মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুন জেটলির কঠোর সমালোচনা করে প্রখ্যাত আইনজীবী ও সাবেক আইনমন্ত্রী রাম জেঠমালানি বলেছেন, অরুণ জেটলি সবচেয়ে বড় হতাশাবাদী। ভারতের অর্থমন্ত্রী হিসেবে অরুণ জেটলি জনগণকে দেওয়া মোদিীসরকারের অঙ্গীকার পূরণে কিছুই করেননি। বিদেশের ব্যাংকগুলোতে রাখা ৯০ লাখ কোটি রুপি দেশে ফিরিয়ে আনতে মোদি সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। গতকাল টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জেঠমালানি বলেন, জেটলি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, তিনি ভারতের প্রতিটি দরিদ্র মানুষের বাড়িতে ১৫ লাখ রুপি করে দেবেন। জেঠমালানি প্রশ্ন তোলেন, এই প্রতিশ্রুতির কী হলো?
জেঠমালানি আরো বলেন, অরুন জেটলির বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের আম আদমি নেতাদের অভিযোগের যথেষ্ট ভিত্তি রয়েছে। দিল্লী ও ডিস্ট্রিক্ট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনে এই আর্থিক অনিয়ম হয়েছে যখন এই বিজেপি নেতা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন। জেটলি এর আগে মিডিয়াকে বলেছিলেন এসব অভিযোগগের ভিত্তি নেই বরং এটা বিরোধীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
অর্থমন্ত্রী তার বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা ও ভিত্তিহীন’ অভিযোগ করায় দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে মানহানির জন্য ফৌজদারি ও সিভিল মামলা দায়ের করেছেন। দিল্লী হাইকোর্ট ১০ কোটি রুপির মানহানির মামলায় কেজরিওয়াল ও এএপি’র অপর ৫ নেতার বিরুদ্ধে নোটিশ ইস্যু করে এবং ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জবাব দেয়ার নির্দেশ দেয়। এই মামলায় কেজরিওয়ালের আইনজীবী হলেন জেঠমালানি।
জেঠমালানি বলেন, ২০০৮ সালে জার্মান সরকার বলেছিল যেকোনো দেশ যদি অনুরোধ করে তাহলে লিচটেনস্টেইন ব্যাংকের ১ হাজার ৩ শো গ্রাহকের নাম তাদের জানাতে তারা রাজী। একজন সাবেক ব্যাংক কর্মী এই নামগুলো দিয়েছিলেন। এই তালিকায় কোনো রাজনীতিক নেই। জেঠমালানি বলেন, আমি সেখানে যাই এবং জার্মানিরা আমাকে বলে যে, ভারত সরকার কোনো অনুরোধ জানায়নি। আগের সরকারও জানায়নি, এই সরকারও জানায়নি। এই ক্ষেত্রে উভয় সরকারেরই দোষ রয়েছে।
শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মোতাবেক সরকার চিঠিচালাচালির একগুচ্ছ চিঠি আমাকে প্রদান করে। এতে ১৭টি চিঠি ছিল। কিন্তু এসব চিঠিতে লেখকদের নাম ও ঠিকানাগুলো অমোচনীয় কালি দিয়ে ব্লাকআউট করে ফেলা হয় বলে উল্লেখ করেন জেঠমালানি। তিনি বলেন, এসব চিঠির মধ্যে ছিল সৎ করদাতাদের জন্য দ্বৈত কর এড়ানোর চুক্তিও। অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, চিঠিগুলো হস্তান্তরের সময় আন্তর্জাতিক রীতিনীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নামগুলো উহ্য রাখা হয়েছে।
বিজয় মাল্যর কাছ থেকে ঋণের প্রতিটি পয়সা উদ্ধার করা হবে
এদিকে, দেশ থেকে বিজয় মাল্যর পলায়নকে কেন্দ্র করে বিতর্কের প্রেক্ষিতে অর্থমন্ত্রী অরুন জেটলি গতকাল বলেছেন, তাকে দেওয়া ঋণের প্রতি পয়সা ব্যাংকগুলো উদ্ধার করবে এবং আইন ভঙ্গকারী এই মদ ব্যবসায়ী যেখানেই থাকুক না কেন তদন্তকারী সংস্থাগুলো তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিবে।
লিকার ব্যারন মাল্য দীর্ঘদিন ধরে বসে থাকা কিংফিশার এয়ারলাইন্স বিএসবি’র প্রমোটার। গত ২ মার্চ তিনি ভারত ত্যাগ করেন। ধারণা করা হচ্ছে যে, তিনি লন্ডন চলে গেছেন। তার ফার্মগুলো থেকে ৯ হাজার কোটি রুপির বেশি অর্থ উদ্ধারে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কয়েকটি ব্যাংকের আবেদনের উপর সুপ্রিম কোর্টের শুনানির কয়েকদিন আগে তিনি ভারত ত্যাগ করেন।
জেটলি বলেন, মাল্যর ঘটনা খুবই পরিষ্কার। সে আইন ভঙ্গ করেছে কী না সে বিষয়ে ট্যাক্সেশন ডিপার্টমেন্ট বা তদন্ত সংস্থাসহ প্রতিটি সরকারি সংস্থাই এ ব্যাপারে কাজ করছে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো কঠোর ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে। তার কাছ থেকে প্রতিটি পয়সা তারা উদ্ধার করতে যাচ্ছে।
মাল্যর কাছ থেকে অর্থ উদ্ধারে সরকার কী করছে এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী ইন্ডিয়া টুডেকে একথা বলেন। তিনি আরও বলেন, সরকার স্টিল, টেক্সটাইল, হাইওয়ে ও অবকাঠামোর মতো সেক্টরগুলোর সমস্যাগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। এসব সেক্টরে অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। যা হোক জেটলি বলেন, উদ্বেগের প্রকৃত বিষয় এসব ঘটনার সঙ্গে ব্যক্তিবিশেষের অনিয়ম জড়িত।
দ্বিতীয় ক্যাটাগরি হচ্ছে যেখানে ব্যক্তিবিশেষকে বিপুল পরিমাণ ঋণ দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে কিছু লোক অনিয়ম করেছে। তাদের হয়ত পর্যাপ্ত আমানত ছিল না, যা উদ্বেগের বিষয়। সত্যিকারের উদ্বেগ হচ্ছে আইনি দায় ছাড়াও নীতি ও নৈতিকতারও বিষয় রয়েছে।
তিনি বলেন, মাল্যর ঘটনার মতো ভারতের ব্যাংকিং ও প্রাইভেট সেক্টরে অনেক বাজে লোকের নাম রয়েছে। আমরা যদি এর প্রতিকার করতে না পারি তাহলে ভবিষ্যতের জন্য এটা বিপজ্জনক হবে।
তিনি আরও বলেন, সরকারের আশু করণীয় হচ্ছে পাবলিক সেক্টরকে এটা নিশ্চিত করা যে ব্যাংকগুলো শক্তিশালী অবস্থায় রয়েছে। এই কারণে আমি ব্যাংকগুলোতে বাড়তি পুঁজির যোগান দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। সূত্র : ইকোনমিক টাইমস, টাইমস অব ইন্ডিয়া।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।