পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিষয়টি বিচার বিভাগ সম্পর্কিত- ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন
স্টাফ রিপোর্টার : দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা বলেছেন, আমরা আইনের অধীন। আমাদের সীমাবদ্ধতা আছে। জেনেছি উনি অসুস্থতার জন্য পারফর্ম করতে পারছেন না। আমরা আপনাদের কথা শুনলাম, চিন্তা করে দেখব। তিনি আরো বলেন, আমি নিশ্চিত উনি বাসভবনেই আছেন। তবে তিনি কারোর সঙ্গে দেখা করবেন কি করবেন না সেটা উনার নিজস্ব ব্যাপার। আমরা কি নির্দেশনা দিতে পারি? গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার অবস্থা জানতে সহযোগিতা ও দিকনির্দেশনা চেয়ে আপিল বিভাগে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নেতৃত্বে সিনিয়র আইনজীবীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি এস কথা বলেন। এদিকে বিচার অঙ্গণে এমন উদ্ভুত পরিস্থিতিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আবার আজ (শুক্রবার) সিনিয়র আইনজীবীরা বৈঠকে বসবেন। এদিকে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে ছুটিতে পাঠানোর প্রতিবাদে গতকাল বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।
সিনিয়র আইনজীবীরা ১ নম্বর কোর্টে: গতকাল সকাল নয়টায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এজলাসে বসেন। এরপর অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ও সিনিয়র আইনজীবীরা ১ নম্বর কোর্টের এজলাসে আসেন। আদালতে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন ও এ জে মোহাম্মদ আলী, বর্তমান সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। এছাড়াও অসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক বিচারপতি আব্দুল আউয়াল, সমিতির সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাবেক সম্পাদক বদরুদ্দোজা বাদলসহ সিনিয়র আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম উপস্থিত ছিলেন।
শুরুতেই সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার অবস্থা জানতে চেয়ে লিখিত আবেদন পাঠ করে শোনান। শুরুতেই তিনি একটি লিখিত আরজি তুলে ধরে গত ২ অক্টোবর প্রধান বিচারপতির বাসভবনে যাওয়া ও সাক্ষাৎ করতে না পারার কথা বলেন। তিনি বলেন, সাক্ষাৎ করতে গেলে তাদের যেতে দেয়া হয়নি। এ সময় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, সংবিধানের ১০৩ এর আওতায় এটি পড়ে কি না? পড়লে আমরা যেতে পারি। এরপর জয়নুল আবেদীন বলেন, এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ পনয়ার জন্য এ আরজি। এ সময় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা আইনের অধীন। জেনেছি উনি অসুস্থতার জন্য পারফর্ম করতে পারছেন না। তাই সিনিয়র বিচারপতি হিসেবে আমি দায়িত্ব পালন করছি। তিনি বলেন, আমরা আপনাদের কথা শুনলাম। আমরা চিন্তা করে দেখব।
তখন জয়নুল আবেদীন বলেন, আমরা আপনার কাছে এসেছি দিক-নির্দেশনা চাইতে, সহযোগিতার জন্য। আদালত তখন বলেন, আমি নিশ্চিত, তিনি বাসায় আছেন। আশা করি, এ বিষয়ে আপনারা আমার চেম্বারে আসবেন, দেখা করবেন। এ পর্যায়ে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেন, বিষয়টি উদ্বেগের। এর সঙ্গে বিচার বিভাগ সম্পর্কিত। জবাবে আদালত বলেন, আমরা আইনের ভিতরে থেকেই দায়িত্ব পালন করছি।
এ সময় খন্দকার মাহবুব হোসেন আদালতকে বলেন, আপনারা (আদালত) একজন রেজিস্ট্রার পাঠিয়ে বিষয়টি জানতে পারতেন। তখন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা বিষয়টি দেখব। আপনারা উদ্বেগ জানিয়েছেন, আমরা (আদালত) শুনলাম।
মওদুদ আহমদ বলেন, এই সঙ্কটি কোনো দলীয় সঙ্কট নয়। দলমত নির্বিশেষে আমাদের সকলেরই উদ্বেগ যে, আমাদের দেশের প্রধান বিচারপতি অসুস্থ আছেন। তার সাথে আমরা দেখা করে আমরা তাকে সমবেদনা জানাতে চাই। তার সুস্থতা কামনা করতে চাই।
পরে জয়নুল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা সংবিধানের অভিভাবক সর্বোচ্চ আদালতের কাছে গিয়েছিলাম। সেখানে আমরা বলেছি, প্রধান বিচারপতি অসুস্থ হলেও আমরা তাকে দেখতে চাই, কথা বলতে চাই। সমিতির নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে আমাদের এ অধিকার আছে। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আমাদেরকে যেতে দিচ্ছে না। আপনারা সংবিধানের অভিভাবক। আপনাদের কাছ থেকে একটা প্রোপার সিস্টেম চাই। আদালত আপনাদেরকে কি বলেছেন? তিনি বলেন, আদালত আমাদের কথা শুনেছেন এবং বলেছেন, আপনাদের বিষয়টি আমরা চিন্তা-ভাবনা করে দেখছি।
সিনিয়র আইনজীবীদের বৈঠক: বিকাল ৪টায় সিনিয়র আইনজীবীরা বৈঠক বসেন। পরে বারের নেতৃত্বে আইনজীবীদের একটি প্রতিনিধি দল ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি চেম্বারে সাক্ষাৎ করতে যান। দেখা করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি কাছে আইনজীবীরা নেতারা বলেন, আমরা (আইনজীবীরা) প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বাধা দেন। পরে প্রধান বিচারপতি আবদুল ওয়াহহার মিঞা আইনজীবীদের বলেন, দুপুরে আইন মন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। আইন মন্ত্রী বলেছেন এস কে সিনহার সঙ্গে দেখা সাক্ষাত নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোন বাধা নিষেধ নেই। সাক্ষাৎ শেষে বারের সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ইনকিলাবকে এসব তথ্য জানিয়েছেন। আজ শুক্রবার আবর সিনিয়র আইনজীবীরা বিষয়টি বৈঠকে বসবেন বলে তিনি জানান।
আইনজীবীদের মিছিল: প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে ছুটিতে পাঠানোর প্রতিবাদে গতকাল বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। অ্যাডভোকেট গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী আলালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে অ্যাডভোকেট সানাল্লাহ মিয়া, মির্জা আল মাহমুদ, গাজী কামরুল ইসলাম সজল, মোহাম্মদ আলী ও রেজাউল করিমসহ প্রায় অর্ধশত আইনজীবীরা অংশ নেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।