Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

পাকিস্তান সমর্থকদের সমর্থন ভাবিয়ে তুলেছে কোলকাতাকে

প্রকাশের সময় : ১৮ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শাশীম চৌধুরী ( কোলকাতা) থেকে : কোলকাতা থেকে ২ ঘণ্টা ২৫ মিনিটের ফ্লাইটে আকাশ পথে ব্যাঙ্গালুরু বিমানবন্দরে নেমেই অন্য এক ভারতকে দেখতে হলো। বিমানবন্দর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে শহরটি, বেশ সাজানো গোছানো। বিমানবন্দর থেকেই স্বাগত ‘ওয়েলকাম আইটি সিটি।’ ব্যয়বহুল হলেও উন্নত চিকিৎসা সেবা নিতে আসে এখানে উপমহাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন। ব্যাঙ্গালুরুর এই পরিচয়টি অনেক পুরোনো। শুধু চিকিৎসা সেবায়ই অনন্য নয়, ডিজিটাল ভারতের প্রধান তত্ত¡টিও ধারণ করছে ব্যাঙ্গালুরু। শহরটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য ইনফরমেশন টেকনোলোজি। পুরো শহরটিই যেনো ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের আওতায়। সাধারণ মানের হোটেলে পর্যন্ত বিনে পয়সায় ওয়াইফাই ইন্টারনেট সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। এই আইটি সিটিতে এসেও পাওয়া গেল পাকিস্তান ক্রিকেট সমর্থক! বিমানবন্দর থেকে ট্যাক্সিতে করে ব্যাঙ্গালুরু শহরে আসার পথে গল্পের ছলে নূর নামের বয়স্ক ট্যাক্সিচালক নিজেই পাকিস্তানের সমর্থক। ভারত, পাকিস্তানের ম্যাচে নাকি তার সমর্থন থাকবে পাকিস্তানের পক্ষে। ৭০ বছরের এই বৃদ্ধেও জন্ম এখানেই, তারপরও তিনি ভারত ক্রিকেট দলের সমর্থক হতে পারছেন না।
ইডেনে বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচে অন্ততঃ ২০ হাজার পাকিস্তান সমর্থকের উপস্থিতি দেখে কোলকাতার মিডিয়া করেছে বিস্ময় প্রকাশ। গতকাল কোলকাতা থেকে প্রকাশিত অধিকাংশ দৈনিকে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের ম্যাচ রিপোর্ট থেকে বড় হয়েছে আফ্রিদিদের সমর্থকদের নিউজ। দৈনিক আনন্দ বাজারের শিরোনাম ‘মহাযুদ্ধের আগে ইডেনের সমর্থন বোনাস পেলেন আফ্রিদিরা’। ইডেন কেন, ভারতের কোনো মাঠে নাকি পাকিস্তানের পক্ষে এত সমর্থককে দেখা যায়নি কখনো, রিপোর্টে তা লিখেছেন প্রতিবেদক। পাকিস্তান ক্রিকেট দলের টিম সং ‘দিল দিল পাকিস্তান’ এর সঙ্গে গ্যালারিতে একসঙ্গে পাকিস্তান সমর্থকদের কণ্ঠ মেলানো দেখেও বিস্ময় প্রকাশ করেছে কোলকাতার সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিকটি। দৈনিক বর্তমানের শিরোনাম ‘বাংলাদেশ নয়, ইডেন গলা ফাটাল পাকিস্তানের জন্য।’ ভারতের একটি প্রভাবশালী ইংরেজী দৈনিকের শিরোনাম ‘ইঁস শহীদ আফ্রিদি’স ওয়ে টু উইন ইডেন গার্ডেনস।’
ধর্মশালায় পা পিছলে আহত হয়েও ইডেনে বিসিবি’র পরিচালক হানিফ ভুঁইয়া হুইল চেয়ারে করে এসেছেন ইডেনে বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ দেখতে, তা নিয়ে কম প্রশংসা করেনি আনন্দ বাজার। আবার পাকিস্তান সমর্থকদের সঙ্গে পাকিস্তানের পতাকাকে সামনে নিয়ে বাংলাদেশের গায়ক শফিক তুহিনকে দেখেও বিস্ময় প্রকাশ করেছে ওই পত্রিকাটি। ওই পত্রিকায় পাকিস্তান সমর্থকদের সঙ্গে শফিক তুহিনের ছবিটিও যে হয়েছে ছাপা।
জানেন ইডেনে কখনো হারেনি পাকিস্তান, বাংলাদেশের বিপক্ষে জয়ের পর এমন তথ্য দিয়েই ইডেনকে পাকিস্তানের পয়মন্ত ভেন্যু বলে উল্লেখ করেছেন স্পোর্টস স্টারের প্রিন্সিপাল করসপন্ডেন্ট অমিতাভ দাস। ইডেনে খেলতে এসে দর্শকের সমর্থনে পাকিস্তান যে ছন্দ ফিরে পাবে, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া সাক্ষাতকারে লিটল মাস্টার সুনীল গাভাস্কার এমন ভবিষ্যতদ্বানী করেছিলেন ১৫ মার্চ, বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচের ২ দিন আগে! এই ইডেনে আগামীকাল পাক-ভারতের লড়াই নিয়ে তাই এখন থেকেই দুর্ভাবনায় ভারত মিডিয়া। বাংলাদেশের বিপক্ষে সমর্থন দিতে আসা পাকিস্তান সমর্থকদের অনেকেই পাক-ভারত ম্যাচ দেখতে আসবে ইডেনে, ভারতীয় হয়েও ভারতের বিপক্ষে সমর্থন দিবে তারা? এটাই যে ভাবিয়ে তুলেছে তাদের।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাকিস্তান সমর্থকদের সমর্থন ভাবিয়ে তুলেছে কোলকাতাকে
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ