Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোহিঙ্গা সঙ্কট আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ -স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। বলেছেন, আমরা যুদ্ধে বিশ্বাস করি না, এই সংকট কূটনৈতিকভাবেই সমাধান করা হবে। রোহিঙ্গাদের মধ্যে অনেক ধরনের লোক আসছে। এটা আমাদের নিরাপত্তার জন্য অনেক বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। গতকাল বুধবার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। রোহিঙ্গা গণহত্যার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থান: সরকার, নাগরিক সমাজ ও আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের করণীয় শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে আমরা সঠিকভাবেই এগিয়ে চলছি। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাতে হবে, আর সেই কাজটিই করছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। এই সংকট সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর জাতিসংঘে উত্থাপিত পাঁচ দফা বাস্তবায়ন করতে হবে। আমাদের কূটনৈতিক তৎপরতায় বিশ্বজনমত আমাদের সাথে আছে, আমরা সফল হবো। আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, আরাকান সাম্রাজ্য আজকের নয়, শত বছর আগের থেকেই এ রোহিঙ্গারা রয়েছে আরাকানে। মিয়ানমারে ১৩৫টি জাতি গোষ্ঠী বসবাস করে। মিয়ানমার সরকার এখন রোহিঙ্গাদের স্বীকার করছে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্ত এতই দুর্গম যে পাহারা দেয়ার ব্যবস্থা আগে ছিল না। সেখানে অনপ্র্রবেশ ঠেকাতে এখন সীমান্ত চৌকি স্থাপন করছি। সেন্টমার্টিনের সাইটও অনেক দুর্গম, নাফ নদীর অর্ধেক মিয়ানমারের আর অর্ধেক আমাদের। আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, আমাদের সতর্ক দৃষ্টি থাকার পরেও চার লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা ঢুকে পড়েছে। দীর্ঘদিন থেকেই রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে এসেছে, সব এক করলে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা প্রায় ৯ লাখ ছাড়িয়ে যাবে। টেকনাফ উখিয়ায় চার লাখের সাথে আরও নয় লাখ মানুষ বসবাস করা কঠিন। তারপরও আমাদের প্রধানমন্ত্রী একাত্তরের কথা স্মরণ করে মানবিকভাবে তাদের আশ্রয় দিয়েছেন। প্রথমে রোহিঙ্গাদের পুশব্যাক করলেও যখন দেখা গেল সেনাবাহিনী গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিচ্ছে, হেলিকপ্টার দিয়ে আর্টিলারি হামলা চালাচ্ছে তখন প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছেন। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় সারাবিশ্ব প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করছে জানিয়ে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের দেখতে গেলেন, সেখানে রোহিঙ্গাদের ব্যাথায় ব্যথিত। সে এক অদ্ভূত দৃশ্য দেখলাম। আপাতত এই অসহায় মানুষগুলোকে আশ্রয় দিতে দুই হাজার একর জমি চিহ্নিত করা হয়েছে, তাদের সেখানে নিয়ে যাব। আলোচনায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, সবচেয়ে বড় শরণার্থী তিন লাখ ৬৪ হাজার, সেটা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আছে। আর মাত্র পনের দিনে চার লাখ ৮০ হাজার শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। এটার জন্য আমরা প্রস্তত ছিলাম না। রোহিঙ্গা ইস্যুকে একটি গোষ্ঠী ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে জানিয়ে শাহরিয়ার আলম বলেন, এই রোহিঙ্গাদেরকে একটি গোষ্ঠী রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে। রোহিঙ্গা ইস্যুকে নিয়ে এবারও বিএনপি ভেবেছিল বড় রাজনীতি করতে পারবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নিজের দৃঢ়তায় এই ইস্যুটা আন্তর্জাতিকীকরণ করলেন। এই সফলতা তাদের সহ্য হচ্ছে না। শাহরিয়ার আলম বলেন, সরকার মানবিকতার দিক থেকে রোহিঙ্গাদের সাহায্য সহযোগিতা করছে। এর পাশাপাশি কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। আন্তর্জাতিক স¤প্রদায় সবাই বাংলাদেশের সাথে আছে। এখন পর্যন্ত পৃথিবীর কোনো রাষ্ট্রই রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের নেয়া পদক্ষেপের সমালোচনা করেনি। আলোচনায় আরও অংশ নেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আবদুর রশিদ, সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) অনুপম চাকমা, মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ