নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শামীম চৌধুরী (ব্যাঙ্গালুরু) ভারত থেকে : ২০১৫ বিশ্বকাপের সৌম্যর সঙ্গে চলমান টি-২০ বিশ্বকাপের সৌম্যকে মেলানো যাচ্ছে না। তামীমের সঙ্গে পার্টনার হয়ে তামীমের ছায়ায় বেঁড়ে ওঠা সৌম্য তামীমকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন ২০১৫ বিশ্বকাপে। প্রতিটি ম্যাচে বাংলাদেশ দলের আক্রমণাত্মক শুরুর নেপথ্যে এই তরুণ বাঁ হাতি। শুরুতে দলের বিধ্বস্ত চেহারায়ও হতভম্ব হননি এই বাঁ হাতি। বরং প্রতিপক্ষের মনোবল ভেঙে দিতে ভয়ংকর শুরু করেছেন প্রতিটি ম্যাচেই। বিশ্বকাপই শুধু নয়, গত বছর ওয়ানডে ম্যাচে ৬৭২ রানে (গড় ৫৭.৬৯) নিজেকে বিশ্বমানে উন্নীত করা সৌম্যকে টি-২০ বিশ্বকাপে সেভাবে চেনা যাচ্ছে না। বাংলাদেশের হয়ে যাওয়া ৫ ম্যাচে সৌম্যর ৫টি ইনিংস ১৫, ২০, ১২ এবং ০! আউটগুলোও হতাশ করছে। গত পরশু মোহাম্মদ আমিরের তৃতীয় বলটি অবিশ্বাস্য ডেলিভারী ছিল, তা বলা যাবে না। তবে ওই লেন্থ ডেলিভারীতে সৌম্য লাইন মিস করে হয়েছেন বোল্ড। ইনিংসের তৃতীয় বলে সৌম্যর ওই আউটটি ব্যাকফুটে নামিয়ে এনেছে বাংলাদেশকে।
ওয়ানডেতে শটস খেলতে পারেন, সাইড শটে বিশেষ পারদর্শী বলেই টি-২০তে সৌম্যকে আরো কার্যকরী ব্যাটসম্যান মনে করেছে ক্রিকেট বিশ্লেষকরা। কিন্তু সংক্ষিপ্ত ভার্সনের ক্রিকেটে সৌম্যকে বড্ড বেমানান মনে হচ্ছে। সর্বশেষ এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৪৮ রানের ইনিংস ছাড়া বলার মতো ইনিংস নেই একটিও। এ বছরে ১৩টি টি-২০ ইনিংসে সর্বসাকূল্যে রান তার ২২৭ (গড় ১৭.৪৬)!
ফর্মে ফেরা জরুরী, তার তাগিদ অনুভব করছেন সৌম্য নিজেও। সুপার টেনের অবশিস্ট ম্যাচগুলোতে ফর্মে ফিরে আসতে সংকল্পবদ্ধ সাতক্ষীরার এই ছেলেটিÑ ‘ব্যক্তিগত ফর্ম নিজের কাছে, সময় একটু খারাপ যাচ্ছে। চেষ্টা করছি ফর্মে ফিরতে। অনুশীলনে বাড়তি সময় দিচ্ছি। ভুলগুলো কোথায় হচ্ছে, বের করার চেষ্টা করছি। আশা করি সামনের ম্যাচগুলোয় রান পাব।’
ভুল শুধরে নিজেকে ফিরে পেতে ইতিবাচক চিন্তা করছেন। নিজের ভাল ভাল ইনিংসগুলোর ভিডিও দেখছেন বলে জানিয়েছেন সৌম্যÑ ‘অনেকে হার্ডওয়ার্ক করে, অনেকে চিন্তা করে নিজেকে ফিরে পায়। কোনটা করা উচিৎ, আমিও সেটা বোঝার চেষ্টা করছি। এই যেমন ভালো সময়ের ভিডিও দেখছি। যে সব ভালো ইনিংস খেলেছি, তা দেখে এখনকার পার্থক্যটা বের করার চেষ্টা করছি।’
২০১২ সালে অনুষ্ঠিত এশিয়া অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটে কাতারের বিপক্ষে ২০৯ রানের ওই ইনিংসে স্বপ্ন দেখা শুরু, ওই ইনিংসের ভিডিও সঙ্গে থাকছে তার। ভিডিওতে সেই ইনিংস দেখে ফর্মে ফেরার টনিক পেতে চান সৌম্যÑ ‘সব ভালো ইনিংসের ভিডিও দেখছি। যেমন অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে যে ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলাম, তার ভিডিও পর্যন্ত দেখছি। ওই ভাল ইনিংসগুলো কেমন ছিল বা এখন কেমন হচ্ছে, সেগুলো বোঝার চেষ্টা করছি।’
ইডেনে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের অনেকের জন্য ম্যাচটি নুতন হলেও ইডেনে খেলার অতীত অভিজ্ঞতা কিন্তু আছে সৌম্য সরকারের। বয়সভিত্তিক দলের হয়ে পশ্চিমবঙ্গ সফরে সিবিএ’র বিপক্ষে ইডেনে একটি ম্যাচে সেঞ্চুরি পর্যন্ত আছে তার। ইডেনে দ্বিতীয় ম্যচে রানহীন কেটে যাওয়ায় তাই নিজের উপর বিরক্ত হচ্ছেন সৌম্যÑ ‘এখানে আগে একটি ম্যাচই খেলেছিলাম সিএবি দলের বিপক্ষে। ১২৯ রানের ইনিংস খেলেছিলাম। ওইটাই আমি ভেবে নিয়েছিলাম যে আমার লাকি গ্রাউন্ড, হয়ত কামব্যাক করতে পারব। কিন্তু পারিনি।’
এশিয়া কাপে ফাইনালিস্ট বাংলাদেশ। টি-২০ বিশ্বকাপের প্রথম পর্বের তিনটি ম্যাচেও দারুন ছন্দে কেটেছে বাংলাদেশ দলের। অথচ যে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে, টি-২০ মিলিয়ে টানা ৫ ম্যাচের সব ক’টিতে ছিল জয়, সেই পাকিস্তানের বিপক্ষে ৬ষ্ঠ মোকাবেলায় বিপর্যস্ত বাংলাদেশ। পাকিস্তানের কাছে ৫৫ রানে হেরে সেমি’র পথটি কঠিন হয়ে গেছে বাংলাদেশ দলের। সামনে অস্ট্রেলিয়া, ভারত, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে হবে বাংলাদেশকে। তবে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওই হারটি মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে নুতন উদ্যমে ফিরবে বাংলাদেশ, খেলবে টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনাল, এমনটাই প্রত্যাশা করছেন সৌম্য সরকারÑ ‘টি-২০ বিশ্বকাপে এটা ছিল আমাদের চতুর্থ ম্যাচ। আগের তিনটি ম্যাচে আমরা জিতেছি। চার নম্বর ম্যাচে হারতেই পারি। একটা ম্যাচ খারাপ যেতেই পারে। পরের তিনটি ম্যাচে আমরা অবশ্যই চেষ্টা করব ঘুরে দাঁড়াতে। অবশ্যই সেমিফাইনালে যাওয়াই লক্ষ্য আমাদের।’ তাহলে তো সৌম্যকে ফিরে পেতে হবে সেই চেনা ছন্দে।
ইডেনের দু:সহ স্মৃতি তাড়িয়ে ব্যাঙ্গালুরুতে দারুনভাবে ফেরার প্রত্যয় মাশরাফির কণ্ঠেও। গতকাল বাংলাদেশ থেকে টি-২০ বিশ্বকাপ কভার করতে আসা একদল সাংবাদিকদের সঙ্গে একই ফ্লাইটে ব্যাঙ্গালুরু আসার পথে সে কথাই বলেছেন বাংলাদেশ অধিনায়কÑ ‘সেমি-ফাইনালের আশা ছাড়ার প্রশ্নই ওঠে না। ওই ম্যাচের হতাশা আমরা কলকাতায়ই ফেলে যাচ্ছি। আশা করি বেঙ্গালুরুতে ভালো করতে পারব। টিম ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজনও আশার হাল ছাড়ছেন নাÑ পাশ থেকে যোগ করলেন, ‘এই গ্রæপ নিয়ে আসলে শেষ কথা বলে কিছু নেই। যে কোনো দল যে কাউকে হারাতে পারে। অনেক হিসাব নিকাশের বাকি আছে এখনও। নিউ জিল্যান্ড ১২৬ রান করার পরও ভারত এভাবে হারবে, কে ভেবেছিল। আমরা হয়ত আরেকটু রান কম দিলে আর নিজেরা কিছু রান বেশি করলে আরও ভালো হতো। তবে এই গ্রæপে অনেক নাটকীয়তার বাকি আছে এখনও।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।