Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

রোহিঙ্গা ক্যাম্পকেন্দ্রিক চলছে জমজমাট ব্যবসা-বাণিজ্য

শামাসুল হক শারেক, উখিয়া-টেকনাফ সীমান্ত থেকে ফিরে : | প্রকাশের সময় : ৪ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সৃষ্টি হয়েছে নতুন কর্মসংস্থান
বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী মিয়ানমারের আরাকান রাজ্য থেকে কঠোর নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া লাখ লাখ রোহিঙ্গা নারী-শিশু-পুরুষ এখন কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ ও নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছে। লাখ লাখ রোহিঙ্গাদের চাপে এই জনপদের অধিবাসীদের মাথা ভারী হয়ে উঠলেও এসব রোহিঙ্গা ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পকে কেন্দ্র করে এখন চলছে বেশ জমজমাট ব্যবসা-বাণিজ্য ও সৃষ্টি হয়েছে নতুন নতুন অনেক কর্মসংস্থান। আগে থেকে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা পাঁচ লাখ মতে হলেও সম্প্রতি আশ্রয় নিয়েছে আরো দশ লাখ রোহিঙ্গা। উখিয়ার ৭টি শিবিরে এবং টেকনাফের ৫টি শিবির ও নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রæর একটি শিবিরে এসব রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে সরকার। এছাড়াও তুমব্রæ এলাকায় জিরো পয়েন্টের দু’টি শিবিরেও অবস্থান করছে হাজার হাজার রোহিঙ্গা।
সরে জমিনে ঘুরে দেখা গেছে, গত ২৪ আগষ্ট থেকে মিয়ানমারের আরাকানে সেনা-পুলিশের গণহত্যা শুরু হলে রোহিঙ্গা মুসলিম নারী-শিশু-পুরুষেরা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে শুরু করে। উখিয়া-টেকনাফ ও নাইক্ষ্যংছড়ির ২০/২৫টি পয়েন্ট দিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে তারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে থাকে। পর্যায়ক্রমে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা এক দুই লাখ করে দশ লাখে পৌঁছে। এতে করে উখিয়া-টেকনাফ ও তুমব্রæসহ সীমান্ত এলাকার অধিবাসীদের উপর এই বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রচন্ড চাপ পড়ে। প্রভাব পড়ে পরিবেশের উপর, মাছ-তরি-তরকারীসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের উপর।
পাশাপাশি দেখা গেছে, রোহিঙ্গা ও রোহিঙ্গা শিবির গুলোকে কেন্দ্র শুরু হয়েছে জমজমাট ব্যবসা-বাণিজ্য। সৃষ্টি ক্ষেত্র তৈরী হয়েছে নতুন কর্মসংস্থানের। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও সেনাবাহিনীর পাশাপাশি দেশী-বিদেশী শতাধিক সংগঠন এবং গুরুত্বপুর্ণ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান বিশাল এই রোহিঙ্গা জণগোষ্ঠীর মাঝে ত্রাণ কাজ পরিচালনা, চিকিৎসা ও পূনর্বাসনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে শেড নির্মাণ, সড়ক নির্মাণ, টিউব ওয়েল স্থাপন, লেট্রিন স্থাপন, মসজিদ-মাদরাসা ও স্কুল স্থাপনসহ বিভিন্ন কাজে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এতে যেমন শত শত শিক্ষিত অর্ধশিক্ষিত যুবকদের কর্মসংস্থান হচ্ছে, একইভাবে শত শত মানুষ বিভিন্ন ধরণের নির্মাণ উপকরণ সরবরাহ করে অর্থিকভাবে সচ্ছল হওয়ারও সুযোগ পাচ্ছে।
উখিয়া পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গফুরুদ্দিন চৌধুরী জানান, এই এলাকায় রোহিঙ্গাদের ব্যাপক আগমনে এলাকার পরিবেশ ও অর্থনীতির উপর ব্যাপক চাপ পড়েছে। এলাকার জনগণের কর্মসংস্থান হলে এর কিছুটা লাঘব হতে পারে। তবে দেশের অন্যান্য এলাকার চেয়ে এই এলাকার জনগণকে বেশী করে কাজে লাগানোর কথাও তিনি বলেন।
সাবেক চেয়ারম্যান নূরুল কবির চৌধুরী জানান, ব্যাপক রোহিঙ্গা আগমনের কারণে এলাকার মানুষ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পাশাপাশি এখন অনেক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। এতে এলাকার লোকজনকে বেশী করে কাজে লাগালে তারা কিছুটা হলেও ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে।
এদিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্থানীয় যুবকদের গতকাল উখিয়ার কোর্টবাজারে মানববন্ধন করে স্থানীয় একটি সংগঠন। তাদের দাবি রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয়রা বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তাই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাজের ক্ষেত্রে অন্যান্য এলাকার চেয়ে স্থানীয়দের অগ্রাধিকার দিতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ