স্টোর কিপার জামসেদ হোসেন পলাশ, নিরাপত্তা প্রহরী লিটন হোসেন, জনি, বাংলা বিভাগের মাস্টার্স শেষপর্বের ছাত্র আবু জাফর, শামীম হোসেন ও সাইফুল ইসলাম। সংঘর্ষের সময় ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধু হল এবং প্রায় ৩০টি মোটরসাইকেল সহ ব্যাপক ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিদ্যালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সমিতির সভাপতি শামস সাদ ফকরুল জানান, শিক্ষকদের উস্কানীতে একদল শিক্ষার্থী এসে আমাদের কর্মকর্তাদের উপর হামলা চালায়। এ সময় কর্মকর্তা কর্মচারীরা বাধা দিতে গেলে তারা সংগঠিত হয়ে আবারও এসে আমাদের উপর হামলা করে। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। এ সময় তারা কর্মকর্তাদের প্রায় ৩০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এসময় আমাদের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা কর্মচারী আহত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে বসে সুরহা করার চেষ্টা করছি। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের অনেক সম্পদ নষ্ট করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তিনি আরো জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক অনুষদ বিভাগের ডিন পদ থেকে ড. আবদুল আলীমকে অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারী সমিতি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, শুক্রবার পাবিপ্রবির প্রথমবর্ষ ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ড. এম আবদুল আলীমের সাথে গেটের নিরাপত্তাকর্মিদের বাকবিতান্ডা হয়। এরই এক পর্যায়ে নিরাপত্তা কর্মিরা সংঘবদ্ধ হয়ে ওইদিন সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসে ড. আলীমের উপর হামলা চালিয়ে তাকে লাঞ্ছিত করে। এ ঘটনা ঐদিন রাতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা শিক্ষককে মারপিট ও লাঞ্ছিতের খবর জানতে পেরে শনিবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেয়। এ সময় কয়েকজন শিক্ষকও শিক্ষার্থীদের পাশে অবস্থান গ্রহণ করে। এ খবর পেয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা লাঠিসোটা নিয়ে অবস্থানকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় উভয় গ্রুপ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, ৩য় শ্রেণীর কর্মচারী হয়ে একজন সম্মানিত শিক্ষকের শরীরে হাত তুলছে, এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির হওয়া দাবী করছি। শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা এই আন্দোলন চালিয়ে যাব। আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়ার প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করছিলাম। কর্মচারীরা এ সময় আমাদের উপর হামলা করে। এ খবর পুরো ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করে।
এ ব্যাপারে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিদ্যালয়ের প্রক্টর আওয়াল কবির জয় বলেন, দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জরুরী বৈঠক আহবান করা হয়েছে। বৈঠকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত সাপেক্ষে যারা এই ঘটনায় জড়িত রয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে। বিচারের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা আজকের জন্যে কর্মসূচী স্থগিত করেছেন বলেও দাবী করেন প্রক্টর। সূত্র মতে, পেছন দরজা দিয়ে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরী পাওয়া কয়েকজন শিক্ষক এবং কর্মকর্তার কারণেই পাবিপ্রবি’র শিক্ষার পরিবেশই শুধু বিঘিœত হচ্ছে না। দীর্ঘ দিন ধরে নানা পদ্ধতিতে ভর্তি, নিয়োগ বাণিজ্য করে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। সূত্র মতে, পাবনা সদর আসন এমপি’র সুপারিশে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কয়েকজনের চাকুরী হয়েছে। তবে এই চাকুরী দিয়ে এম.পি গোলাম ফারুক প্রিন্স কারো কাছ থেকে কোনো অর্থ গ্রহণ করেছেন এমন কোনো খবর পাওয়া যায়নি। অপর দিকে, এম.পি’র নাম ভাঙ্গিয়ে যাদের বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিয়োগ দিয়েছেন (যাদের অধিকাংশই ওই পদে সিজিপিএ অনুসারে এবং অন্য মেধায় অযোগ্য) তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে অর্থ বলে অভিযোগ রয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যলয় নিয়োগ, ভর্তি বাণিজ্য, রিজার্ভ ফান্ডের টাকা কমিয়ে ফেলাসহ নানা দুর্নীতির তদন্ত আলোর মুখ দেখছে না। কয়েকটি তদন্ত অজানা কারণে মাঝ রাস্তায় থেমে আছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড করার ঘোষণা দিয়ে ভিসি আল নকীব চৌধুরী দুর্নীতির দূর্গ বন্ধ করতে পারেননি। উপরন্তু বিশ্ববিদ্যালয়টি দুর্নীতির দূর্গে পরিণত হয়েছে। এ বছর প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষায় (গত শুক্রবার) বিশেষ রুমে ডিভাইস দিয়ে পরীক্ষার বিষয়টি ধরে দিয়েছে ডিজিএফআই। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনোই কৃতত্ব নেই । মেধাবী পরীক্ষার্থীও অভিভাবকরা আশা করছেন, সরকার এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি সংক্রান্ত অন্যান্য পদ্ধতিতে করা দুর্নীতি অনিয়ম প্রতিরোধে খুব দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।