Inqilab Logo

শনিবার ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ২৯ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

জঙ্গি অর্থায়নের অভিযোগে গ্রেফতার ১১ : র‌্যাব

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বাংলাদেশে জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিদেশ থেকে দেশীয় সফটওয়্যার কোম্পানি ওয়াইমি›র মাধ্যমে জঙ্গি অর্থায়ন আসত। জঙ্গি অর্থায়নের ৪৭ শতাংশ কোম্পানির অবকাঠামো তৈরি, বেতন এবং বাকি ৫৩ শতাংশ অর্থ জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যয় হয় । এর সাথে জড়িতদের ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানিয়েছেন বাহিনীটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান মুফতি মাহমুদ খান।
র‌্যাব জানায়, কোম্পানিটির মালিকের মৃত্যুর পর তার ছোট ভাই আতাউল হক সবুজ স্পেনে বসে জঙ্গিদের অর্থায়ন করছে। এ অভিযোগে স্পেনের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাকে গ্রেফতার করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে মুফতি মাহমুদ বলেন, ব্যক্তি মালিকানাধীন ইন্টারন্যাশনাল সফটওয়্যার কোম্পানি আইব্যাক। যার শাখা বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৯টি দেশে খোলা হয়েছিল। প্রতিষ্ঠানটির মালিক সাইফুল হক শিপন সিরিয়াতে বোমা বিস্ফোরণে নিহত হন। জঙ্গিবাদে অর্থায়নের অভিযোগে ২০১৫ সালের দিকে আন্তর্জাতিক এই প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয়া হয়। পরে প্রতিষ্ঠানটির মালিক হন আতাউল হক সবুজ। পরে তিনি নিরাপদ এলাকা হিসেবে স্পেনে গিয়ে বসবাস শুরু করেন। আতাউল হক সবুজ স্পেনে আইব্যাকের আদলে সিনটেল নামে একই প্রতিষ্ঠান চালু করে। এর আদলে বাংলাদেশে সফটওয়্যার কোম্পানি ওয়াইমি টেকনোলজি চালু করে। তিনি আরও বলেন, স্পেনের সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান সিনটেক থেকে প্রেরিত অর্থের ৪৭ শতাংশ বাংলাদেশে অফিস অবকাঠামো তৈরি ও কর্মচারীদের বেতনের জন্য ব্যয় করা হয়। আর বাকি ৫৩ শতাংশ অর্থ জঙ্গি কার্যক্রমে ব্যয় করে বলে গোয়েন্দা তথ্যে রয়েছে।
এর আগে র‌্যাবের অভিযানে ঢাকা, খুলনা ও রাজশাহীতে অভিযান চালিয়ে জঙ্গিবাদে অর্থায়নে জড়িত থাকার অপরাধে ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪।
গ্রেফতাররা হলেন- আল মামুন (২০), আল-আমিন (২৩), ফয়সাল ওরফে তুহিন (৩৭), মঈন খান (৩৩), আমজাদ হোসেন (৩৪), মো. নাহিদ (৩০), মো. তাজুল ইসলাম ওরফে শাকিল (২৭), মো. জাহেদুল্লাহ (২৯), আল আমিন (২৩), টনি নাথ (৪০) এবং মো. হেলাল উদ্দিন (২৭)। এ সময়ে তাদের কাছ থেকে ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন ও নথিপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ২০১৫ সালে ৭ জনকে আসামি করে একটি মামলাও হয়েছিল। ওই মামলায় বর্তমানে চারজন আসামি জামিনে রয়েছেন। এদের মধ্যে দুইজন রাতের অভিযানে গ্রেফতার হন।
তিনি বলেন, আটককৃতদের মধ্যে ৭ জন দেশীয় সফটওয়্যার কোম্পানি ওয়াইমি›তে কর্মরত ছিল। বাকি ৪ জন অন্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।
কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, আইব্যাক নামের সফটওয়ার কোম্পানিটি বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যসহ পৃথিবীর নয়টি দেশে ব্যবসা ছিল। ওই প্রতিষ্ঠানটি জেএমবির সারোয়ার-তামিম গ্রুপের বাশারুজ্জামান চকলেটের মাধ্যমে তামিম চৌধুরীকে ৫০ হাজার ইউএস ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি টাকা দিতে চেয়েছিল। তখন বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জেনে ফেলা। বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যে আইব্যাকের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। তবে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদে কি পরিমাণ অর্থ এসেছে তার সঠিক কোনো হিসাব দিতে পারেননি এবং এর পেছনে কার যোগসাজশ আছে সে বিষয় কোনো তথ্য দেয়নি র‌্যাব।
কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, আজকের অভিযানে অন্য একটি নতুন মাত্রা আছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে যখন নিশ্চিত হই যে বাংলাদেশি এক নাগরিক স্পেনে থেকে জঙ্গি কাজে জড়িত আছে। তারপর বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর অনুমতিক্রমে স্পেনের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় এবং তাকে সেখানেই চিহিৃত করা হয়। পরে আজ বাংলাদেশে যখন অভিযান হচ্ছিল, একই সময় স্পেনে সেই দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আতাউল হক সবুজকে গ্রেফতার করেছে। সবুজের স্ত্রীও স্পেনে বসবাস করেন। তার বিরুদ্ধেও সেই দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মুফতি মাহমুদ খান বলেন, কি প্রক্রিয়ায় জঙ্গি অর্থায়ন এসেছে, এই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সবাই এ বিষয়ে অবগত ছিল। আটক আসামিদের আরও জিজ্ঞাসাবাদে বিস্তারিত জানা যাবে। ##



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জঙ্গি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ