নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
এশিয়া হকির সেরা এখন ভারত। হিরো এশিয়া কাপের শিরোপা জিতে তৃতীয়বারের মতো টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কৃতিত্ব দেখালো তারা। গতকাল মওলানা ভাসানী জাতীয় হকি স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের ফাইনালে ভারত ২-১ গোলে মালয়েশিয়াকে হারিয়ে অপরাজিত থেকেই সেরার খেতাব জিতে নেয়। বিজয়ীদের পক্ষে রমনদ্বীপ সিং ও লালিত উপাধ্যায় দু’টি গোল করেন। মালয়েশিয়ার হয়ে এক গোল শোধ দেন শাহরিল সাবাহ। এর আগে বিকাল ৩টায় একই ভেন্যুতে স্থান নির্ধারনী ম্যাচে পাকিস্তান হারায় দক্ষিণ কোরিয়াকে।
কাল ফাইনালটি হয়েছে ফাইনালের মতই। ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দু’দল আক্রমণাতœক হকি খেললেও অপেক্ষাকৃত বেশী প্রাধান্য ছিল ভারতেরই। তবে দু’গোলে পিছিয়ে পড়ার পর মালয়েশিয়া ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে আক্রমণাতœক হয়ে উঠলে ম্যাচটি উপভোগ্য হয়। ফাইনালের প্রায় একপেশে প্রথমার্ধে মালয়েশিয়াকে হতাশ করে এগিয়ে যায় ভারত।। ম্যাচের তিন মিনিটেই গোল পায় তারা। এসময় ডানদিক থেকে সুনীলের হিটে প্লেসিং করেছিলেন রামানদিপ সিং। কিন্তু বল পোষ্টে লেগে ফিরে আসে। ওপেন নেটে ফিরতি শটে বল জালে জড়ান এই ফরোয়ার্ড (১-০)। এগিয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয় গোল পেতে মরিয়া হয়ে আক্রমণ চালায় ভারত। যদিও ব্যবধান বাড়াতে তাদের অপেক্ষায় থাকতে হয় প্রায় ২৫ মিনিট। ধারাবহিক আক্রমণের মুখে ম্যাচের ২৮ মিনিটে দারুন এক গোল করে ব্যবধান বাড়ায় ভারতীয়রা। সুনীলের দারুন এক রিভারসুইপে গোল করেন ললিত উপাধ্যায় (২-০)। চতুর্থ কোয়ার্টারে এসে ম্যাচে ফেরার আপ্রান চেষ্টা করে মালয়েশিয়া। ৫০ মিনিটে ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিতও দেয় তারা। সাবাহ শাহরিলের দারুন এক গোলে ব্যবধান কিছুটা কমায় টুর্নামেন্টের আগের আসরের স্বাগতিকরা (১-২)। এরপর তারা মরিয়া হয়ে লড়াই করে সমতায় ফিরতে। সুযোগও পেয়েছিলো মালয়েশিয়া। ম্যাচের ৫৬ মিনিটে পেনাল্টি কর্ণার পেলে মালয়েশিয়া সামনে গোল শোধের দারুন এক সুযোগ আসে। কিন্তু শারি ফয়সালের নেয়া পেনাল্টি কর্ণারের শটটি বাইরে চলে গেলে আশার প্রদীপ নিভে যায় তাদের। ম্যাচের শেষ তিন মিনিট গোলরক্ষককে উপরে উঠিয়ে দিয়ে আক্রমনের শক্তি বাড়িয়েও শেষ রক্ষা হয়নি মালয়েশিয়ার। তাই শেষ পর্যন্ত ভারতের কাছে ২-১ গোলে হেরে প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠা দলটিকে রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়।
বলা যায় টুর্নামেন্টের শুরু থেকে শেষ অবদি দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়েছে ভারত। তাই শিরোপা ওঠেছে যোগ্য দলের হাতেই। গ্রæপ পর্বে তারা ৫-১ গোলে জাপানকে, ৭-০ ব্যবধানে বাংলাদেশকে এবং ৩-১ গোলে পাকিস্তানকে হারিয়ে গ্রæপসেরা হয়। সুপার ফোরে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করলেও ৬-২ গোলে মালয়েশিয়াকে এবং ৪-০ গোলে পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে উঠে। এশিয়া কাপের আগের নয় আসরের সাতটিতেই ফাইনাল খেলেছিলো ভারত। শিরোপা জিতেছে ২০০৩ ও ২০০৭ সালে। এবার নিয়ে অষ্টম বারের মতো ফাইনালে উঠে আগামী বিশ্বকাপের স্বাগতিকররা। অন্যদিকে আগের দিন দক্ষিন কোরিয়াকে বিদায় করে প্রথমবারের মতো ফাইনালে জায়গা করে নিলেও দশম এশিয়া কাপকে স্মরণীয় করে রাখতে পারেনি মালয়েশিয়া।
টুর্নামেন্টের সেরা উদীয়মান খেলোয়াড় নির্বাচিত হন বাংলাদেশের আরশাদ হোসেন। সেরা গোলরক্ষকের পুরষ্কার পান ভারতের চিকতে আকাশ। সর্বোচ্চ গোলদাতা হন মালয়েশিয়ার ফয়জাল শারি ও ভারতের হারমানপ্রীত সিং। টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পান মালয়েশিয়ার ফয়জাল শারি। এছাড়া টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় মালয়েশিয়ার ফয়জাল শারিকে ক্রেস্ট দিয়ে সন্মানিত করে বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্টস কমিউনিটি (বিএসজেসি)। ফাইনাল শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। এ সময় যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার এমপি, উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় এমপি, হকি ফেডারেশনের সভাপতি ও বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল আবু এসরার, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাদেক ও এশিয়ান হকি ফেডারেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তৈয়ব ইকরামসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে স্থান নির্ধারনী ম্যাচে পাকিস্তান ৬-৩ গোলে দক্ষিণ কোরিয়াকে হারিয়ে তৃতীয়স্থান পায়। ফলে চতুর্থ হয়েই টুর্নামেন্ট শেষ করলো আগের দু’আসরের চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ কোরিয়া। পাকিস্তানের আহমদ আজাজ হ্যাটট্রিক করলে বাকি তিন গোল করেন মেহমুদ রশিদ, মোহাম্মদ আবু ও ইয়াকুব মোহাম্মদ। আর দক্ষিণ কোরিয়ার হয়ে একটি করে গোল করেন চু সুক হুন, লি নামুং ও সিউ ইনু।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।