মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
রোহিঙ্গা সংকটকে ‘মিয়ানমারের লজ্জা’ আখ্যা দিয়েছে বিশ্বখ্যাত টাইম ম্যাগাজিন। টাইমের চলতি সংখ্যার প্রচ্ছদ প্রতিবেদন করা হয়েছে রাখাইন সংকট নিয়ে। পত্রিকাটি বলছে, রোহিঙ্গাদের দুর্দশায় মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচির কলঙ্কিত হয়েছে। ১২ পৃষ্ঠার দীর্ঘ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আসা এখনও অব্যাহত আছে। যারা আসছেন তাদের সবার গল্পই অভিন্ন। তাদের গ্রামগুলো জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। ধর্ষণ ও পরিবারের সদস্যদের খুন করার খবর পাওয়া যাচ্ছে। দুর্ভাগ্যজনক হল কোনো পরিবারের দুর্দশা অন্যের চেয়ে কম নয়।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে-
গত ২৫ আগস্ট উপগ্রহের ছবিতে প্রথম ধরা পড়ে, রাখাইনে গ্রামের পর গ্রাম জ্বলছে। ওই রাজ্যে সেনা চৌকিতে কথিত মুসলিম জঙ্গিদের হামলার কয়েক ঘণ্টা পর থেকে পশ্চিম রাখাইনের সমগ্র টাউনশিপই জ্বলছে। এরপরই প্রতিবেশী বাংলাদেশে শরণার্থীদের ঢল নামে। বৌদ্ধ প্রধান মিয়ানমারের মুসলিম নৃগোষ্ঠী অধ্যুষিত এলাকাটিতে দৃশ্যত সেনাবাহিনীর প্রতিশোধের জেরে হাজার হাজার রোহিঙ্গা পালাতে শুরু করে। শরণার্থীরা ত্রাণকর্মীদের বলেছেন, সেনারা তাদের ঘরবাড়িতে আগুন দিয়েছে এবং তাদের পালানোর পথেও স্থলমাইন বসিয়েছে। তারা জানান, পলায়নরত রোহিঙ্গা নারী ও শিশুদের গুলি করছে মিয়ানমার সেনারা।
রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাদের হামলা এই প্রথম নয়। তবে এবারের মাত্রা আগের চেয়ে ব্যাপকতর। পরের তিন সপ্তাহে ২০০’র বেশি গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়া হয়। বাংলাদেশে শরণার্থী হয়ে আসে ৪ লাখ ৩০ হাজার মানুষ, যাদের দুই-তৃতীয়াংশই শিশু। মানবিক ত্রাণ সংস্থা ইউনিসেফ ও মেডিসিন সান্স ফ্রন্টিয়ার্সকে রাখাইনের সংঘাতময় এলাকায় ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রধান এ সংকটকে বলেছেন ‘জাতিগত নিধনের এক পাঠ্যপুস্তকীয় দৃষ্টান্ত’।
এ সংকটে মিয়ানমারের একটি কণ্ঠ লক্ষ্যণীয়ভাবে নীরব। মানবাধিকারের দেবী ও নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী অং সান সুচি এই বর্বরতার নিন্দা জানাননি। অথচ তিনি এখন কার্যত দেশটির সরকারপ্রধান। অন্য নোবেল পুরস্কারজয়ীরা এই বৈপরীত্য দেখিয়ে দেন। পাকিস্তানের মানবাধিকারকর্মী মালালা ইউসুফজাই বলেছেন, বিশ্ব চায় তিনি কথা বলুন। দক্ষিণ আফ্রিকার যাজক ডেসমন্ড টুটু প্রার্থনা করেছেন সুচি যেন ফের সাহসের পরিচয় দেন। তবে সুচি তাদের কথায় কান না দিয়ে উল্টো বলেছেন, রোহিঙ্গা নিয়ে ভুল তথ্যের বিশাল হিমশৈল প্রচার করা হচ্ছে। তিনি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সম্মেলনে যাবেন না বলেও ঘোষণা দেন।
রাখাইনে প্রথম অগ্নিসংযোগের ২৫ দিন পর সুচি অবশেষে বিশ্ববাসীর উদ্দেশে ভাষণ দেন। সেনা কর্মকর্তা ও বিদেশী কূটনীতিকদের সামনে মিয়ানমারের রাজধানী থেকে টিভিতে সম্প্রচারিত ভাষণে সুচি সামরিক বাহিনীর কোনো সমালোচনা করেননি। বরং রোহিঙ্গা সংকটে আন্তর্জাতিক শোরগোল নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, সরকার রাখাইনের গ্রামে অগ্নিসংযোগের খবরে উদ্বিগ্ন। কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নিতে হলে তাকে অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ শুনতে হবে। তিনি যুক্তি দেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত সংঘাতময় এলাকার পরিবর্তে যেখানে শান্তি রয়েছে সেগুলোর দিকে মনোযোগ দেয়া।
তিনি বলেন, অনেকেই জানেন না যে রাখাইনের মুসলিমদের একটি বিশাল অংশই গণহারে দেশত্যাগে শামিল হয়নি। তার মন্তব্য নিন্দিত হয়। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের নির্বাহী পরিচালক কেনেথ রথ বলেন, সুচির মন্তব্য জাতিগত নিধনকে আরও উসকে দেবে। এভাবেই একজন দেবীর পতন ঘটে। যুক্তরাষ্ট্র সুচিকে শুধু তার দেশের রক্ষাকর্তা বলেই প্রচার করেননি, দেখেছেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অহিংস অমান্য আন্দোলনের মডেল হিসেবে। তার নেতৃত্ব নিয়ে আশাবাদী হয়েছিল জাতিসংঘ। কিন্তু এখন তিনি বলছেন তার অগ্রাধিকার অন্য কিছু।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সহকারী জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বেন রোডস বলেন, ‘পরিবতনর্শীল মিয়ানমারের ভেতরে স্পষ্টতই নিজেকে একজন রাজনৈতিক অভিনেত্রী হিসেবে দেখছেন তিনি। তিনি মানবাধিকারের দেবী হিসেবে কথা বলার প্রয়োজন বোধ করছেন না। একাগ্রচিত্তে মিয়ানমারের ভেতরে তিনি সেই লক্ষ্য অর্জনে কাজ করে যাচ্ছেন। তবে এতে অত্যন্ত দৃশ্যমান এক ট্র্যাজিক অন্ধ স্থানের তৈরি হচ্ছে।’ তবে তার খ্যাতির চেয়েও বেশি কিছু ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। ভারত, চীন ও থাইল্যান্ডের মাঝের দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অস্থিতিশীলতা তৈরি হতে পারে। ব্যাহত হতে পারে গণতান্ত্রিক সংস্কার। রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নিপীড়নকে সদস্য বৃদ্ধির হাতিয়ার হিসেবে দেখছে জঙ্গিরা। রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতার জন্য ইতিমধ্যে মিয়ানমারকে শাস্তি দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে আল কায়দা।
যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য চাপ দিচ্ছে। চীন রাখাইনে বাণিজ্যিক স্বার্থ এবং একে ঘিরে বঙ্গোপসাগরে কৌশলগত প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। একসময়ের প্রশংসিত সুচি কঠোর অবস্থান নেবেন কিনা চূড়ান্ত বিচারে তার ওপর নির্ভর করছে হাজারো মানুষের জীবন।
গণতন্ত্রের পথ প্রায়ই কণ্টকাকীর্ণ। মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে দীর্ঘদিন সংঘাতে জড়িয়ে আছে দেশটির অসংখ্য জাতিগত সংখ্যালঘুরা। সুচির ওপর চাপ রয়েছে জেনারেলদের। সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে তাদের রয়েছে ভেটো ক্ষমতা। বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদীদের ক্ষমতা বাড়ছে। আমেরিকা ফার্স্ট নীতির প্রচারক ট্রাম্প প্রশাসনের সামনে প্রথমবারের মতো এলো জাতিগত নিধনের ইস্যুটি, রোহিঙ্গা নিধন। এ ব্যাপারে তাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের অনেকে চান মিয়ানমারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে এবং সামরিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ রাখাইনে সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে সর্বসম্মত বিরল এক বিবৃতি দিয়েছে। তবে এই ফোরামে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে ভর্ৎসনার সম্ভাবনা ক্ষীণ। কারণ চীনের ভেটো দেয়ার সম্ভাবনা প্রায় নিশ্চিত। সুচিকে ১৯৯১ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেয়া হয়। ২১ বছর পর তিনি সেই পুরস্কার গ্রহণ করেন। তখন তিনি ভাষণে বলেছিলেন, ‘নোবেল কমিটি যখন আমাকে শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করে তখন তারা এটারই স্বীকৃতি দিয়েছে যে, বার্মার নিপীড়িত ও বিচ্ছিন্ন জনগণ বিশ্বেরই একটি অংশ। নোবেল শান্তি পুরস্কার আমার মনের কোণে একটি দ্বার খুলে দিয়েছে।’
এসব ভালো কথার আড়ালে চাপা পড়ে একটি নির্মম বাস্তবতা। দশকের পর দশক রাখাইন রাজ্যের মুসলিমরা উদ্বাস্তু হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। রোহিঙ্গাদের প্রতি কেন এই সহিংসতা তার কারণ নিরূপণ কঠিন। তবে এর পেছনে রয়েছে ধর্মীয়, জাতিগত এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক। রাখাইনে প্রজন্মের পর প্রজন্ম বাস করে আসছে সুন্নি রোহিঙ্গা মুসলিমরা। তবে এ এলাকার বেশিরভাগ লোক বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। সরকার দীর্ঘদিন ধরে রাখাইনের প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে নাগরিকত্ব দিতে কিংবা তাদেরকে দেশটির ১৩৫টি নৃগোষ্ঠীর একটি হিসেবে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করে আসছে। মিয়ানমারের অনেকেই মনে করেন রোহিঙ্গারা বাংলাদেশি অভিবাসী। রাখাইন মিয়ানমারের সবচেয়ে দরিদ্র রাজ্য। সরকার রোহিঙ্গাদের বিচ্ছিন্ন রাখার কৌশল অবলম্বন করেছে। সরকারের অনুমতি ছাড়া তারা রাখাইনের বাইরে যেতে পারে না।
সুচি যখন নোবেল শান্তি পুরস্কার গ্রহণ করেন তার বহু আগেই রোহিঙ্গা নিপীড়নের তথ্য ছিল। ২০১২ সালে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এক প্রতিবেদনে জানায়, মিয়ানমার সরকার মুসলিমদের গ্রামগুলোতে গণ গ্রেফতার ও ব্লক রেইড চালায় যাতে রোহিঙ্গারা পালাতে বাধ্য হয়। তিনি যখন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসনাল গোল্ড মেডাল গ্রহণ করেন তখন ফের রোহিঙ্গারা দেশ ছেড়ে পালাতে শুরু করে। সে সময় ইউরোপে তাকে প্রশ্ন করা হয় রোহিঙ্গারা বার্মিজ কিনা। তিনি বলেন, ‘আমি জানি না।’ ওবামার আমলে মিয়ানমারে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডেরেক মিশেল বলেন, তার ওই মন্তব্যে লোকজন অবাক হয়ে যান। তিনি রোহিঙ্গা নিয়ে বিদেশের জনগণকে কখনই সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি।
মিশেল জানান, ২০১৬ সালের মে মাসে সুচি তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরিকে বলেছিলেন, রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে আরও সময় দরকার। তিনি রোহিঙ্গা শব্দটি ব্যবহার করতেই নিষেধ করেন। সুচির দুঃখ হল বার্মার বাইরের লোকজন রোহিঙ্গা সংকটের জটিলতা বুঝতে পারে না। তিনি চেষ্টা করেছেন কিন্তু কৌশলগত যোগাযোগে দক্ষতার প্রমাণ দিতে পারেননি। ওবামার উপদেষ্টা বেন রোডস বলেছেন, ওবামা ও তার প্রশাসনের সঙ্গে সুচির বহু বৈঠকে রোহিঙ্গা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি শুধু বলেছেন, নাগরিকত্ব সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করবেন তিনি। সুচি বলেছেন, তিনি যদি রোহিঙ্গা সংকটে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বড় ভূমিকা রাখার সুযোগ দেন তবে সেনাবাহিনীর ওপর তার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা ব্যাহত হবে। রোডস বলেন, আমরা এবং আমাদের দূতাবাস এই ইস্যুতে সরব ছিলাম বলেই রাখাইনে মানবিক ত্রাণ তৎপরতার সুযোগ দেয়া হয় এবং নাগরিকত্ব ইস্যুটির সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হয়।
২০১৬ সালে হোয়াইট হাউসে সুচির সঙ্গে বৈঠক করেন ওবামা। এরপর মিয়ানমারের ওপর দুই দশক আগে আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়। রোডসের দাবি, এটা করার কারণ ছিল যাতে দেশটিতে বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হয় এবং সুচির সরকার স্থিতিশীল ও দৃঢ় হয়। এটা হলেই তারা রোহিঙ্গা সংকট সামাল দিতে পারবে বলে মনে করা হয়েছিল। তবে মানবাধিকার কর্মীরা মনে করছেন, এর ফলে অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। কেনেথ রথ বলেন, এতে সেনাবাহিনীকে এ বার্তা দেয়া হয়েছে যে, প্রতীকী গণতন্ত্র দিলেও আপনি পার পেয়ে যেতে পারেন। আপনি নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখে সুচিকে নামসর্বস্ব প্রধান বানিয়ে নৃগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নিপীড়ন জারি রাখতে পারেন অথচ আপনার ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা থাকবে না। তিনি বলেন, ওবামা প্রশাসন মিয়ানমার ইস্যুতে খুব দ্রুতই বিজয় দাবি করেছিল। এখন সেখানে যা ঘটছে তার কিছুটা দায় তাদেরও।
ট্রাম্প প্রশাসন এ বিষয়ে এখনও তেমন জড়ায়নি। তবে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নিপীড়ন যে মাত্রায় পৌঁছেছে তাতে ট্রাম্প হস্তক্ষেপ করতে পারেন। তিনি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেছেন এবং একমত হয়েছেন যে মিয়ানমারের এ সংকটের অবসান দরকার এবং প্রয়োজন মানবিক ত্রাণের প্রবেশাধিকার। সুচির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন। এরপর যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গাদের জন্য ৩ কোটি ২০ লাখ ডলার সাহায্যের ঘোষণা দেয়। মার্কিন কর্মকর্তারা এখন সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন। তবে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে করণীয় নিয়ে বিভক্ত কংগ্রেস।
সিনেট মেজরিটি নেতামিচ ম্যাককনেল সুচির পক্ষ নিলেও সিনেটর জন ম্যাককেইন রাখাইনে জাতিসংঘ তদন্ত দলকে কাজ করতে দেয়ার জন্য সুচির কাছে চিঠি লিখেছেন। সিনেটর ডায়ানে ফেইনস্টেইন জাতিগত নিধনের অপরাধে মিয়ানমারের সামরিক ও বেসামরিক নেতাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা ও সামরিক সহযোগিতা বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। মিয়ানমারকে দেয়া অগ্রাধিকার বাণিজ্য সুবিধাও স্থগিত রাখার কথা বলেছেন তিনি।
জাতিসংঘের চলমান বার্ষিক সম্মেলনে গুরুত্ব পাচ্ছে রোহিঙ্গা সংকট। দুই মাস পর মিয়ানমার সফরে যাচ্ছেন ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের প্রধান নেতা পোপ ফ্রান্সিস। তিনি ‘রোহিঙ্গা ভাইবোনদের’ পক্ষে দৃঢ়ভাবে অবস্থান নিয়েছেন। তার সফরেও বিষয়টি উত্থাপতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে কোনো কিছুতেই রোহিঙ্গা নিধন থামছে না। সুচি দাবি করেছেন, ৫ সেপ্টেম্বরের পর আর কোনো সেনা অভিযান চলেনি। কিন্তু সেখানে যারা আছেন তারা বলছেন অভিযান চলছেই।
বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী রবার্ট ওয়াকিনস মনে করছেন, নাফ নদী পাড়ি দিয়ে অন্তত ১০ লাখ (সব) রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পাড়ি দেয়ার পথে আছেন। তিনি বলেন, ‘যারা আসছেন তাদের সবার গল্পই অভিন্ন। তাদের গ্রামগুলো জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। ধর্ষণ, পরিবারের সদস্যদের খুন করার খবর পাওয়া যাচ্ছে। দুর্ভাগ্যজনক হল কোনো পরিবারের দুর্দশা অন্যের চেয়ে কম নয়।’ (সংক্ষেপিত)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।