পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিষাক্ত আবর্জনা ও ট্যানারির বর্জ্যে ঢাকার বুড়িগঙ্গা এখনও দূষিত। বুড়িগঙ্গাকে বাঁচাতে হাজারীবাগের ট্যানারি শিল্পকে সাভারে স্থানান্তর করা হয়েছে। এবার সাভারের ট্যানারির দূষণে আক্রান্ত হচ্ছে ধলেশ্বরী নদী। সেখানে এখনো পরিকল্পিত ডাম্পিং স্টেশন গড়ে ওঠেনি।
সরকারি তদারকি ও নজরদারির অভাবে নিয়ম অমান্য করে সেখানেও শুরু হয়েছে নদী দূষণ। চামড়া শিল্পকর্তৃপক্ষ ও মালিকদের কারসাজিতে কলকারখানার বর্জ্য গিয়ে পড়ছে ধলেশ্বরীতে। এতে করে ধলেশ্বরীও বুড়িগঙ্গা হতে চলেছে। গত ৮ সেপ্টেম্বর পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর একটি প্রতিনিধি দলের সাভার চামড়া শিল্প নগরীর বর্তমান অবস্থা সরেজমিনে পরিদর্শনের ভিত্তিতে তৈরিকৃত প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। জানা গেছে, ট্যানারির বর্জ্য পরিশোধন না করে সরাসরি ও আংশিক পরিশোধিত বর্জ্যে ড্রেনেজের লাইন সংযুক্ত করা হয়েছে নদীর সাথে।
এ কারণে ধলেশ্বরী, কালিগঙ্গা, বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদী একই সঙ্গে দূষিত হবে। কারণ এই চারটি নদী একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত। পবার প্রতিবেদনে বলা হয়, সাভার চামড়ানগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বেহাল দশার দায়ভার শিল্প মন্ত্রণালয়, বিসিক ও প্রকল্প কর্তৃপক্ষ, শিল্প মালিক, পরিবেশ অধিদপ্তর এবং বুয়েটের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কেউই এড়াতে পারে না। সিটিপি’র ইতিপূর্বে চালুকৃত ১২ হাজার ঘনমিটার বর্জ্য পরিশোধণের দুটি মডিউল বর্জ্য কাঙ্খিত মানমাত্রায় পরিশোধনে ব্যর্থ। সিটিপির প্রক্রিয়ার বিভিন্ন স্তরে এবং পরিশোধিত বর্জ্যরে গুণাগুণ নিয়মিত পরীক্ষার জন্য এখন পর্যন্ত কোন গবেষণাগার স্থাপিত হয়নি। যদিও সিটিপির মডিউল চালু হওয়ার সাথে সাথেই নিয়মিত বর্জ্যরে গুণাগুণ পরীক্ষা করা জরুরী। এ গবেষণাগার স্থাপিত না হওয়ায় বর্জ্যরে গুণাগুণ সম্পর্কে কোন ধারণা পাওয়াই সম্ভব নয়। গবেষণাগার স্থাপিত না হওয়ার দায়ভার প্রকল্প কর্তৃপক্ষকেই বহন করতে হবে। এতে বলা হয়, বিভিন্ন শিল্প-প্রতিষ্ঠানের অপরিশোধিত বর্জ্য স্ক্রিনিং করার পর দুটি আলাাদা পাইপ লাইনে সিটিপিতে এবং ক্রোম রিকোভারি ইউনিটে নির্গমণ করা বাঞ্চনীয়। কিন্তু বাস্তবে শিল্প-প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের বর্জ্য স্ক্রিনিং ছাড়াই পাইপ লাইনে ছেড়ে দিচ্ছে। এতে পাইপ লাইন বøক হয়ে বর্জ্য শিল্প-নগরীতে ছড়িয়ে পড়ছে। এছাড়াও ক্রোম মিশ্রিত বর্জ্য আলাদা পাইপ লাইনে ক্রোন রিকোভারি ইউনিটে যাওয়া কথা থাকলেও শিল্প মালিকরা তা না করে এ বর্জ্য পাইপ লাইনের মাধ্যমে সরাসরি সিটিপিতে প্রেরণ করছে। এতে সিটিপির কার্যকারীতা ব্যহত হচ্ছে। ফলে ট্যানারী শিল্পের অপরিশোধিত বা সিইটিপির মাধ্যমে স্বল্প পরিশোধিত বর্জ্য ধলেশ্বরী নদীতে ফেলা হচ্ছে। এভাবে ধলেশ্বরী নদীর পানিও বুড়িগঙ্গার মতো ক্রমান্বয়ে দূষিত হয়ে পড়ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সিটিপির ¯øাজ থেকে তরল বর্জ্য অপসারণসহ এর পরিমাণ হ্রাসের লক্ষ্যে চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে কেক বানানোর যে প্রক্রিয়া তা এখনো শুরু করা হয়নি যা অনতিবিলম্বে বাস্তবায়ন করা জরুরী। অন্যথায় এ ¯øাজ দ্বারা দূষণের মাত্রা প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকবে। এ ছাড়া বিভিন্ন শিল্প থেকে ক্রোমিয়াম পৃথক পাইপের মাধ্যমে ৩টি ক্রোম রিকোভারি সেন্টার পৌঁছানোর ব্যবস্থা থাকার কথা থাকলেও এখনো সব শিল্প থেকে তা আসছে না। ক্রোম মিশ্রিত বর্জ্য কিছুটা পরিশোধিত হলেও এখান থেকে ক্রোম পূণ:ব্যবহার করার উপযোগী ব্যবস্থা চালু হয় নি। ক্রোম রিকোভারি সেন্টারের উচ্ছিষ্ট বর্জ্যটুকু সরাসরি পুকুরে ফেলা হচ্ছে।
পবার পক্ষ থেকে বলা হয়, কঠিন বর্জ্যরে ডাম্প ইয়ার্ড তৈরির কার্যক্রম এখনো শুরুই হয় নাই। কিছু অংশ পুকুরে অন্য অংশ যত্রতত্র ফেলানো হচ্ছে। কঠিন বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন তৈরি করার কথা বলা হলেও এখনো কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় নি। লবন রিকোভারী বা ট্রিটমেন্ট করার এখনো কোন পরিকল্পনাই গ্রহণ কা হয় নাই। বৃষ্টির পানি অপসারণের জন্য ড্রেন নির্মিত হলেও শিল্প-কারখানার মালিকগণ স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের সামনে ড্রেনগুলো ভরাট করে রেখেছে। এতে রাস্তায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে এবং বৃষ্টির পানির সাথে শিল্পবর্জ্য মিশ্রিত পানি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। শ্রমিকদের আবাসন, খেলাধূলা, স্বাস্থ্য, শিক্ষার কোন পরিকল্পিত ব্যবস্থা নাই।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সাভার চামড়া শিল্পকর্তৃপক্ষ ও মালিকদের ব্যর্থতার দায়ে সাভার চামড়া শিল্পনগরীর বর্জ্য-ব্যবস্থাপনার বেহাল দশা থেকে উত্তরণের জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা উচিত। তাছাড়া সাভার চামড়া শিল্প নগরীর বর্জ্য-ব্যবস্থাপনাসহ সামগ্রিক কার্যক্রম তাদারকির জন্য একটি ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা সময়ের দাবী। পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় সাভারের ট্যানারী শিল্প নগরী আজ যে অবস্থানে পৌছেছে এ থেকে সুফল পেতে হলে আমাদেরকে আরও কিছু পথ পাড়ি দিতে হবে। উপরোক্ত সমস্যাসমূহের দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ না নিলে সাভার চামড়া শিল্প নগরী অচিরেই হাজারীবাগের মতো অবস্থা হবে।
পরিবেশ বিজ্ঞানীদের, এক নদী বাঁচাতে ট্যানারি স্থানান্তর করা হয়েছে। কিন্তু সেখানেও যদি তদারকি না হয়, নিয়ম না মানা হয় তবে তা আরও মারাত্মক ক্ষতির কারণ হবে। সাভারের ট্যানারি ৪ নদীকে ধ্বংস করবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।