পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দীর্ঘদিনের পুরনো বাস আর মাথাভারী প্রশাসনিক ব্যয় নিয়ে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বিআরটিসির একমাত্র বাস ডিপোটি এখন ধুঁকছে। একসময়ে রাষ্ট্রীয় সড়ক পরিবহন সংস্থার দেশের সর্বোচ্চ লাভজনক এ বাস ডিপোটি এখন দুই যুগের পুরনো মেরামত অযোগ্য বাস দিয়ে যাত্রীসেবার (?) নামে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের পরিধিই কেবল বৃদ্ধি করছে। ইতোমধ্যে এ ডিপোর ৬১টি বাসের মধ্যে ১৮টিই মেরামত অযোগ্য হয়ে পড়েছে। অবশিষ্ট ৪৩টি বাসের মধ্যে ১৬টি এসি বাস মাত্র তিন বছর আগে ভারতীয় ঋণে সংগ্রহ করা হলেও তা এখন যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ ভ্রমণের পরিবর্তে বিড়ম্বনাকে বৃদ্ধি করছে বলে অভিযোগ উঠছে। রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির অনেক বাসে বর্ষার সময় ছাতা মাথায় দিয়েও বসতে হচ্ছে।
তবে শত বিড়ম্বনার পরও দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের কাছে বিআরটিসির গ্রহণযোগ্যতা এখনো অবশিষ্ট রয়েছে। এখনো সংস্থাটির বরিশাল বাস ডিপোটির ৪৩টি গাড়ি দৈনিক প্রায় ১২ হাজার কিলোমিটার সড়কপথে অন্তত পাঁচ হাজার যাত্রী পরিবহন করছে। তবে প্রতি মাসে ডিপোটি দেড় কোটি টাকারও বেশি যাত্রীভাড়া আয় করলেও পুরনো গাড়ির অতিরিক্ত জ¦ালানি ব্যয়, নদ-নদীবেষ্টিত দক্ষিণাঞ্চলের সড়কপথে ফেরি ভাড়া ও সেতুর মাত্রাতিরিক্ত টোল পরিশোধের সাথে অতিরিক্ত প্রশাসনিক ব্যয় মেটাতে এ বাস ডিপোটির লাভের পথ রুদ্ধ করছে। উপরন্তু বছরে দুটি উৎসব ভাতা প্রদানেও এ ডিপোটির কোষাগার থেকে অতিরিক্ত প্রায় ২০ লাখ টাকা চলে যাচ্ছে। ফলে একসময়ের লাভজনক বরিশাল বাস ডিপোটি এখন অনেকটাই ধুঁকছে।
১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত বিআরটিসির বাস ডিপোটি ১৯৮২ সালে সামরিক সরকার বন্ধ করে দেয়ার পরে ১৯৮৭ সালে পুনরায় চালু করার প্রতিটি স্তরেই পুরনো বাসই ছিল ভরসা। তবে বছর তিন আগে ১০টি নতুন ভারতীয় এসি বাস দিয়ে বরিশাল-মাওয়া রুটে বিশেষ একটি সার্ভিস চালু করা হয়। প্রথমে এ সার্ভিসটি যথেষ্ট জনপ্রিয়তা অর্জন করলেও নিম্নমানের গাড়ির কারণে এখন তা যাত্রী বিড়ম্বনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বরিশালে অনুরূপ ১৬টি বাস প্রদান করা হলেও তার সবগুলোই এখন এ ডিপোর অনেকটা বোঝায় পরিণত হয়েছে। এসব বাতানুক‚ল বাসের প্রায় সবগুলোতেই প্রচন্ড গরম যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ কেড়ে নিচ্ছে। অথচ যাত্রীরা এ জন্য বাড়তি ভাড়া দিচ্ছে। বর্তমানে বরিশাল-মাওয়া ছাড়াও বরিশাল-রংপুর, বরিশাল-চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং ভোলা-বরিশাল-খুলনা-যশোর রুটে সংস্থাটির কথিত বাতানুক‚ল বাস চলছে। তবে অতি নিম্নমানের এসব এসি বাস চলছে সম্পূর্ণ জোড়াতালি দিয়েই। দুঃসহ গরমে যাত্রীদের মাথার ঘাম পায়ে গড়াচ্ছে। প্রায় প্রতিটি গাড়ির তাপানুক‚ল ব্যবস্থাই ত্রুটিপূর্ণ। গাড়ির মূল বডি থেকে শুরু করে এর দরজা পর্যন্ত জোড়াতালি দিয়ে চালাতে হচ্ছে।
তবে এসব কিছুর পরও রাষ্ট্রীয় সড়ক পরিবহন সংস্থাটির ৪৩টি বাস বরিশাল থেকে মাওয়া ছাড়াও কুয়াকাটা থেকে রংপুর, বরিশাল থেকে খুলনা-যশোর হয়ে বেনাপোল, বরিশাল-কুয়াকাটা, বরিশাল থেকে পটুয়াখালী হয়ে বরগুনা, বরিশাল থেকে খুলনা হয়ে সাতক্ষীরার মুন্সিগঞ্জ পর্যন্ত প্রতিদিন যাত্রী পরিবহন করছে। যার মধ্যে কোনো রুটের বাসেই যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দে ভ্রমণের উপযোগিতা নেই। এমনকি ২০০২ সালে বরিশাল থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত বিআরটিসির একটি ‘স্পেশাল পর্যটক বাস সার্ভিস’ চালু করার পর গত প্রায় ১৫ বছরেও এ রুটে কোনো মানসম্মত বাস দিতে পাারেনি বিআরটিসি। বরিশাল থেকে ঝালকাঠী-পিরোজপুর-খুলনা-যশোর হয়ে বেনাপোল পর্যন্ত একটি বাস সার্ভিসও চালু করা হয় সে সময়ে। কিন্তু দীর্ঘ এ সড়কপথের বাস সার্ভিসটির অবস্থা এখন অতন্ত করুণ। সংস্থাটির লক্কড়-ঝক্কড় মার্কা বাস গত মাসে এ রুটে দিন দশেকের বেশি পরিপূর্ণভাবে যাত্রী পরিবহন করতে পারেনি। অবশিষ্ট কুড়ি দিনই পথে পথে যাত্রী বোঝাই গাড়িটি বিকল হয়ে পড়ে। ফলে দেশি- বিদেশি যাত্রীদের দুর্ভোগ চরম পর্যায়ে পৌঁছার পর চলতি মাসে সার্ভিসটিই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অন্য প্রায় সবগুলো রুটেও বিআরটিসির বাসের একই দুর্গতি অব্যাহত রয়েছে।
বর্তমানে বিআরটিসির বরিশাল ডিপোর ৪৩টি সচল বাসের বিপরীতে এখানে কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে ১৯০ জনের মতো। যা এ বাস ডিপোটির লাভের পথকে রুদ্ধ করছে প্রতিনিয়ত। এখানে সর্বসাক‚ল্যে ১০০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রয়োজন হলেও অতিরিক্ত জনবল পুষতে গিয়ে ডিপোটির অর্থনৈতিক অবস্থা যথেষ্ট নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছে।
তবে এসব বিষয়ে সংস্থাটির বরিশাল বাস ডিপোর ম্যানেজার অপারেশনের সাথে আলাপ হলে তিনি জানান, ‘পরিস্থিতি উত্তরণের চেষ্টা চলছে। যত দ্রুত সম্ভব বরিশাল বাস ডিপোতে ভালো মানের বাস সরবরাহের ব্যাপারে সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করছে’ বলেও জানান তিনি। পাশাপাশি বরিশাল-খুলনা-বেনাপোল ও বরিশাল-কুয়াকাটা রুট দুটি বাতানুক‚ল বাস চালু করার লক্ষে সংস্থার সদর দফতরকে অনুরোধ জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি। অতিরিক্ত জনবলের বিষয়ে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য না করে জনবল নিয়োগের বিষয়টি তার এখতিয়ার বহিভর্‚ত বলে জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।