পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হালিমা খাতুন। রোহিঙ্গা নাগরিক। বয়স আনুমানিক পঁচিশ। স্বামী ও তিন সন্তানকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ। ছোট ছেলে কুদ্দুছকে নিয়ে অনেক কষ্টে বাংলাদেশে এসেছেন তিনি। ভিটে মাটি ফেলে মোটেও আসতে ইচ্ছে করেনি তার। পাহাড়ের পাদদেশে তাদের ঘর ছিল। বার্মার সেনাবাহিনী প্রথমে সমতল এলাকার বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে। আশা করেছিল তারা (বার্মা সেনাবাহিনী) পাহাড়ে বসবাস রত রোহিঙ্গাদের তাড়াবে না। কিন্তু বিধি বাম। মিয়ানমার সেনাবাহিনী মাইকিং করে সময় বেঁধে দিয়েছে এক সপ্তাহ। এক সপ্তাহ পর কোন রোহিঙ্গাকে রাখাইনে পেলে জীবন্ত পুড়ে মারা হবে। এই সময়সীমার মধ্যে সকলকে বাংলাদেশে চলে যেতে হবে। সে ভয়ে তারা এদেশে চলে এসেছে। কথাগুলো অশ্রুসিক্ত নয়নে বর্ণনা বলছিলেন আরাকান থেকে পালিয়া আসা হালিমা খাতুন। একই কথা বলেছেন, পালিয়ে আসা অপর রোহিঙ্গা নাজিম ও জসিম উদ্দিন।
তারা বলেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও উগ্র বৌদ্ধরা প্রতিদিন মাইকং করে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিচ্ছে। যদি এক সপ্তাহ পর রাখাইনে কাউকে পাওয়া যায়, তাহলে তাকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হবে। এছাড়া রোহিঙ্গাদের ফেলে আসা ভালো বাড়ি ও কাঠের বাড়িগুলো সেনা সদস্যরা দখল করছে বলেও জানান আরাকানের কিয়াংমং এলাকার বাসিন্দারা। সেনা ও মগদের হুমকির কারণে এখন শতশত রোহিঙ্গা প্রতিরাতে ছোট ছোট নৌকায় করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে। সম্প্রতি অংসান সূচির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে এসে বলেছেন, বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফিরিয়ে নেয়া হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই কথা মিথ্যা ও আইওয়াশ বলে জানান পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা।
শনিবার রাত এগারোটার দিকে সীমান্তে নদী পার হয়ে একটি নৌকা আসে। সেখানে পনের জন রোহিঙ্গা নারী পুরুষ ও শিশু ছিল। এ সময় দূর থেকে ভেসে আসে কয়েকজন নারী ও শিশুর কান্না। তখন কয়েকজন বিজিবির সদস্য ও স্থানীয় লোকজন সামনে গিয়ে দেখতে পান, ভয়ে কাঁপছে কয়েকজন নারী ও শিশু। এভাবে আসতে থাকে বেস কয়েকটি নৌকা। প্রতি নৌকায় ১০-১৫ জন করে রোহিঙ্গা আসে বাংলাদেশে।
একজন রোহিঙ্গা নৌকার মাঝির সাথে কথা হলে তিনি জানান, প্রতিদিন নৌকায় করে শতশত রোহিঙ্গাদেরকে বাংলাদেশে পার করছি। মিয়ানমার পুলিশ আমাকে কিছু বলে না। কারণ প্রতি ট্রিপে তাদেরকে ৪০ হাজার কায়াট দেই। ওপার থেকে এপারে আসাতে ঘন্টা খানেক সময় লাগে। মংডু থেকে বুচিডংয়ের দূরত্ব প্রায় ২২ কিলোমিটার। সেখানে ৩৫০টির মত গ্রাম আছে। এসব গ্রামে সাড়ে তিন লাখ লোকের বসবাস। আগস্টের শেষে রোহিঙ্গাদের চলে আসা শুরু হলেও এখন ও অনেক লোক সেখানে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন। কিন্তু মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ও উগ্র বৌদ্ধদের প্রতিদিন মাইকিং করা ও এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দেওয়ার কাণে অবশিষ্ট রোহিঙ্গারা ও চলে আসতে বাধ্য হচ্ছে। এছাড়া সাধারণ রোহিঙ্গাদের স্বাভাবিক ভাবে সেনাবাহিনী চলাফেরা করতে না দেয়ার কারণে খাবার সঙ্কট ও দেখা দিয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।