পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রোহিঙ্গা সঙ্কটে খালেদা কোথায়, এটাই কি দেশপ্রেম
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বহুলেন সড়ক টানেল নির্মাণ প্রকল্পে এ মুহূর্তে চায়না এক্সিম ব্যাংকের অর্থছাড়ে কোন জটিলতা নেই জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্ধারিত সময়ের কিছুটা দেরিতে হলেও গুণগতমান অক্ষুণœ রেখে দেশের এ প্রথম টানেলের নির্মাণকাজ শেষ করা হবে। গতকাল (সোমবার) চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গায় কর্ণফুলী টানেল নির্মাণকাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে একথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
টানেল নির্মাণে চীনের অর্থছাড়ে ধীরগতি প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, টানেলের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন কোম্পানি-সিসিসিসি চীন সরকারের কোম্পানি। টাকা না পেলে তারা কাজ করছে কিভাবে। আপনারা অর্থছাড়ের যে কথাটি বলছেন এটা চায়না সরকার করছে। তারা ঠিকাদার কোম্পানি ঠিক করে দিয়েছে। কাজেই অর্থছাড়ের বিষয়টি তাদের প্রক্রিয়াগত ব্যাপার। আমি যতটুকু জানি অর্থছাড়ের ব্যাপারে এ মুহূর্তে কোন জটিলতা নেই। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৪৪৬ কোটি ৬৩ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। এর মধ্যে চায়না এক্সিম ব্যাংক দুই শতাংশ হারে সুদের শর্তে ২০ বছর মেয়াদে ঋণ সহায়তা দেবে ৪ হাজার ৮শ’ কোটি টাকা। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের এডিবিতে কর্ণফুলী টানে নির্মাণ প্রকল্পে ৩ হাজার ১১৯ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। আগের অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ৯৮১ কোটি টাকা। তবে এখনো পর্যন্ত চায়না এক্সিম ব্যাংক কোন অর্থই ছাড় করেনি।
এ কারণে প্রকল্প ব্যয় ও সময় বাড়বে কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, কর্ণফুলী টানেলের কাজ শেষ করার টার্গেট আরও পরে ২০-২১ সালে। আমরা এ টার্গেটটি কমিয়ে দিতে পারি। কিন্তু কাজটি খারাপ হবে। খারাপ কাজ খারাপ দৃষ্টান্ত রেখে যেতে চাই না। এ সরকারের আমলে না হলেও কাজটি যথারীতি ভালোভাবে সম্পন্ন হবে। হয়ত মাস ছয়েক বিলম্ব হতে পারে। সর্বোচ্চ ৬ মাস প্রকল্পের মেয়াদ বাড়তে পারে। মন্ত্রী বলেন, হলি আর্টিজানের পর থেকে আমাদের বিদেশী প্রজেক্ট কিছুটা সেøা হয়ে যায়। সংগত কারণে কনসালটেন্টরা তাদের জীবনের নিরাপত্তার কথা বলেছে। এখনও মেট্রো রেলের কাজও চলছে টানেলের কাজও চলছে এগিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন প্রকল্প কোন নির্বাচনকে সামনে রেখে নয়, আগামী জেনারেশনকে সামনে রেখে। আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাই শেখ হাসিনার লক্ষ্য। আর এজন্য দেশকে তিনি উন্নয়নের মহাসড়কে নিয়ে গেছেন। তার আগে মন্ত্রী কর্ণফুলী টানেলের নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেন। তিনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কমকর্তাদের সাথে কথা বলেন।
রোহিঙ্গা সঙ্কটে খালেদা কোথায়?
অপর এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তুলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের নেত্রী খালেদা জিয়া আজ কোথায়? এটাই কি দেশপ্রেম? রোহিঙ্গাদের নিয়ে এত গভীর সঙ্কটে উনি দেশে ফেরার তারিখের পর তারিখ বদলাচ্ছেন। তারা রোহিঙ্গাদের নিয়ে মুখে অনেক কিছু বলছেন। এ সংকট এত গভীর তারা শুধু ঢাকায় বসে লিপ সার্ভিস দিচ্ছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকারের ভ‚মিকা নিয়ে বিএনপির সমালোচনার বিষয়ে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, বিএনপি এমন একটা দল তাদের মুখে কোন ট্যাক্স নাই, লাইসেন্স নাই, মুখে যা আসে তা বলছে। তারা কয়দিন গেছে রোহিঙ্গাদের কাছে। তাদের নেত্রী আজ কোথায়? এত গভীর সঙ্কট উনি দেশে ফেরার সময় বদল করছেন, এটা কী ধরনের দেশ প্রেম? এ সংকট এত গভীর তারা শুধু ঢাকায় বসে লিপ সার্ভিস দিচ্ছে। এরকম অনেকে দিচ্ছে। কিন্তু আমরা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছি।
তিনি বলেন, নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের জন্য সীমান্ত উন্মুক্ত করে শেখ হাসিনা সরকার যে উদারতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তা বিশ্বে বিরল। এ রকম মানবিক সঙ্কটে বাংলাদেশ মানবিকতার যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হয়েছে তা নজিরবিহীন। পৃথিবীর কোন দেশে অন্য দেশ থেকে আসা মানুষেরা এত উদার আতিথিয়তা পাইনি, যা তারা এদেশে পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদারতায় আজ লাখো মানুষের জীবন রক্ষা পেয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ৫ লাখের বেশি মানুষ এসেছে। আগতদের মধ্যে ৮০ ভাগ নারী ও শিশু, তারা কেউ না খেয়ে মারা গেছে? আমরাতো ভেবেছিলাম নিউমোনিয়ায় অনেক শিশু মারা যাবে। এ পর্যন্ত কেউ বিনা চিকিৎসায় মারা যায়নি, না খেয়ে মারা যায়নি। আমরা আমাদের সাধ্যমতো তাদের পাশে থেকে তাদের মৌলিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আসন্ন মিয়ানমার সফরে কোন বিষয়টি প্রাধান্য পাবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন।
মিয়ানমারের মন্ত্রী এসেছেন যে আলোচনা শুরু হয়েছে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ করে তাদের প্রত্যাবসনের ব্যবস্থা করা। প্রত্যাবসনটা এখন মোস্ট ইম্পোটেন্ট। কারণ এতগুলো লোকের বোঝা আমাদের পক্ষে বেশিদিন বয়ে বেড়ানো কঠিন একটা চ্যালেঞ্জের ব্যাপার। কারণ এই লোকগুলো আসার পর থেকে নানা সংকট দেখা দিচ্ছে। এদের সঙ্গে জঙ্গি, অস্ত্র, ইয়াবা আসতে পারে। অলরেডি সে সব তথ্য আমাদের আছে। বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতকে ঘিয়ে নানা রকম সামাজিক-পরিবেশ বিপর্যয় ঘটতে পারে। নানা রকম রোড় ব্যাধি ছড়াতে পারে। এসব বিষয়ে আমরা অত্যন্ত সতর্ক। আমরা মিয়ানমারকে এটুকুই বলব এ সংকট টা আপনাদের। এ সংকট আপনার সৃষ্টি করেছেন এরা আপনাদের লোক। এদেরকে ফিরিয়ে নেয়ার যে প্রতিশ্রুতি আপনাদের মন্ত্রী ঢাকায় করে গেছেন সেটা অক্ষরে অক্ষরে পালন করবেন সেটা আমরা আশা করি।
তিনি বলেন, জাতিসংঘকে আমরা বলব শুধু মুখের কথা নয়, জাতিসংঘ মিয়ানমারে জাতিগত নিধনের বিষয়ে কড়া সমালোচনা করেছে। কড়া প্রতিবাদ দিয়েছে। আজকে শুধু মুখের কথায় হবে না। আজকে জাতিসংঘকে সত্যিকার অর্থে কঠোর অবস্থানে যেতে হবে। যাতে করে মিয়ানমার সরকার তাদের নাগরিক যাদের বিতাড়িত করেছে তাদেরকে যেন তারা ফিরিয়ে নেয়।
এ সময় সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা মফিজুর রহমান, এহছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল, সাবেক ছাত্রনেতা জহির উদ্দিন লিপটন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।