পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করার পর অনেক ‘মিসইউজ’ ও ‘অ্যাবিউজ’ দেখা গেছে। এই মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, সরকার যুক্তিসঙ্গত সব সাজেশন শুনতে চায়। যারা মানুষের গান গাইবে তাদের কথা সরকার শুনবে। সুশীল সমাজের বক্তব্য বন্ধ করার উদ্দেশ্য সরকারের নেই। আজকের অনুষ্ঠানে সুশীল সমাজের সুপারিশগুলো সরকার গুরুত্বের সঙ্গে নেবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার আলোচনার দ্বার উন্মুক্ত রয়েছে।
আইনমন্ত্রী গতকাল সোমবার ঢাকার প্যানপ্যাসিফিক হোটেল সোনারগাঁও হোটেলে ইউএসএইড’র প্রমোটিং অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড রাইটস প্রকল্পের আওতায় কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনাল এবং ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর নট ফর প্রফিট ল (আইসিএনএল) আয়োজিত ‘শেপিং অব থার্ড সেক্টরস লজ অ্যান্ড পলিসিজ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতা এসব কথা বলেন।
আনিসুল হক বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে আবার বসা হবে। সেখানে যে কেউ মতামত দিতে পারবেন। কেন এই আইন করতে আমরা বাধ্য হয়েছি, তার প্রেক্ষাপট সবাই জানেন। এটা ব্যাখ্যা করে বলার দরকার নেই। অনেকেই বলেছেন, এই আইন করে কোনও উপকার হয়নি, আমার মনে হয় কিছু কিছু উপকার হয়েছে। আমি এমন কথা বলবো না যে, আইনটির কোনও ত্রুটি-বিচ্যুতি নেই। সব আইনেরই কিছু কিছু পদ্ধতিগত সমস্যা থাকে। আবার কিছু কিছু বাস্তবায়নের সমস্যা থাকে। যখন বাস্তবায়নে সমস্যা হয়, তখন আলোচনার মাধ্যমে তার সমাধান করা হয়। ঠিক সে কারণেই বলছি, এই আইন নিয়ে আমরা আবারও বসবো। তিনি বলেন, যদি বিধি পরিবর্তন করে সমস্যার সমাধান করতে পারি, তাহলে অবশ্যই আমরা সেদিকে যাবো। যদি তারপরেও আমরা দেখি যে আইনটির সংশোধন করা প্রয়োজন আছে, সেটা করতেও আমরা পিছপা হবো না। কিন্তু সম্পূর্ণ আইনটিকে বাতিল করে দেয়া যুক্তিসঙ্গত হবে না। সেজন্য আসুন আমরা আইনটি নিয়ে আবার বসি। সেখানে আইনটির সমস্যাবলী চিহ্নিত করে সমাধানের ব্যবস্থা করি। এই বৈঠক রমজানের আগেই হতে পারে।
নাগরিক সমাজের প্রতি ইঙ্গিত করে মন্ত্রী বলেন, আপনাদেও যেমন সংবিধানের প্রতি আনুগত্য আছে, তেমনি আমাদেরও আনুগত্য আছে। আমরাও চাই না সংবিধানবিরোধী কোনও আইন হোক।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিষয়ে তিনি বলেন, কারও বাকস্বাধীনতা বা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করার জন্য এ আইন প্রণয়ন করা হয়নি। পেনাল কোডে ফিজিক্যালি চুরি করলে কী শাস্তি হয়, সেটি আছে। প্রযুক্তির বিস্তারের ফলে চুরি আর শুধু ফিজিক্যালি হয় না। ডিজিটাল মাধ্যমেও হয়। ডিজিটাল মাধ্যমে যে অপরাধগুলো হচ্ছিল তা প্রতিরোধের জন্য একটি আইনের প্রয়োজন ছিল। বিশ্বের যেখানেই এই আইনের বিষয়ে কথা হয়েছে, সেখানে কেউ বলেনি এ আইনের প্রয়োজনীয়তা নেই।
আনিসুল হক বলেন, আইনটি ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে এলে অংশীজনদের সঙ্গে একটি বৈঠক হয়েছিল। এরপর সংসদে স্থায়ী কমিটির সভায় এটকো ও সম্পাদক পরিষদসহ বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করা হয়েছিল। সেখানে অংশীজনদের কিছু কিছু সাজেশন বা পরামর্শ গ্রহণ করা হয়েছিল। দুঃখের হলেও সত্য, এই আইন করার পর আমরা অনেক মিসইউজ ও অ্যাবিউজ দেখেছি।
আইনমন্ত্রী বলেন, যখন এই আইনের যথেষ্ট অপব্যবহার হওয়ার প্রবণতা দেখা দিয়েছিল, তখন তাৎক্ষণিকভাবে আমি নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে বসেছিলাম এবং জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভার্চুয়ালি বৈঠকে বসেছিলাম। এই বৈঠকে আমরা প্রথমে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, সেটা হচ্ছে আইনটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হোক। এরপর আমি জেনেভায় গিয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার সঙ্গে বৈঠক করেছিলাম। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় যে পৃথিবীতে এরকম কোনও আইন আছে কিনা, যদি থেকে থাকে তাহলে তার বেস্ট প্র্যাকটিসগুলো কী কী ? সেটা জানা এবং সেটাকে এই আইনের সঙ্গে যুক্ত করে দুর্বলতাগুলো দূর করার চেষ্টা করা হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, ওই বৈঠকে আরও সিদ্ধান্ত হয় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি নিয়ে আলাপ-আলোচনার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে। এরপর ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার অফিস, আইন, পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইসিটি ডিভিশনের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। বর্তমানে জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের অফিস থেকে এ বিষয়ে একটি সাজেশন পাওয়া গেছে এবং সেটি সরকার দেখছে। পুলিশকে নির্দেশ দেয়া আছে এখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করলেই কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, বেসরকারি সংস্থাগুলোর কার্যক্রম যাতে সঠিক ও সাবলীলভাবে চলতে পারে, সেজন্য বৈদেশিক অনুদান ( স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রম) রেগুলেশন আইন, ২০১৬-এর বিধিমালা দ্রুত প্রণয়নের বিষয়ে আমি এনজিও বিষয়ক ব্য সঙ্গে কথা বলবো।
অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক হিসেবে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’র নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, অধ্যাপক সি আর আবরার ও ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।