পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ছিল না নিজস্ব কোনো ওয়ার্কশপ। তারপরেও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে রেলওয়ের যাত্রীবাহী কোচ মেরামতের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। শুধুমাত্র যন্ত্রপাতি ও জনবল নিয়োগ দিয়ে রেলওয়ের বিদ্যমান লাইনের ওপর রেখে কোচগুলো মেরামত করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। গুণগত মান বজায় রেখে কীভাবে উম্মুক্ত স্থানে এসব কোচ মেরামত সম্ভব জানতে চাওয়া হলেও তার কোনো উত্তর দিতে পারেনি রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা। এসব কারনে পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)- বেসরকারি খাতে রেলওয়ের কোচ মেরামতের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। রেলপথ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো আইএমইডি’র প্রতিবেদনে এ সংক্রান্ত চিত্র ফুটে উঠেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঐতিহ্যবাহী সৈয়দপুর রেলওয়ের কারখানা এখনও অবহেলিত। এই কারখানার দিকে একটু নজর দিলে কোচ মেরামতের জন্য বেসরকারি খাতে দেয়ার প্রয়োজন হতো না। বেসরকারি খাতে কোচ মেরামতের জন্য যে পরিমাণ টাকা খরচ হয়েছে সেই টাকায় সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার সক্ষমতা অনায়াসে বাড়ানো যেতো। আইএমইডির প্রতিবেদনেও আগামীতে রাজস্ব খাতে রেলের কোচ মেরামতের সুপারিশ করা হয়েছে।
জানা গেছে, যাত্রী পরিবহনের জন্য রেলওয়ের ২৬০টি কোচ মেরামতের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু সেই প্রকল্প শেষ হতে না হতেই কোচগুলো আবার নষ্ট হয়ে গেছে। ভেঙ্গে গেছে কোচের মেঝে, জানালা, দরজা, ছিঁড়ে গেছে সিট। কোনোটার আবার ছাদ ফুটো হয়ে পানি পড়ে। রেলওয়ে সূত্র জানায়, যাত্রী পরিবহনে সক্ষমতা বাড়াতে ২০০৯ সালে ২৬০টি পুরাতন কোচ মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়। এর মধ্যে ২০০টি মিটার গেজ এবং ৬০টি ব্রড গেজ কোচ। রেলওয়ের নিজস্ব ওয়ার্কশপ সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার সক্ষমতা না থাকায় কিছু কোচ বেসরকারি খাতে মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়। বাকিগুলো মেরামত করা হয় রেলওয়ের নিজস্ব তত্ত¡াবধানে। সে সময় কোচগুলো মেরামতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১২২ কোটি ২৬ লাখ টাকা। তবে বাস্তবে এ খাতে ব্যয় হয় ১০৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
আইএমইডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যয় কম হলেও কোচগুলো মেরামতের মান ছিল খুবই খারাপ। ২০১৪ সালের জুনে প্রকল্পটি সমাপ্ত হয়। আর ২০১৫ সালের ৩০ এপ্রিল ও ১১ মে কোচগুলো পরিদর্শন করে আইএমইডি। প্রতিবেদনে বলা হয়, ৩০ এপ্রিল রাজশাহী স্টেশনে অপেক্ষমাণ কোচ নং-৫১৪১ ( তেঁতুলিয়া এক্সপ্রেস), কোচ নং- ৫৪২০ (সুন্দরবন এক্সপ্রেস), কোচ নং- ৫৫২২ (সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস) এবং কোচ নং-৪১১০ সরেজমিন পরিদর্শন করা হয়। এর মধ্যে ৫৫২২ ও ৪১১০ নং কোচ দুটি সৈয়দপুর ওয়ার্কশপে রেলওয়ের নিজস্ব তত্তাবধানে মেরামত করা হয়েছে। আর ৫১৪১ ও ৫৪২০ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে মেরামত করানো হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিদর্শনকালে ৫৪২০ নং কোচের মেঝে ভাঙা অবস্থায় দেখা যায়। এ সম্পর্কে আইএমইডি পরিদর্শন দল মন্তব্য- ‘প্রকল্প শেষ হওয়ার বছর না ঘুরতেই নষ্ট হয়ে যাওয়া কাম্য নয়।’ তখন নির্বাহী প্রকৌশলী পরিদর্শনদলকে জানান, রেলওয়ের গার্ডদের ট্র্যাংক ওই কোচে রাখা হয়। মেঝেতে সেগুলো অসাবধানতাবশত ফেলার কারণে এ অবস্থা হয়েছে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১৫ সলের ১১ মে চট্টগ্রামে স্টেশন ইয়ার্ডে পাঁচটি মিটার গেজ যাত্রীবাহী কোচ সরেজমিন পরিদর্শন করে আইএমইডি প্রতিনিধিদল। এগুলো হলো ৬০২৪, ৩৪৩৮, ২২৫, ২০৭ ও ২৩৪। এর মধ্যে একটি কোচের মেঝে ও সিট নোংরা অবস্থায় পাওয়া যায়। একটি কোচের সিট ছেঁড়া অবস্থায় ছিল। কোচগুলো দ্রæতই মেরামতের জন্য ওয়ার্কশপে পাঠানো হয় বলে পরিদর্শন দলকে জানান রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী। এছাড়া উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) অনুযায়ী কোচগুলোতে অগ্নিনিরোধক যন্ত্র রাখার কথা থাকলেও তা মানা হয়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। পরিদর্শনকালে বেসরকারি সংস্থার নিজস্ব কোনো ওয়ার্কশপ আছে কি না জানতে চায় আইএমইডি দল। তখন জানানো হয়, বেসরকারি সংস্থার নিজস্ব কোনো ওয়ার্কশপ নেই। তবে যন্ত্রপাতি ও জনবল নিয়োগ দিয়ে রেলওয়ের বিদ্যমান লাইনের ওপর রেখে কোচগুলো মেরামত করা হয়। গুণগত মান বজায় রেখে কীভাবে উম্মুক্ত স্থানে এসব কোচ মেরামত সম্ভব জানতে চাওয়া হলেও তার কোনো উত্তর দিতে পারেনি রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা। পরিদর্শন প্রতিবেদনে বেশ কিছু সমস্যা তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে ঘন ঘন প্রকল্প পরিচালক পরিবর্তন। প্রকল্পটিতে পাঁচ বছরে সাতজন পরিচালক ছিলেন। এতে কাজের মান নিয়ে সমস্যা তৈরি হতে পারে বলে মন্তব্য করা হয়। বেসরকারি পর্যায়ে রেলওয়ের কোচ মেরামতের বিষয়ে সরাসরি কথা বলতে রাজি হননি রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা। আলাপকালে কয়েকজন বলেছেন, ঐতিহ্যবাহী সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় কোচ মেরামত কেনো নতুন কোচও তৈরী করা সম্ভব। এই কারখানা রেখে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে কোচ মেরামতের দায়িত্ব দেয়া আত্মঘাতির সমতুল্য উল্লেখ করে একজন প্রকৌশলী বলেন, যে কাজ রেলওয়ের শ্রমিকরা অনায়াসে করতে পারতো সেই কাজ বেসরকারি কোম্পানীকে কেনো বা কার স্বার্থে দেয়া হয়েছিল তা নিয়ে অনেকেরই প্রশ্ন আছে। আরেক প্রকৌশলী বলেন, বর্তমান রেলমন্ত্রী সৈয়দপুর কারখানাকে আধুনিকীকরণ করতে সচেষ্ট আছেন। তাঁর প্রচেষ্টায় একদিন এই কারখানা আর অবহেলিত থাকবে না। তখন সৈয়দপুর রেল কারখানাতেই নতুন কোচ তৈরী হবে। শুধু তাই নয়, সেই কোচ বিদেশেও রফতানি করা সম্ভব হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।