পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কৃত্রিমভাবে (চাল খাদ্য-পণ্যেদ্রব্যদি) খাদ্য সংকট অনুসন্ধানে মাঠে নামছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর বিশেষ টিম। চালসহ নিত্যপণ্য খাদ্য দ্রব্যের দাম বাড়িয়ে যারা খাদ্য সংকট তৈরি করে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তাদেরকে সনাক্ত করে করবে এ টিম। ইতোমধ্যে তিন সদস্য বিশিষ্ট্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কমিশনে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এরপরই শুরু হবে সিন্ডিকেটদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, চাল সিন্ডিকেটের পুরো চক্রটিকে আইনের আওতায় আনা হবে। জনগণের পকেটের টাকা আত্মসাৎকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এই অবৈধ মজুতদারির সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট থাকবেন, তাঁদের বিরুদ্দে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। চাল নিয়ে কারসাজির সঙ্গে খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জড়িত রয়েছে বলে মন্তব্য করেন গত মঙ্গলবার দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। একই সঙ্গে তিনি বলেছিলেন, দ্রæত তদন্ত কমিঠি গঠন করা হবে। ঠিক এর একদিন পর এ কমিটির গঠন করল দুদক।
এ প্রসঙ্গে দুদক উপ-পরিচালক কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য ইনকিলাবকে বলেন, দুদকের উপ-পরিচালক মো. আহমার-উজ্জামানকে কমিটির নেতৃত্ব তিন সদস্য বিশিষ্ট্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে চাল নিয়ে কথা বলেন খাদ্যমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী এবং কৃষিমন্ত্রীও। পরিস্থিতি এতটাই নাজুক পর্যায়ে গড়ায় যে, চাল সংকট নিয়ে সংসদেও আলোচনা করতে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীও চাল নিয়ে সংসদে কথা বলেছেন।
চলতি বছর কাজের বিনিময়ের খাদ্য কর্মূসূচিতে নানা অনিয়ম সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে দুদক অভিযানে নামে। এতেও জনপ্রতিনিধি ও ঠিকাদাররা জড়িত ছিল। এমন চিত্র উঠে আসে দুদকের অনুসন্ধানে। একইভাবে খাদ্য সংকটে সরকারি কর্মকর্তারা জড়িত রয়েছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক সিন্ডিকেটদের বিরুদ্ধে মাঠে নামছে।
তদন্ত কমিটি গঠন : খাদ্য বিভাগের কিছু কর্মকতা ও অসাধু প্রতিষ্ঠানের যোগসাজশে চালসহ খাদ্যপণ্য মজুদের অভিযোগ অনুসন্ধানে তিন সদস্যের কমিটি করেছে দুদক। সংস্থার উপ-পরিচালক মো. আহমার-উজ্জামানকে কমিটির নেতৃত্ব দেয়া হয়েছে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন সহকারী পরিচালক মো. সালাহ উদ্দিন ও উপ-সহকারী পরিচালক মো. সায়েদুজ্জামান।
কমিটিকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কমিশনে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। অনুসন্ধানটির তদারক কর্মকর্তা হিসেবে পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। স¤প্রতি চালের দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনে মিল মালিকসহ মজুদদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে চাল মজুদ রাখার অভিযোগ রয়েছে। আর ঘুষ নিয়ে’ অবৈধ মজুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও। কতিপয় খাদ্য সরবরাহকারী মজুদদার ব্যবসায়ী ও খাদ্য বিভাগের অসাধু কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় বেআইনিভাবে খাদ্য মজুদ করে দেশে কৃত্রিম চালের সংকট সৃষ্টির’ বিষয়ে স¤প্রতি দুদকে অভিযোগ এসেছে। এ বিষয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার কথা।
দুদক সূত্রে জানা যায়, চালের দাম বাড়িয়ে কয়েক হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে তদন্তে নামছে দুদক। এ সিন্ডিকেটে রয়েছে সরকারি কর্মকর্তা, মিল মালিক ও ব্যবসায়ী। তদন্তকালে চাল সিন্ডিকেটের পুরো চক্রটিকে আইনের আওতায় আনা হবে। কতিপয় সরকারি কর্মকর্তা এবং অবৈধভাবে খাদ্যসামগ্রী মজুদকারী ব্যবসায়ীর মধ্যে ঘুষ-দুর্নীতির মতো অনৈতিক সম্পর্কের কারণে চালসহ খাদ্যপণ্যের মূল্য বাড়ছে। এতে জনগণের পকেটের টাকা আত্মসাতকারীদের পকেটে চলে যাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে দুদক দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে খাদ্যদ্রব্য মজুদদারি প্রতিষ্ঠানের অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। এদের যোগসাজশেই বেআইনিভাবে খাদ্যদ্রব্য মজুদ করা হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে অনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন বলে দুদকে অভিযোগ এসেছে বলে সূত্রে জানা যায়। গত মঙ্গলবারই কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, অভিযোগটি অনুসন্ধান করা হবে। দ্য এসেনসিয়াল আর্টিক্যালস অ্যাক্ট পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে একটি স্বচ্ছ ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা হয়। এ অবৈধ মজুদদারির সঙ্গে যে বা যারাই জড়িত থাকবেন তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। বর্তমানে ১৭ হাজার সক্রিয় চাতাল ও হাস্কিং মিল এবং উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন সোয়া তিনশ’ অটো রাইস মিল উৎপাদনে রয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয় সারা দেশে তালিকা করে চাল নিয়ে অবৈধ ব্যবসা করাসহ সরকারকে রাষ্ট্রীয় কাজে সহায়তা না করায় ইতেমধ্যে ১৬ হাজার চালকল মালিককে কালো তালিকাভুক্ত করেছে। একই সঙ্গে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কোথায় এবং কোন কোন কর্মকর্তার এতে ব্যর্থতা রয়েছে, সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দেশে চালের অবৈধ মজুদ সিন্ডিকেটে অনেক রাঘববোয়ালসহ কয়েকশ’ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সরাসরি কারসাজির সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।
কারসাজিতে ব্যাংকেরও হাত রয়েছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর স্থানীয় ব্যবস্থাপক এবং খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা যোগসাজশ করে দীর্ঘ সময় ধরে চালের বাজারে অস্থিরতা তৈরি করে চলেছেন। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন ভোক্তারা।
সূত্র জানা যায়, ধান-চাল কেনার নামে মিল মালিকদের অবাধে ঋণ দিয়েছে ব্যাংক। মূলত ব্যাংকের স্থানীয় শাখার ব্যবস্থাপক এবং রাইস মিলাররাই এ মজুদ কারসাজির হোতা। ব্যবস্থাপকদের ম্যানেজ ফর্মুলায় নিয়ে মিলাররা ব্যাংকের কোটি কোটি টাকার ঋণ অনির্দিষ্টকালের জন্য আটকে রাখছেন। মৌসুম এলেই মিলাররা ওই ঋণের টাকায় কম দামে কৃষকের ধান-চাল কিনে নিচ্ছেন। এভাবে ব্যাংকের টাকায় মিলাররা যত্রতত্র গড়ে তুলছেন ধান-চালের মজুদ। এ সুযোগটি দিয়েছেন খাদ্য ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা। মৌসুম ফুরানোর পরও এ সিন্ডিকেট মজুদ ধরে রেখে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।