Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

পৃথিবীর কাছ দিয়ে উড়ে যাবে গ্রহাণু টিসি ৪

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ১২ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

পৃথিবীর খুব কাছ দিয়ে উড়ে যাবে একটি গ্রহাণু। এর আকার একটি বড় ঘরের সমান। এ সপ্তাহে এ গ্রহাণুটি পৃথিবীর খুব কাছে আসার কথা থাকলেও তাতে কোনো ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছে বিজ্ঞানীরা। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট। এতে বলা হয়েছে, টিসি৪ নামের গ্রহাণুটি দিগন্তরেখার ৪৪০০০ কিলোমিটার উপর দিয়ে উড়ে যাবে। পৃথিবীকে ৩৪০০০ কিলোমিটার উপর থেকে প্রদক্ষিণ করতে থাকা কয়েকশো স্যাটেলাইটের গতিপথ থেকে এর দূরত্ব হবে প্রায় দশ হাজার কিলোমিটার উপরে। ধেয়ে আসতে থাকা গ্রহাণুটি পৃথিবী কিংবা এর দিগন্তরেখার উপরে প্রদক্ষিণ করতে থাকা স্যাটেলাইট- কোনটির জন্যেই ঝুঁকিপূর্ণ নয় বলে জানান নাসায় গ্রহাণু চিহ্নিতকরণ ও গতিবিধি পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা মাইক কেলি। তিনি আরো বলেন, আমরা ২ মাস যাবত টিসি৪ গ্রহাণুটিকে পর্যবেক্ষণ করছি এবং খুব সূ²ভাবে এর গতিপথ পর্যালোচনা করছি। আমাদের কাছে যে তথ্য আছে তা থেকে নিশ্চিতভাবে আমরা গ্রহাণুটির গতিপথ নির্ণয় করে বলতে পারি যে, এটি পৃথিবী কিংবা এর চারপাশের স্যাটেলাইট সমূহের জন্যে কোন ধরনের ঝুঁকি বহন করছে না। টিসি৪ প্রথমবারের মতো বিজ্ঞানীদের নজরে আসে পাঁচ বছর আগে। তখন সে একবার সূর্যকে ঘিরে ঘূর্ণনকালে পৃথিবীকে অতিক্রম করে । তবে তখন পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব ছিল এখনকার দূরত্বের দ্বিগুণ। যেহেতু এটি সূর্যকে কেন্দ্র করে ক্রমাগত ঘুরছে, তাই আবার ২০৫০ এবং ২০৭৯ সালে পৃথিবী অতিক্রম করবে গ্রহাণুটি। রুদিগার জেন নেদারল্যান্ডে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির পৃথিবী সংলগ্ন বস্তু বিষয়ক প্রোগ্রামের একজন কর্মকর্তা। তিনি বলেন, আমরা জানি যে ২০৫০ সালে পৃথিবী অতিক্রম করে যাওয়ার সময়েও গ্রহাণুটির পৃথিবীকে আঘাত করার কোন আশঙ্কা নেই। কিন্ত, সে সময়ে পৃথিবীর খুব কাছ দিয়ে উড়ে যাওয়ার কারণে গ্রহাণুটির গতিপথ কিছুটা পরিবর্তিত হয়ে এমন একটি সম্ভাবনা জাগতে পারে যে- এটি ২০৭৯ সালে প্রদক্ষিণের সময় পৃথিবীর কক্ষপথে আঘাত হানবে। ধারণা করা হচ্ছে, সে সময় টিসি৪ উল্কাপিন্ডটি দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার কোন একটি পয়েন্টে আঘাত করবে । গ্রহাণুটির প্রশস্থতা ১৫ থেকে ৩০ মিটারের মাঝামাঝি। যা আকারে ২০১৩ সালে চেলাবিন্সক নামক স্থানে আঘাত হানা উল্কাপিন্ডের সমান। ওই আঘাতের ফলে হাজার হাজার ঘরবাড়ির জানালার কাঁচ ভেঙে যায় এবং পায় হাজারখানেক মানুষ আঘাতপ্রাপ্ত হয়। অবস্থান না জানা কয়েক মিলিয়নের চেয়েও বেশি গ্রহাণুর মাঝে টিসি৪ হল কয়েক হাজার চিহ্নিত প্রহাণুর মাত্র একটি। প্রতিবছর এই আকারের তিনটি গ্রহাণু ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪৪,০০০ কিলোমিটার দূরত্বে পৃথিবীকে অতিক্রম করে যায়। টিসি৪ গ্রহাণুটি বিশেষজ্ঞরা বেছে নিয়েছেন বিশ্বজনীন গ্রহাণু সংক্রান্ত দুর্ঘটনার পূর্ববর্তী সতর্কসংকেত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে। এই কার্যক্রমে জড়িত রয়েছে বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়, পর্যবেক্ষণ সংস্থা এবং বিজ্ঞানীর দল। বৃহস্পতিবারে গ্রহাণুটি পৃথিবীর কক্ষপথ অতিক্রম করে যাওয়ার পরে বিশেষজ্ঞরা খতিয়ে দেখবেন এর আয়তন এবং পৃথিবীকে অতিক্রম করে যাওয়া দূরত্ব সম্পর্কে তাদের অনুমান কতখানি সঠিক। এই কার্যক্রমকে পৃথিবীতে এ ধরণের গ্রহাণু আঘাতের পূর্ব সংকেতের অনুশীলন হিসেবে দেখছেন তারা। অনেক বিশেষজ্ঞের ধারণা, গ্রহাণুর আঘাতের ফলেই পৃথিবী থেকে ডায়নোসরের বিলুপ্তি ঘটেছিল। তারা এও জানান, ক্ষতিকর মহাজাগতিক বস্তসমূহ পর্যবেক্ষণে রাখা ছাড়া এই মুহুর্তে এ ধরণের বিপর্যয় থেকে পৃথিবীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মত তেমন কোন উপায় নেই। ইন্ডিপেন্ডেন্ট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ