Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চাল নিয়ে চালবাজি

প্রশাসনের চোখে ধুলো দিচ্ছেন মজুদদার সিন্ডিকেট

ঈশ^রগঞ্জ (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ময়মনসিংহের ঈশ^রগঞ্জে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে চাল নিয়ে চালবাজির অভিযোগ তুলেছেন ক্রেতারা। উপজেলার ছোট বাজার গুলোতে হঠাৎ চাল ব্যবসায়ী সেজে অবৈধ মজুদদার সিন্ডিকেট গড়ে তুলার অভিযোগ উঠেছে। এমন এক সিন্ডিকেটের দেখা মিলেছে উপজেলার তারুন্দিয়া ইউনিয়নে। আইনের ফাঁক গলিয়ে এসব মজুতদাররা বিশাল অংকের চালের মুজদ গড়ে তুলার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় চাল ব্যবসায়ীরা।
জানা যায়, বর্তমান সরকার চালের বাজার স্থীতিশীল রাখতে মিল মালিক ও অবৈধ মজুদদারদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। এতে মিল মালিক ও অবৈধ মজুদদাররা পড়েছেন বিপাকে। সরকারের চোখে ধূলোদিতে বেচে নিয়েছেন বিভিন্ন কৌশল। উপজেলার তারুন্দিয়া ইউনিয়নের সাখুয়া গ্রামের আব্দুল লতিফ এর ছেলে আফজাল অর রশীদ (মুক্তা) তারাকান্দা ফিফো অটোরাইসমিলের ম্যানেজার। তিনি ফিফো অটোরাইসমিলের অতিরিক্ত মুজদ চাল নিজ এলাকায় এনে লোকানোর চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার তারুন্দিয়া ইউনিয়নে তার বাড়ী হওয়ার সুবাদে ফিফো আটোরাইস মিলের মজুত চাল এলাকায় এনে কয়েকটি স্থানে ভাগ করে তা মুজদ করছেন বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয় চাল ব্যবসায়ীরা।
বিষয়টি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পেরে গত সোবার দিবাগত রাতে তারুন্দিয়া ইউনিয়নের কয়েকটি স্থানে অভিযান চালায় উপজেলা প্রশাসন। অভিযানের এক পর্যায়ে সাখুয়া বাজারের সালামের মার্কেটে ৫১বস্তা চাল পরিত্যাক্ত অবস্থায়, ইকবালের মনোহরি দোকানের পেছনে ১৫০বস্তা ও ভারতী বাজারের ধানব্যবসায়ী সবুজ মিয়ার দোকানে ২০০ বস্তা চাল মজুদ পাওয়া যায়। তিনটি স্থানেই ৩ব্যাক্তির নামে ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেড লাইসেন্স দেখানো হয় যা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একই তারিখে নেয়া। চাল আমদানী করা হয়েছে ২১ ও ২২ আগস্ট । ইউনয়ন পরিষদের লাইসেন্স নেওয়া হয়েছে ১০ সেপ্টেম্বর । তিনটি স্থানেই ফিফো অটোরাইস মিলের চাল। সাখুয়া বাজারে ডেকুরেটর ব্যবসায়ী মামুন মাস্টার চাল বিক্রয়য়ের লাইসেন্স দেখিয়ে পরিত্যাক্ত চালগুলো তার বলে দাবি করলেও তার নিজ ঘরে কোন চাল পাওয়া যায়নি। মনোহরি দোকানের ইকবাল সে চাল আমদানী করেছে বলে দাবী করলেও তার চাল বিক্রির কোন লাইসেন্স দেখাতে পারেননি।
বিষয়টি নিয়ে ফিফো অটোরাইস মিলের ম্যানেজার আফজাল অর রশীদ মুক্তা বলেন, ফিফো অটোরাইস মিল থেকে তিনি ৬শ বস্তা চাল আমদানী করেছেন। আমদানীকৃত চাল গুলো তিনটি দোকানে রেখে বিক্রির ব্যবস্থা করেছেন। এলাকার (সাখুয়া বাজার, সরতজ বহেরা বাজার ও ভারতী বজার) তিনটি বাজারে তার তিনটি দোকান রয়েছে। সাখুয়া বাজারের দোকানটি পরিচালনা করেন তার বড় ভাই মাহাবুব অর রশীদ (মামুন) অরফে মামুন মাস্টার সেখানে দেয়া হয়েছে ২শ বস্তা চাল। সরতজ বহেরা বাজারের দোকানটি পরিচালনা করেন তার বড় ভাই মামুন এর ভাইরা ভাই সেখানে দেওয়া হয়েছে ২শ ৯০বস্তা। আর ভারতী বাজারের ধান ব্যবসায়ী সবুজ মিয়াকে দেওয়া হয়েছে ২শ বস্তা চাল। আমদানীকৃত চালের মধ্যে ৩শ বস্তা বিক্রয় করে ফেলেছেন বলে তিনি দাবী করলেও প্রতিটি দোকানে চাল মুজদ পাওয়া গেছে।
তারুন্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম জানান, তার কাছ থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিলেও কতটুকু পরিমান চাল দোকানে মজুদ রাখা যাবে সেটি তিনি জানতেন না। এখন জেনেছেন এবং বিষটি নিয়ে চাল ব্যবসায়ীদের সর্তক করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিতু মরিয়ম জানান, চাল মজুদ আছে এমন সংবাদ পেয়ে তারুন্দিয়া ইউনিয়নের কয়েকটি স্থানে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু চাল বিক্রি অব্যাহত থাকায় তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া যায়নি, দোকানদারদেরকে মজুদ না রাখার কথা বলা হয়েছে, যদি মজুদ রাখে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চাল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ