Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

ডোমারে মালটায় আলোকিত কৃষকের ঘর

| প্রকাশের সময় : ২৯ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নীলফামারী জেলা সংবাদদাতা : নীলফামারীর ডোমার উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল কাঁঠালতলীতে বানিজ্যিক ভাবে চাষ হচ্ছে উন্নত জাতের মালটা। খেতে সুস্বাদু হওয়ায় এখানকার মালটা ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছে।
জানা গেছে ডোমার উপজেলার ভোগডাবুড়ী ইউনিয়নের কাঁঠালতলী গ্রামের কৃষক এস এম আব্দুল্লাহ প্রায় ৬০ বিঘা জমির উপর ২০ বছর আগে পঞ্চনীল নামে একটি নার্সারি শুরু করেন । প্রথমে আম ও লিচু দিয়ে বাগান শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি বিভিন্ন ফল , ফুল ও ঔষধি গাছের চাষ শুরু করেন। বর্তমানে তার নার্সারিতে রয়েছে ৩৭ জাতের আম, ৭ জাতের লিচু, আপেল কুল, বাউকুল , পেঁপেঁ, লেবু , লটকন, কামরাঙ্গা, মিষ্টি তেঁতুল, কদবেল, মিষ্টি বেল,আনারস সহ বিভিন্ন ফলের গাছ। ঔষধি গাছের মধ্যে রয়েছে হরতকি,বহেড়া, ঘৃতকুমারী,শতমুলী,হাজারভানি, গুনিয়ারী, ড্রসেরা ও তুলশি গাছ। জবা, নীল ও কালো গোলাপ সহ রয়েছে বিভিন্ন ফুলের গাছ। এছাড়া এ্যাবোকাডো, গুয়েবানো, ড্রাগন , রামভুট্টান , আঞ্জুর সহ বেশ কয়েকটি বিদেশি ফলের গাছও রয়েছে তার নার্সারীতে। আবদুল্লাহ এসব ফল ও ফুলের চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পাওয়ার পর শুরু করেন মালটার চাষ। ১০/১২ বছর আগে ৫০টি মালটার চারা রোপন করেন নার্সারীতে। চারা রোপনের এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে গাছে ফল ধরে। এখন মৌসুমে একটা মালটা গাছে দেড় থেকে দু’মন করে মালটা ধরছে। তার বাগানের মালটার সুনাম রয়েছে এলাকা জুড়ে। অন্যান্য মালটার চেয়ে এই বাগানের মালটা খেতে সুস্বাদু এবং বাজারে প্রচুর চাহিদা রযেছে। কৃষক আবদুল্লার মালটার চাষে সাফল্য দেখে এখন অনেকেই মালটা চাষে আগ্রহী হচ্ছে।
এস,এম আব্দুলাহ বলেন, তার বাগানের মালটাগুলো বেশির ভাগই নাগপুরী, দার্জিলিং ও পাকিস্তানের। এই মালটার কোয়ালিটি খুবই ভালো। দুর-দুরান্ত থেকে মানুষ এখানে এসে মালটার চারা নিয়ে যায়। মালটা চাষ লাভজনক ও মালটা গাছের চারার চাহিদা থাকায় বানিজ্যিক ভাবে বিক্রির জন্য গত বছর বিদেশী উন্নতজাতের নাগপুরী, দার্জিলিং, মরক্কো, ভারত, পাকিস্তানী এবং বারী-১ জাতের আরো ৭শত মালটার চারা রোপন করি। এগুলোতে আগামী বছরে ফল ধরা শুরু করবে। তিনি জানান এখানকার মালটার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। দুর-দুরান্ত থেকে ফল বিক্রেতারা এসে বাগান থেকে মালটা নিয়ে যায়। মালটা তো মৌসুমে একবার আসে কিন্ত চারা বিক্রি হয় সারা বছর। চারা লাগানোর এক বছরের মধ্যে ফল আসায় এটা একটি লাভজনক ব্যবসা। তিনি জানান তার নার্সারীতে বিদেশী ৪ জাতের মালটার গাছ এবং উন্নতমানের চারা রয়েছে।
আ্দুল্লাহ বলেন তার বাগানে কোন কীটনাশক ব্যবহার করা হয় না। নিজস্ব উদ্ভাবিত প্রযুক্তিতে জৈব সার তৈরী করে গাছে দেয়া হয়। এখানকার মাটিতে উপরে বালু এবং নিচে পাথর রয়েছে, তাই এখানকার মাটি মালটা চাষের জন্য উপযোগী। তাই শিক্ষিত বেকার যুবকরা চাকরী পিছনে না ঘরে জমি লীজ নিয়ে মালটা চাষ করলে স্বাবলম্বী হতে পারবে বলে তিনি জানান। আগামীতে মালটার পাশাপাশি মুছাম্মি ফলও বানিজ্যিক ভাবে চাষ করার পরিকল্পনা রয়েছে আবদুল্লার। মুছাম্মি মালটার চেয়েও খেতে সুস্বাদু এবং মিষ্টি। পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি গাছ লাগিয়ে ভালো ফলন পেয়েছে বলে তিনি জানান।
ডোমার উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জাফর ইকবাল বলেন, ডোমারে আব্দুলাহর মালটা বাগানে প্রচুর মালটা ধরেছে। আমরা সরকারীভাবেও তাকে সহযোগীতা করছি এবং উৎসাহ দিচ্ছি। ডোমারে মালটা চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কৃষক


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ