Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সাভারে কেমিস্ট ও কবিরাজ ছাড়াই তৈরি হচ্ছে সর্বরোগের ঔষধ

সেলিম আহমেদ, সাভার থেকে | প্রকাশের সময় : ২৫ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ঢাকার সাভার পৌর এলাকায় গড়ে উঠা একটি আয়ুর্বেদীক ঔষধ তৈরীর কারখানায় মাননিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা ও কবিরাজ ছাড়াই শিশুদের দিয়ে তৈরী করা হচ্ছে সর্বরোগের ঔষধ। বিএসটিআই, ড্রাগ এবং নারকোটিকের পারমিশন নিয়ে ঔষধ প্রস্তুত করে বাজারজাত করার নিয়ম থাকলেও শুধু ড্রাগ লাইসেন্স দিয়ে ২৭ ধরনের ঔষধ প্রস্তুত করে বাজারজাত করছে এফ.এস ফার্মাসিটিক্যালস কর্তৃপক্ষ। অতচ অনুমোদন রয়েছে ৭ ধরনের ঔষধ তৈরীর।
সরেজমিনে পৌর এলাকার ভাটপাড়া মহল্লার বি-৭/৮, হাউজিং সোসাইটিতে গিয়ে দেখা যায় টিনসেড একটি ভবনে সকলের অগোচরে ‘এফ.এস ফার্মাসিটিক্যালস’ কারখানায় তৈরী হচ্ছে ঔষধ। অথচ কারখানার কোন সাইনবোর্ড ব্যবহার করা হয়নি। কারখানায় কাজ করছে ১৪/১৫ বছরের শিশুরা। এ কারখানায় গ্যাস্টিক, আলসার, কাশি, যৌন উত্তেজন, শক্তিবর্ধক ঔষধসহ সর্বরোগের ঔধষ তৈরী করা হচ্ছে। এফ.এস ফার্মাসিটিক্যালস কারখানার ব্যবস্থাপক মেহেদী হাসান সুমন জানান, তাদের কারখানায় ফেমগার্ড, ভিটো কেওর, গ্যাস্টো সেভ, এফএস-এলকুলি, হাইপোজাইম-এইচ, বাসোভাসসহ ২৭ ধরনের ঔষধ প্রস্তুত করা হয়। তবে ঔষধ তৈরীতে তাদের ড্রাগ লাইসেন্স ও সাভার পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্স রয়েছে।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুযায়ী ৭টি ঔষধ তৈরীর অনুমোদন রয়েছে এফ.এস ফার্মাসিটিক্যালসের। কিন্তু তারা তৈরী করছেন ২৭ ধরনের ঔষধ। এছাড়া ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ইস্যু করা লাইসেন্সে মাননিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো: আহসান উল্লাহ ও কবিরাজ মো: শফিকুল ইসলামের নাম থাকলেও গত ৭/৮ মাস ধরে তাদের কেউ দেখেনি। কৌশলে কারখানার মাননিয়ন্ত্রণ কক্ষে গিয়ে দেখা যায় মাকড়সার বাসা, যখন কোন অভিযোগ পেয়ে ঔষধ পরিদপ্তরের কর্মকর্তারা তদন্তে আসেন তখন মাননিয়ন্ত্রণ কোন কর্মকর্তাকে এনে বসিয়ে রাখেন, এমনটি জানালেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী শ্রমিক। তবে কারখানার মাননিয়ন্ত্রন কর্মকর্তা মো: আহসান উল্লাহর খোঁজ করতে গিয়ে কথা হয় তার বাবা সাভার প্রাণী সম্পদ অফিসের ফিল্ড অফিসার শহিদুল্লাহ কায়সারের সাথে। তিনি বলেন, কারখানার লাইসেন্সের আবেদনের সময় আমার ছেলের নাম দেয়া হয়েছিল। তাছাড়া আমিই তদবির করে লাইসেন্স পাইয়ে দিয়েছিলাম। তবে কারখানাটির মালিক শরিফুল ইসলামের সাথে কথা বলতে চাইলে তারসাথে যোগাযোগ না করিয়ে বাড়ির মালিক মো: শাহজাহানকে ডেকে আনেন ব্যবস্থাপক মেহেদী। শাহজাহান এ প্রতিবেদককে সংবাদ প্রকাশ না করে আপোষের প্রস্তাব দেন।
এদিকে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আমজাদুল হক জানান, আয়ুর্বেদীক কারখানা চালু ও উৎপাদনে যেতে হলে ট্রেড লাইসেন্স, বিএসটিআই, ড্রাগ এবং নারকোটিকের পারমিশন লাগবে। কারখানায় সার্বক্ষনিক কেমিষ্টও থাকতে হবে। তিনি বলেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে কিভাবে কারখানা চালাচ্ছে তা সেনেটারী ইন্সপেক্টরকে পাঠিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিষয়টি সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ রাসেল হাসানকে অবহিত করলে তিনি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঔষধ

২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
১৪ ডিসেম্বর, ২০১৮

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ