Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তবুও নায়ক জাফর ইকবাল

| প্রকাশের সময় : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

 স্পোর্টস রিপোর্টার : এ টুর্নামেন্টে কিছু পুরোনো হিসেব জমা ছিল বাংলাদেশের। এই থিম্পুতে এক বছর আগে বাংলাদেশকে প্রথম হারিয়েছিল ভুটান। আগস্টে নেপালে সে হারের বদলা নিয়েছিল কিশোর ফুটবলাররা ভুটানের জালে দুই ম্যাচে ১১ গোল দিয়ে। মামুনুল-এমিলিদের কিছুটা দায়মুক্ত করেছিলেন ফাহিম-মিরাজ মোল্লারা। এবার করলেন জাফর ইকবালরা। ফুটবলে ভারতের বিপক্ষে বরাবরই খারাপ ফল হয় বাংলাদেশের। কিন্তু এ আসরে দক্ষিণ এশিয়ার পরাশাক্তিকে অবিশ্বাস্য জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। সব কিছুই ঠিকঠাক ছিল। শুধু ট্রফিটাই মিললো না।

স্বাগতিক ভুটানকে ২-০ গোলে হারিয়ে নিজেদের কাজটা সেরে রেখেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু অপর ম্যাচে ভারতকে একই ব্যবধানে হারিয়ে বাংলাদেশের সমান পয়েন্ট নিয়েও মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে থাকায় অনুর্ধ্ব-১৮ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা দখলে নিয়েছে নেপাল। রানার্সআপ হয়েই তাই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। আর ভারত পেয়েছে তৃতীয়স্থান।
দিনের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও ভুটান। সুযোগ্য স্ট্রাইকারের অভাবে গোলের দেখা পাচ্ছিল না কোন দলই। অবশেষে মাঠে নামেন বাংলাদেশের কৃতি স্ট্রাইকার জাফর ইকবাল। ৫৪তম মিনিটে স্বাধীনের বদলি হিসেবে মাঠে নেমে সবাইকে চমকে দেন জাফর। মাত্র ৫ মিনিটের ব্যবধানে দু’গোল করে বাংলাদেশকে শুধু জয়ই নয় শিরোপা জেতারও স্বপ্ন দেখান জাফর ইকবাল।
সুপার সাব জাফর ইকবাল, নায়ক জাফর ইকবাল- থিম্পুতে শেষ হওয়া সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ চ্যাম্পিয়নশিপে এ বিশেষণগুলো বসে গেছে বাংলাদেশের এ ফরোয়ার্ডের নামের পাশে। জোড়া গোল করে ভারতকে হারানোর নায়ক, জোড়া গোল করে শেষ ম্যাচে ভুটানকে হারানোর নায়কও তিনি। টেবিলের মারপ্যাচে বাংলাদেশ শিরোপাবঞ্চিত হলেও জাফর ইকবাল ঠিকই ঘরে ফিরছেন শির উঁচু করে। ৪ ম্যাচে ৫ গোল করে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতাও যে তিনি।
শেষ ম্যাচে জাফর ইকবালকে একাদশে রাখেননি কোচ মাহবুব হোসেন রক্সি। আগের তিন ম্যাচে তিন গোল করা স্ট্রাইকারকে কেন একাদশের বাইরে রাখা হয়েছিল কোচকে সে প্রশ্ন শুনতে হয়েছে খেলা শেষে। রক্সি বলেছেন তার কৌশলের কথা ‘জানতাম ভুটান আমাদের বিপক্ষে ডিফেন্স জমাট রেখে খেলবে। তাদের রক্ষণে আমাদের জায়গা দিতে চাইবে না। কিন্তু কতক্ষণ? আমি জাফর ইকবাল নামের অস্ত্রটা জমা রেখেছিলাম দ্বিতীয়ার্ধের জন্য। দলে নতুন রক্ত দিতেই বিশ্রামে ছিলেন তিনি। আমার কৌশল সফল। ভুটানকে হারিয়ে আমাদের কাজটা করে রেখেছিলাম। কিন্তু বাকিটাতো আর আমাদের হাতে ছিল না।’
চার ম্যাচের একটিতে গোল পাননি জাফর ইকবাল। নেপালের বিপক্ষে ওই একটি ম্যাচটি হেরেছে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত সেই নেপালই ভেঙ্গে দিলো বাংলাদেশের স্বপ্ন। নিজেদের মুখোমুখিতে বাংলাদেশকে হারিয়ে লাল-সবুজ জার্সিধারীদের শিরোপা জয়ের পথে প্রথম কাঁটা বিছিয়েছিল নেপাল। শেষ ম্যাচে ভারতকে হারিয়ে হিমালয়ের দেশটিই নিভিয়ে দিলো বাংলাদেশের জ্বলে থাকা আসা।
নেপাল-ভারতের ম্যাচ দেখে হয়তো অনেকেই মাথার চুল ছিঁড়েছেন, হতাশায় পুড়েছেন; কিন্তু জাফর ইকবালের কষ্টটা যে আরো বেশি! এমন একটি টুর্নামেন্ট পার করেও তিনি সতীর্থদের নিয়ে শেষ উচ্ছ¡াসটা করতে পারলেন না। আরো মধুময় হলো না নিজের ক্যারিয়ারে যোগ হওয়া এ অর্জনটা।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ