Inqilab Logo

রোববার, ১৬ জুন ২০২৪, ০২ আষাঢ় ১৪৩১, ০৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

প্রধান বিচারপতির ছুটি অস্বাভাবিক নয় -ওবায়দুল কাদের

খালেদা ও তারেক মিলে শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছেন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার ছুটিতে যাওয়া সংবিধান অনুযায়ী হয়েছে দাবি করে এটা অস্বাভাবিক কিছু না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের
গতকাল মঙ্গলবার বিকালে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে এক যৌথ সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ছুটি নিতে প্রধান বিচারপতিকে প্রচন্ড চাপে বাধ্য করা হয়েছে বিএনপির এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধান বিচারপতির বিষয়টি আইনমন্ত্রী সরকারের অবস্থান পরিস্কার করেছেন। এখানে বারবার কথা বলার প্রয়োজন নেই। যে মানুষ অসুস্থ, এটাতো স্বাভাবিক ব্যাপার। আমাদের সংবিধানের কারও অসুস্থায় কি ব্যবস্থা নিতে হবে সেই বিষয়টি ৯৭ ধারায় পরিস্কার করে দিয়েছে। কাজেই সেভাবেই হবে। এখানে অস্বাভাবিক কিছু নেই। এটা আন্দোলনের বিষয় নয়, আইনগত বিষয়।
তিনি বলেন, যে দল থেকে এ অভিযোগ করা হচ্ছে সেই দলের নেত্রী কি কারণে এতদিন বিদেশে আছেন? অসুস্থতার কথাইতো বলেছিলেন। সময় ছিলো দুইমাস। এখন দুই মাস পেরিয়ে তিনমাস, তিনমাসের পরেও আরও কয়েকদিন। তিনি এখনও দেশে এলেন না।
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে বিএনপি নেত্রীর সমালোচনা করে কাদের বলেন, রোহিঙ্গা সংকটে আজকে সারা দুনিয়ায় আলোড়ন। সেই আলোড়ন আমরা বিএনপি চেয়ারপারসনের মধ্যে পেলাম না। সংকটের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত আমাদের পার্টি, আমি নিজেই শেখ হাসিনার নির্দেশে রোহিঙ্গাদের মাঝে পড়ে আছি। লোক দেখানো ফটোসেশনের জন্য তাদের দলের কেউ কেউ সেখানে গেছেন।
কাদের বলেন, আমি সেখানে ২০ দিন ছিলাম। আর মির্জা ফখরুল সাহেব গেলেন মাত্র একদিন। আর একদিন গিয়েও শুধু অভিযোগ করলেন। সারা দুনিয়া বলছে, সরকার সফল আর বিএনপি বলছে সরকার ব্যর্থ। দেশের জনগণ বলছে এ সংকটে সময়োচিত নেতৃত্ব দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। কিন্তু এ প্রশংসা বিএনপি করতে পারেনি।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, নেতিবাচক রাজনীতি করতে করতে বিএনপি যেভাবে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে আমার কাছে মনে হয় কখন যে লাইফ সাপোর্টে নিয়ে যেতে হয় ! সেই অবস্থায় আসতে এ দলের বেশি বাকী নেই।
ওবায়দুল কাদের অভিযোগ করেন, লন্ডনে বসে বেগম জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমান কি ষড়যন্ত্রের জাল বুনছেন, তা জাতি জানতে চায়। এর তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। তদন্তে সাহায্য করার জন্য স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড, এমআই সিক্সসহ বৃটিশ গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে আমরা অনুরোধ করছি।
এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দুইজনে মিলে শেখ হাসিনাকে হত্যা করার জন্য ষড়যন্ত্রের জাল বুনছেন। শেখ হাসিনার সরকারকে হঠানোর জন্য। আমরা মনে করি, এর সঠিক তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। তদন্তে সহযোগিতার জন্য স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড, বৃটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআই সিক্সের সাহায্য চায়।
এ সময় ওবায়দুল কাদের জানান, জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন শেষে যুক্তরাষ্ট্র সফর করে আগামী ৭ অক্টোবর দেশে ফেরার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নাগরিক সংবর্ধনা দেয়া হবে। তিনি বলেন, আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৭ অক্টোবর লন্ডন হয়ে সিলেট বিমানবন্দর দিয়ে সকাল সাড়ে দশটায় বাংলাদেশ বিমানে ঢাকায় পৌছাবেন।
কাদের বলেন, তিনি এবারো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বাংলায় বক্তব্য দিয়েছেন। আজকে রোহিঙ্গা স্রোত গোটা জাতীয় জীবনে প্রভাব ফেলেছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশে শরনার্থী প্রবেশে প্রথম ধাপে বাধা দেয়, আর বাংলাদেশের অসম সাহসী বঙ্গবন্ধু কন্যা রোহিঙ্গা প্রবেশে আমাদের সীমান্ত খুলে দিয়েছে। তিনি বলেছেন মানুষকে বাঁচাতে হবে, এটা একটা জাতিগত নিধন। এটা একটা গণহত্যা। এখানে শিশু, নর-নারী বিপন্ন মানুষকে আমরা সাগরে ফেলে দিতে পারি না।
কোন ধরণের জনদূর্ভোগ সৃষ্টি না করে এই সংবর্ধনা দেয়া হবে বলে জানিয়ে সড়ক পরিবহণমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের অধিবেশনে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের নিকট প্রশংসা কুড়িয়েছে। সারা দুনিয়া, বিশ্ববাসী শেখ হাসিনার এই সাহসী সিদ্ধান্ত এবং মনের উদার চিত্ততার প্রশংসা করেছে। এটা বাঙ্গালী জাতির গর্বের বিষয়। রোহিঙ্গাদের সাথে আজকে বাংলাদেশ যে আচরণ করেছে এটা গোটা বিশ্বে বিরল ঘটনা।
তিনি বলেন, আর এই জন্য আমরা বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশে ফেরার দিন সংবর্ধনা দিব। সঙ্গে দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরাও তাকে সংবর্ধনা জানাতে বিমানবন্দরে যাবে। দেশের সাধারণ মানুষ ও দলীয় নেতাকর্মীরা গণভবন থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত রাস্তার দুপাশে দাড়িয়ে শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা ও অভিবাদন জানাবে।
যৌথসভা ও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, একেএম এনামুল হক শামীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও আওয়ামী লীগ নেতা আফজাল হোসেন, শাম্মী আহমেদ, দেলোয়ার হোসেন, আব্দুস সবুর, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ, যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার, সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ওবায়দুল কাদের


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ