বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রধারী বাড়ছে কুমিল্লায়। সন্ত্রাসী, অপহরণকারী, ডাকাত. ছিনতাইকারীদের হাতে শোভা পাচ্ছে পিস্তল, রিভলবার, এলজি, গাইপগানসহ নানা প্রকারের আগ্নেয়াস্ত্র। আড়াই মাসে থানা পুলিশ, র্যাব, ডিবি পুলিশ বিভিন্ন প্রকারের ১২টি আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি, কার্তুজ, ম্যাগজিনসহ ১৪ জন অস্ত্রবাজকে আটক করেছে। এরপরও অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ী ও অস্ত্রবাজ সন্ত্রাসীরা থেমে নেই। দিন দিন বেড়েই চলেছে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার। কুমিল্লার অন্ততঃ ৩০টি সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে এ অঞ্চলে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের অনুপ্রবেশ ঘটে থাকে।
কুমিল্লায় অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার ঘিরে গত আড়াই মাসে অপহরণ, ছিনতাই, ডাকাতি, সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মতো অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। আর এই আড়াই মাসে কুমিল্লার কয়েকটি উপজেলা ও নগরী থেকে বেশ কিছু অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র এবং গুলি, ম্যাগজিন উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ, র্যাব ও ডিবি পুলিশ। গত ২৮ জানুয়ারি কুমিল্লার শীর্ষ সন্ত্রাসী ভাটপাড়া চৌমুহনীর টেংকু হানিফকে নগরীর বাখরাবাদ এলাকা থেকে ২টি রাইফেলসহ আটক করে ডিবি পুলিশ। ৪ ফেব্রæয়ারি বুড়িচং উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রাম থেকে হেদায়েত উল্লাহ সাগর নামে অপহরণকারীকে একটি শুটারগানসহ ডিবি পুলিম আটক করে। ১০ ফেব্রæয়ারি সদর উপজেলার আড়াইওরা গ্রাম থেকে জাহাঙ্গীর ও বিক্রম নামে ২ সন্ত্রাসীকে বিদেশি পিস্তলসহ আটক করে ডিবি পুলিশ। ১১ ফেব্রæয়ারি হোমনা উপজেলা সদরের চৌরাস্তা থেকে স্থানীয় থানা পুলিশ এলজি, পাইপগানসহ ৬ ডাকাতকে আটক করে। ২৩ ফেব্রæয়ারি বুড়িচং উপজেলার ইছাপুরা গ্রাম থেকে ১টি রিভলবারসহ মিজান নামে এক অপহরণকারীকে আটক করে ডিবি পুলিশ। ৪ মার্চ চৌদ্দগ্রাম উপজেলার খাটরা গ্রাম থেকে মীর আহাম্মদ টোয়ান নামে এক অস্ত্র ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীকে একটি এলজিসহ আটক করে কুমিল্লা র্যাব-১১ এর সদস্যরা। ১০ মার্চ কুমিল্লা র্যাব-১১ এর সদস্যরা নগরীর দক্ষিণ চর্থা এলাকা থেকে ২টি পাইপগানসহ আনিসুর রহমান মিঠু নামে এক সন্ত্রাসীকে আটক করে। ১১ মার্চ নগরীর ঢুলিপাড়া এলাকা থেকে ঠাকুরপাড়ার বাসিন্দা সামদানী নামে এক সন্ত্রাসী ও ছিনতাইকারীতে ১টি রিভলবারসহ আটক করে ডিবি পুলিশ।
কুমিল্লা ভারত সীমান্ত ঘেঁষা জেলা। ফলে এখানকার সীমান্তবর্তী চিহ্নিত এলাকা দিয়ে বিভিন্ন কৌশলে পিস্তল, রিভলবার, এলজি এবং এসব অস্ত্র ব্যবহারের যাবতীয় উপাদান অস্ত্র ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে পৌঁছে যাচ্ছে সন্ত্রাসী, অপহরণকারী ছিনতাইকারী ও ক্যাডারদের হাতে। আবার চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার থেকেও সড়ক ও রেলপথে আসা বিদেশি অস্ত্র কুমিল্লায় বেচাকেনা হয়ে থাকে। এছাড়াও কুমিল্লার যেসব উপজেলার গ্রামীণ জনপদে লৌহজাত দ্রব্যের ওয়েলডিং বা লেদ মেশিন কারখানা রয়েছে সেখানে পাইপগান, কাটা রাইফেলসহ দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি করার সম্ভাবনা রয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ভারত থেকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গোমারবাড়ি, আমানগন্ডা, ছফুয়া, জগন্নাথদিঘি, গোলপাশা, বসন্তপুর, সাতবাড়িয়া, কাইচ্ছুটি ও পদুয়া, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শশীদল, আশাবাড়ি, নয়নপুর, বুড়িচং উপজেলার চড়ানল, বারেশ্বর, সংকুচাইল, রাজাপুর, আদর্শ সদর উপজেলার বিবিরবাজার, বৌয়ারা, গোলাবাড়ি, শাহাপুর, শিবের বাজার, সদর দক্ষিণ উপজেলার একবালিয়া, তালপট্টি, সুবর্ণপুর, চৌয়ারা, যশপুর, বৌয়ারা, শ্রীপুর, কনেশতলাসহ ৩০টি সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্রের অনুপ্রবেশ ঘটে কুমিল্লায়। এ সহজ লভ্যতার কারণে সাম্প্রতিক সময়ে কুমিল্লায় অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রধারির সংখ্যাও বেড়েছে।
কুমিল্লা নগরীর কয়েকটি চিহ্নিত এলাকায় অস্ত্রবাজ সন্ত্রাসী ও অস্ত্র ব্যবসায়ী রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে এসব এলাকার তালিকাও রয়েছে। তার মধ্যে অস্ত্র ভাÐার থাকতে পারে নগরীর এমন কিছু উল্লেখযোগ্য এলাকা হচ্ছে-ছাতিপট্টি, শুভপুর, গর্জনখোলা পূর্বপাড়া, বজ্রপুর, বিষ্ণুপুর, মুন্সেফ কোয়াটার, কারিয়াজুরি, ছোটরা, দক্ষিণ চর্থা, রেইসকোর্স, শাসনগাছা, ভাটপাড়া, ঠাকুরপাড়া, নুরপুর, সংরাইশ, সুজানগর, সাতোরা, ধর্মপুর, দুর্গাপুর, সদর দক্ষিণের শ্রীভল্লবপুরের পূর্ব ও পশ্চিম পাড়া, উত্তর রামপুরের পূর্বপাড়া ও শ্রীমন্তপুর। বিভিন্ন সময়ে আটক অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র বহনকারী সন্ত্রাসী ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে অনেক তথ্যই বের করে থাকেন। তার মধ্যে সীমান্তপথে এবং চট্টগ্রাম, কক্সবাজার থেকে এসব আগ্নেয়াস্ত্র কুমিল্লায় আসে বলে জানা যায়। আবার আটককৃতরা কখনো করে থাকে বেচাবিক্রি ছাড়াও অস্ত্র ব্যবসায়ীদের অনেকে ডাকাতি, ছিনতাই, অপহরণ, সংঘর্ষসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে পিস্তল, রিভলবার, এলজি ভাড়াও দিয়ে থাকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।