পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের আজ ৭২তম জন্মদিন। বরেণ্য এই রাজনীতিক ১৯৪৬ সালের ১ অক্টোবর কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গয়েশপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। খ্যাতিমান এই রাজনীতিবিদ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, প্রথিতযশা ভূ-বিজ্ঞানী একই সাথে লেখক ও গবেষক।
ড. খন্দকার মোশাররফ দাউদকান্দি হাইস্কুল থেকে ১৯৬২ সালে মেট্রিকুলেশন, চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ থেকে ১৯৬৪ সালে আইএসসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৮ সালে এমএসসি ডিগ্রী লাভ করেন। এরপর ১৯৭০ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইম্পেরিয়াল কলেজ থেকে এমএসসি, ১৯৭৩ সালে ডিআইসি ডিপ্লোমা এবং ১৯৭৪ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ.ডি ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৭৫ সালে বিলাত থেকে দেশে ফিরে পুনরায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ‚-তত্ত¡ বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসাবে যোগদান করেন এবং পর্যায়ক্রমে অধ্যাপক পদে উন্নীত হন। ১৯৮৭ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূ-তত্ত¡ বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবার জন্য তিনি ঢাবি’র শিক্ষকতা থেকে পদত্যাগ করেন।
শিক্ষাজীবনে তিনি ১৯৬৪-৬৫ শিক্ষাবর্ষে ঢাবি’র সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের এ.জি.এস ও ১৯৬৭-৬৮ শিক্ষাবর্ষে হাজী মুহাম্মদ মহসিন হলের ভি.পি নির্বাচিত হন। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে বিশ্ব জনমত গড়ে তুলতে তিনি ১৯৭১-এ বিলাত প্রবাসীদের সংগঠিত করেন এবং ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক হিসেবে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দেন। জাতীয় স্বার্থ রক্ষার আন্দোলনে ড. মোশাররফ সব সময় অগ্রনিভ’মিকা পালন করেছেন। তিনি বিভিন্ন সরকারের প্রতিহিংসার শিকার হয়ে রাজনৈতিক মামলায় ১৯৮৬, ১৯৯৬, ২০০৭, ২০১২ ও ২০১৪ সালে গ্রেফতার হয়ে প্রায় ৫ বছর কারান্তরীণ ছিলেন।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আহবানে সাড়া দিয়ে ঢাবি’র এই মেধাবী শিক্ষক ১৯৭৯ সালে বিএনপিতে যোগদান করেন। তিনি বিএনপি’র বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৪ সাল থেকে ড. মোশাররফ বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য পদে অধিষ্ঠিত রয়েছেন। তিনি কুমিল্লা-২ আসন থেকে ৪ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯১-’৯৬ সময়ে বিএনপি সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রী, ১৬৯৬ সালে স্বল্প মেয়াদে সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ২০০১-০৬ সময়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী হিসেবে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেন।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন উন্নয়নের এক স্বাপ্নিক পুরুষ। তিনি উন্নয়ন ভাবনার রাজনীতিবিদ। তিনি অনগ্রসর দাউদকান্দি, মেঘনা ও তিতাসকে যুগান্তকারী উন্নয়নের মাধ্যমে এগিয়ে নিয়েছেন। তিনি ‘প্লাবণ ভূমিতে মৎস্য চাষ’ পদ্ধতির উদ্ভাবক। এই উদ্ভাবনের মাধ্যমে ড. মোশাররফ বাংলাদেশে মৎস্য খাতের উন্নয়নে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। এই মৎস্য চাষ পদ্ধতি ‘দাউদকান্দি মডেল’ হিসেবে সরকারী স্বীকৃতি পেয়েছে। মৎস্য ক্ষেত্রে অবদানের জন্য ড. মোশাররফ জাতীয় পুরস্কার স্বর্ণপদক লাভ করেন। তিনি ২০০৩ সালে ৫৬তম বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনের সভাপতি নির্বাচিত হন। তার সভাপতিত্বে ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোবাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) গৃহীত হয়। বাংলাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন এবং বিশ্বব্যাপী তামাক বিরোধী আন্দোলনে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ড. মোশাররফকে ‘ওয়ার্ল্ড নো টোবাকো এওয়ার্ড-২০০৪’ পদকে ভূষিত করেন। ব্যাক্তি জীবনে ড. খন্দকার মোশাররফ ২ পুত্র ও ১ কন্যা সন্তানের জনক।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ৭২ তম জন্ম দিন উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন শুভেচ্ছা জানিয়েছে। ঢাকাস্থ দাউদ কান্দি উপজেলা জাতীয়তাবাদী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক জসীম উদ্দিন আহমেদ এক শুভেচ্ছা বার্তায় ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘ জীবন কামনা করেন। নির্বাচনী এলাকায় তারই প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের জন্মদিন উদযাপিত হবে। এ ছাড়া ঢাকায় স্ত্রী ছেলে-মেয়ে ও নাতি-নাতনীদের নিয়ে গুলশানের নিজ বাসভবনে ঘরোয়াভাবে জন্মদিন উদযাপিত হবে। প্রবীন এই রাজনীতিবিদের জন্মদিনে দৈনিক ইনকিলাবের পক্ষ থেকেও শুভেচ্ছা রইল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।