Inqilab Logo

বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঘানার পর্যটন শিল্পে বানর

| প্রকাশের সময় : ১ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম


ইনকিলাব ডেস্ক : প্রবৃদ্ধির চাপে পরিবেশ দূষণ, অবাধে বন্যাপ্রাণী নিধনে দুনিয়ার বেশির ভাগ দেশ যেখানে দিশেহারা, সেখানে আফ্রিকার দেশ ঘানা বন্যপ্রাণীদের সঙ্গে প্রগাঢ় মেলবন্ধনে তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করছে। সুপ্রাচীনকাল থেকে বানরের সঙ্গে ওই অঞ্চলের মানুষের রয়েছে গভীর সুসম্পর্ক, আর তা থেকেই ফায়দা নিয়ে তারা গড়ে তুলেছেন লাভজনক পর্যটন ব্যাবসা। ঘানার ভোল্টা অঞ্চলের মানুষ তাদের এলাকার নিকটবর্তী ঘন জঙ্গলে বসবাস করা প্রায় এক হাজার মোনা বানরের আধ্যাত্মিক শক্তির কিংবদন্তি শুনে শুনে বড় হয়েছে। তবে আধুনিক ভোল্টাবাসী সেই আধ্যাত্মিক শক্তি কাজে লাগিয়ে আয়-উপার্জন বাড়ানোর রাস্তা খুঁজে নিয়েছে। এসব দৃষ্টিনন্দন বানরের কার্যকলাপ দেখার আকর্ষণে দেশ-বিদেশ থেকে এখানে পর্যটকরা ভিড় করছেন আর অঞ্চলটি হয়ে উঠেছে ইকো-ট্যুরিজমের প্রাণকেন্দ্র। তাফি এটম মাংকি অভয়ারণ্যের ব্যবস্থাপক ফ্রান্সিস আকুয়াভে বলেন, ১৯৮০ সালের দিকে দেশটির ঐতিহ্যবাহী বিশ্বাসগুলো যখন খ্রিস্টধর্ম গুঁড়িয়ে দেয়া শুরু করল, তার আগ পর্যন্ত বানর ও জঙ্গলকে এলাকার মানুষ অত্যন্ত পবিত্ররূপে সম্মান করত। ঘানা ও ক্যামেরুনের মাঝে যে লাল, বাদামি আর সাদা বানরগুলো পাওয়া যেত, সেগুলোকে নির্বিচারে নিধন করা শুরু হলো আর অবাধে গাছ কাটা চলতে লাগল। তবে সেটির পরিবর্তন হয় ১৯৯৬ সালে, যখন গ্রামটি ইকো-ট্যুরিজমের একটি আকর্ষণে পরিণত হয়। এখন টোগো সীমান্তের কাছে এ অভয়ারণ্যটি হাজার হাজার লোক পরিদর্শন করে। এদের কেউ কেউ গ্রামটিতে থেকে গ্রাম্যজীবন সম্বন্ধেও ধারণা লাভ করেন। পর্যটন খাত থেকে আসা অর্থ দিয়ে এলাকাটিতে স্বাস্থ্য ক্লিনিক স্থাপন করা হয়েছে, বিশুদ্ধ পানির জন্য গভীর কুয়া খনন করা হয়েছে এবং স্কুল বিল্ডিং মেরামত করা হয়েছে। এএফপিকে আকুয়াভে বলেন, এলাকার লোকজন এসব বানরের সঙ্গে ভীষণ বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করেন। কারণ সেগুলো তাদের পর্যটন ব্যবসায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তিনি আরো বলেন, বানররা আমাদের বন্ধু, তারা আমাদের ভাই, আমাদের বোন। ইকো-ট্যুরিজিমের লক্ষ্যে ঘানজুড়ে অনেকগুলো অভয়ারণ্য স্থাপন করলেও এদের মধ্যে হাতে গোনা সফল একটি হচ্ছে তাফি এটোম। অন্য কিছু অভয়ারণ্যের মধ্যে আছে উত্তর ঘানায় জলপ্রপাত-সমৃদ্ধ এলাকায় গন্ডারের অভয়ারণ্য এবং পূর্ব ঘানা উপকূলে কচ্ছপ-দর্শন করার ভ্রমণ পরিকল্পনা, যেগুলোর উদ্দেশ্য এ বিপন্ন প্রাণীগুলোর সংরক্ষণ করা। অক্সফোর্ড বিজনেস রিসার্চ কনসালট্যান্সির এক সা¤প্রতিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, যদিও ঘানাতে ইকো-পর্যটন এখনও প্রাথমিক অবস্থায় আছে, তবে এর ‘গুরুতর সম্ভাবনা’ আছে। কারণ দেশটিতে বিদেশী পর্যটকের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। বিশ্বব্যাংক বলেছে, ২০১৫ সালে দেশটিতে ৮ লাখ ৯৭ হাজার পর্যটক ভ্রমণ করেছেন। তবে ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম কাউন্সিলের (ডবিøউটিটিসি) হিসাবে এ সংখ্যাটি প্রায় ১৩ লাখ এবং ২০২৭ সাল নাগাদ সেটি ২০ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে। ২০১৬ সালে ভ্রমণ ও পর্যটন খাত সরাসরি দুই লাখ অষ্টাশি হাজার কর্মসংস্থান তৈরি করেছে এবং ২০১৭ সালের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে যে, ৪ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে এটি ৩ লাখ ১ হাজার ৫০০তে পৌঁছবে। এএফপি।



 

Show all comments
  • SHAUKAUT ১ অক্টোবর, ২০১৭, ৩:১৯ এএম says : 0
    er porwo ki amaderdesher shikkha montronaloyeer ei bepare kono uddheg nite parbe er jonneito kora hoy ministry shutorang amaderke midiar maddhome jodi ektu kichu kora jete pare er jonneito patrotic jote jobe shobaike tobei kora shomvhob shonar bangla.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ