Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সেনাবাহিনী আসার পর ত্রাণ বিতরণে শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে -ওবায়দুল কাদের

স্টাফ রিপোর্টার, বান্দরবান থেকে : | প্রকাশের সময় : ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, সেনাবাহিনী আসার পর এাণ বিতরণে শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে। গতকাল বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্র সীমান্তের জিরো পয়েন্টে অবস্থানরত ১ হাজার রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ কালে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, অং সং সুচি যাই বলুক, বিশ্ব জনমতের চাপের মুখে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হবে। রোহিঙ্গা নিয়ে যে সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমাধান করতে পারবেন বলে আমরা আশাবাদী।
মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি জাতিসংঘের অধিবেশনে তার দেয়া বক্তব্যে, যে পাঁচ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেছেন তার পক্ষে এখন সারা বিশ্ব অবস্থান নিয়েছেন। ফলে রোহিঙ্গাদের মানবিক কারণে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ায় প্রাধানমন্ত্রী সারা বিশ্বে প্রশংসিতও হয়েছেন। যার কারণে দেশ বিদেশে তিনি মাদার অফ হিউমিনিটি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন । ত্রাণ বিতরণের পূর্বে সেতুমন্ত্রী তুমব্রæ কোনাপাড়ার খালের ওপারে জিরো পয়েন্টে অবস্থানকারী রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলেন এবং দুঃখ দুর্দশার খোঁজ খবর নেন। এছাড়াও মন্ত্রী নাইক্ষ্যংছড়ির চাক ঢালায় ত্রাণবাহী গাড়ী উল্টে নিহত ৯ জনের পরিবারকে ১ লাখ টাকা অনুদান দেন।
এই সময় মন্ত্রীর সাথে ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি, পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের যুগ্নসম্পাদক আব্দুর রহমান এমপি, ঢাকা জেলার সভাপতি মোঃ সাইফুল হাসান নিখন, বান্দরবানের জেলা প্রশাসক দিলীক কুমার বণিক, পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়, বান্দরবান পৌর মেয়র ইসলাম বেবির আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য শফিকুর রহমান, জেলা পরিষদের সদস্য মোজাম্মেল হক বাহাদুর, সাবেক সদস্য আবদুর রহিম চৌদুরী, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি কাউছার সোহাগ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ত্রাণ ব্যবস্থাপনার কাজে বিমান বাহিনী
এদিকে আমাদের বিশেষ সংবাদদাতা জানান, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাহায্যার্থে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ত্রাণ-সামগ্রী আনলোড ও ডেসপাসে সাহায্য করছে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী। আইএসপিআরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ত্রাণ কাজ সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর জহুরুল হক ঘাঁটির সিনিয়র ট্রাফিক কন্ট্রোল অফিসার উইং কমান্ডার মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেনকে প্রধান সমন¦য়কারী করে একটি ত্রাণ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র (আরএমসি) গঠন করা হয়েছে। স্থানীয় ঘাঁটির সদস্যরা তাদের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে সিভিল এভিয়েশনের সঙ্গে সমন¦য়পূর্বক চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিভিন্ন দেশ থেকে আগত ত্রাণ-সামগ্রী আনলোড এবং পরিবহণের কাজে সহায়তা করে যাচ্ছে। ত্রাণ-সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে চাল, আটা, লবণ, মাছ, বিস্কুট, চকলেট, নারকেল তেল, জেনারেটর, ফ্যামিলি কিট, লুঙ্গি, ঔষধ, পাউডার দুধ, চিনি, খেজুর, তাবু, কম্বল, তৈরী পোষাক ইত্যাদি। উল্লেখ্য যে, গত ৯ সেপ্টেম¦র থেকে বিভিন্ন দেশ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ত্রাণ-সামগ্রী আসতে থাকে। এ পর্যন্ত মরক্কো, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া ও সৌদি আরব থেকে ১৬টি বিমানযোগে ৪৬৭.৬৬ টন ত্রাণ-সামগ্রী চট্টগ্রামে এসে পৌঁছেছে। এছাড়া বিমান বাহিনীর সদস্যরা বিমানবন্দরে আসা ত্রাণ-সামগ্রী রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ওয়্যার হাউসের ব্যবস্থা করেছেন। বিমানবন্দর এলাকায় প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শেষে সেনাবাহিনীর কাছে ত্রাণ-সামগ্রী হস্তান্তর করছেন বিমান বাহিনীর সদস্যরা। পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যদের প্রয়োজনীয় সাহায্য-সহযোগিতা প্রদান করছেন। উল্লেখ্য যে, গত ২৩ সেপ্টেম¦র মালয়েশিয়া থেকে আগত ত্রাণবাহী এএন-১২৪ পরিবহণ বিমানটির অবতরণ সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয় গ্রাউন্ড সাপোর্ট না থাকা সত্তে¦ও বিমানটিকে সফলতার সহিত অবতরণ করাতে সক্ষম হয়েছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পাশে থাকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করছে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী।
রোহিঙ্গাদের ত্রাণকার্ড দেয়া হবে
ত্রাণ বিতরণের দায়িত্বে সেনাবাহিনীরোহিঙ্গাদের মাঝে সুষ্ঠু ও সমন্বিতভাবে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে পরিবার প্রতি একটি করে ত্রাণকার্ড দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে এ কার্যক্রম শুরু হবে। সেনাবাহিনী ত্রাণ কার্যক্রমের দায়িত্ব নেয়ার পর এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে টেকনাফের মুছনি শরণার্থী ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেজর করিম। তিনি বলেন, সেনাবাহিনী জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে রবিবার থেকে পুরোদমে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি প্রত্যেক পরিবারকে একটি করে ত্রাণকার্ড করে দেবো। তাহলে এক সপ্তাহের খাবারসহ যাবতীয় সহযোগিতা একসঙ্গে দিয়ে দিতে পারবো। ফলে তাদেরকে প্রতিদিন ত্রাণের জন্য অপেক্ষায় বসে থাকতে হবে না। তাতে দু’পক্ষেরই ঝামেলা কমবে। তিনি বলন,কার্ডের পেছনে ক্যালেন্ডার থাকবে, ত্রাণ গ্রহণের পর প্রতিটি কার্ডে তা লিপিবদ্ধ থাকবে। উখিয়া ও টেকনাফের শরণার্থী ক্যাম্পের আশেপাশের রাস্তাঘাটে যানজট ও যেখানে সেখানে রোহিঙ্গাদের জটলা গতকাল একেবারেই দেখা যায়নি।



 

Show all comments
  • Jalal Uddin Ahmed ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১১:৪৭ এএম says : 0
    Minister agreed that army people are the best for discipline and security. Please Deploy the army in Elections.
    Total Reply(1) Reply
    • LUTFUR RAHMAN ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ৫:৩৮ পিএম says : 4
      He understood after 8 years .
  • Abdul Monnaf ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১১:৪৯ এএম says : 0
    Thank you sir for your valuable comments. Such the Army can render their smooth services in every crucial moment in Bangladesh.
    Total Reply(0) Reply
  • Jamal Bin Rahaman ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১১:৫০ এএম says : 0
    এজ‌ন্যে জনগন নির্বাচ‌নের কা‌জে সেনা বা‌হিনীর উপস্থি‌তি চায়।
    Total Reply(0) Reply
  • Rahman Sadman ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১১:৫১ এএম says : 0
    এই দাবিটা ছিল,বিএনপি সহ জনগণের নতুবা এমনটি আশা করা যেত না।তাই সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ।
    Total Reply(0) Reply
  • Mizanur Rahman ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১১:৫১ এএম says : 0
    তাই বলি, নিরবাচনেও জেন,সেনাবাহিনী দেওয়া হয়, তাহলে সব কিছু ঠিক মত হবে,
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ওবায়দুল কাদের


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ