Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জঙ্গি মারজানের বোন খাদিজার ৩ সন্তানসহ আত্মসমর্পণ

যশোরে জঙ্গি আস্তানায় শ্বাসরুদ্ধকর মেক অ্যারাইজ অভিযান

বিশেষ সংবাদদাতা,যশোর ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ১০ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

 যশোর শহরের জঙ্গি আস্তানায় শ্বাসরুদ্ধকর ১৫ ঘণ্টার অভিযান মেক অ্যারাইজ শেষ হয়েছে সোমবার বিকাল ৫টায়। যশোর শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোড এলাকার একটি বাড়িতে ওই আস্তানায় রোববার রাত ২টা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান শুরু হয়। অভিযানে সন্দেহভাজন জঙ্গি হাফিজুর রহমান সাগর ওরফে মশিউর রহমানের স্ত্রী খোদেজা আক্তার খাদিজা তিন সন্তান নিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন। পরে ওই বাড়ি থেকে ৩টি সুইসাইডাল ভেস্ট উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি কয়েকটি নকশা পাওয়া গেছে। যশোরের এসপি মোঃ আনিসুর রহমান পিপিএম বিপিএম বার সাংবাদিকদের জানান, অবশেষে খাদিজা আত্মসমর্পণ করেন। তিনি জানান, বাড়িটিতে রাখা ৩টি বোমা নিস্ক্রিয় করছে পুলিশের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট। ‹আত্মসমর্পণের’ পর পরই খাদিজা ও তার তিন সন্তানকে একটি মাইক্রোবাসে নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর বাড়িটি তল্লাশী করে উদ্ধারকৃত বোমা নিস্ক্রিয় করা হয়।
পুলিশ জানায়, খাদিজা নিহত নব্য জেএমবির শীর্ষ নেতা নুরুল ইসলাম মারজানের বোন। আর অভিযানের দু’দিন আগে পালিয়ে যাওয়া জঙ্গি হাফিজুর রহমান সাগর ওরফে মশিউর রহমান নবগঠিত জেএমবি’র খুলনা অঞ্চলের নেতা। অভিযান শেষে সোমবার বিকেল সোয়া ৫টায় ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের ওই বাড়ির সামনে ব্রিফিং করেন খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি ইকরামুল হাবিব। তিনি জানান, গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার পর পুলিশ, র‌্যাবসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা রোববার রাত ২টার দিকে ওই বাড়িটি ঘিরে ফেলে। এরপর সোয়াট, কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট, বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দলসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এই অভিযানে অংশ নেয়। উদ্ধার হওয়া খাদিজাকে তিন সন্তানসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাদের ব্যাপারে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। তবে জঙ্গি সাগর দু’দিন আগে ওই বাড়ি থেকে চলে যায়।
আত্মসমর্পনের আগে খাদিজার পিতা ও মাতাকে পাবনা থেকে যশোর আনা হয়। খাদিজা পুলিশ সুপারকে জানান, তার পিতা মাতার উপস্থিতি ছাড়া তিনি আত্মসমর্পণ করবেন না। বাড়ির মালিক যশোর জিলা স্কুলের শিক্ষক হায়দার আলী। সকালেই পুলিশের বিশেষায়িত টিম সোয়াত ঢাকা থেকে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ঘটনাস্থলে ব্রিফিং এ পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান বলেন, ওই বাড়িতে ৫টি পরিবার ছিল। তাদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বাড়িটির দ্বিতীয়তলায় জঙ্গি মারজানের বোন খাদিজা রয়েছে। তার সঙ্গে একাধিক শিশু রয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছি। আমরা আত্মসমর্পণের আহবান জানিয়েছি।
মাইকে পুলিশ খাদিজাকে আত্মসমর্পণের আহŸান জানালে তিনি অস্বীকৃতি জানান। খাদিজার বাড়ি পাবনায়। তার স্বামী একটি হারবাল কোম্পানীকে চাকরী করেন পরিচয় দিয়ে স্বামী ও স্ত্রী ৩ সন্ত্রানসহ প্রায় দেড় বছর ভাড়া বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন। দুপুর পৌনে দুইটার দিকে ব্যালকনিতে এসে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সাথে কথা বলেন খাদিজা। খাজিদা পুলিশকে বলেন আমার মা-বাবাকে এনে দেন। তারপর আপনাদের সঙ্গে কথা বলবো। এরপর তিনি আবার ভিতরে চলে যান।
পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, নিহত মারজান জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) কমান্ডার ছিলেন। গত ৬ জানুয়ারি দিনগত রাতে রাজধানীতে ‹বন্দুকযুদ্ধে› নিহত হয়েছিলেন তিনি। এই মারজানের বোন হচ্ছেন আত্মসমর্পণকারী খাদিজা। ৩ সন্তানের মধ্যে ২ মেয়ে ১ ছেলে পুলিশ জানায়, খাদিজা স্বামীর সঙ্গে ওই বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন। তবে আত্মসমর্পণের সময় খাদিজার স্বামী মশিউর ছিলেন না। তার ব্যাপারে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। মশিউরের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। পুলিশ বলছে সে জঙ্গী নেতা। সর্বশেষ তথ্যে জানা গেছে, খাদিজা, তার মা-বাবা ও তিন সন্তান বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জঙ্গি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ