Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

দক্ষিণাঞ্চলে খোলাবাজারে সরকারি আতপ চাল কিনছে না কেউ

নাছিম উল আলম বরিশাল থেকে : | প্রকাশের সময় : ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

এক-তৃতীয়াংশ ডিলারও চাল তোলেন নি
খোলা বাজারে অগ্নিমূল্য নিয়ন্ত্রনে সারা দেশের সাথে দক্ষিণাঞ্চলের খোলা বাজারেও সরকারি চাল বিক্রি কার্যক্রম শুরু হলেও তা ইতোমধ্যেই মুখ থুবড়ে পড়েছে। সিদ্ধ চালের পরিবর্তে আতপ চাল দেয়ায় প্রথমেই ডিলারগণ এ চাল তুলতে অপরগতা প্রকাশ করে। গত রবিবার থেকে খাদ্য বিভাগের চাল বিক্রি কার্যক্রম শুরু হলেও প্রায় সব ডিলারই চাল তুলতে চাচ্ছে না। তবে ‘খুব শীঘ্রই সিদ্ধ চাল গুদামে পৌছলে তা খোলা বাজারে ছাড়া হবে’ বলে আশ্বস্ত করায় কিছু ডিলার চাল তুললেও ভোক্তাদের কোন আগ্রহ নেই। ফলে ডিলারা যে চাল তুলেছে তা নিয়েও পড়েছে মহা বিপাকে। গত দুদিনে নতুন করে কোন ডিলার আর চাল তুলছে না সরকারি গুদাম থেকে। এমনকি বেশীরভাগ জেলা সদরেই এক-তৃতীয়াংশ ডিলারও সরকারি গুদাম থেকে চাল তোলেন নি।
উপরন্তু জেলা সদরের বাইরে উপজেলা সদরেও এবার সরকারি চাল বিক্রির কোন পদক্ষেপ নেই। ফলে এ কার্যক্রম চালের বর্তমান অগ্নিমূল্যের লাগাম টেনে ধরতে আদৌ সক্ষম হবে বলে মনে করছেন না ওয়াকিবহাল মহল। যে উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নিয়ে সরকার খোলা বাজারে চাল বিক্রি কার্যক্রম শুরু করেছে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে তা শুরুতেই ভেস্তে যেতে বসেছে বল মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে ২১জন ডিলারকে ৩০টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির জন্য তালিকাভুক্ত করা হলেও গতকাল পর্যন্ত মাত্র ৭জন ১টন করে আতপ চাল গুদাম থেকে ছাড় করেছেন। কিন্তু তিন দিনে সর্বমোট ১টন চালও বিক্রি করতে পারেন নি ৭জন ডিলার। অথচ ৩দিনে ৭টন করে মোট ২১টন চাল বিক্রি করার কথা।
বরিশাল বাদে অপর ৫টি জেলা সদরের চিত্রও প্রায় অনুরূপ। প্রতিটি জেলা সদরে ৫জন করে ডিলার প্রতিদিন ১টন করে সর্বমোট পাঁচ টন চাল বিক্রী করার কথা। কিন্তু পাঁচ জেলার ২৫জন ডিলারের অর্ধেকও আতপ চাল তোলেন নি। গত ৩দিনে পাঁচটি জেলায় ৭৫টন চাল বিক্রির কথা থাকলেও ডিলারা ৫টন চালও বিক্রি করতে পারেন নি বলে জানা গেছে।
ফলে সরকারি চাল বিক্রি কার্যক্রম ইতোমধ্যে চরম হতাশার সৃষ্টি করেছে দক্ষিণাঞ্চলের চালের বাজারে। অপারদিকে দক্ষিণাঞ্চলে সরকারি খাদ্য গুদামগুলোতে মজুদ পরিস্থতিও সন্তোষজনক নয় বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। গতকাল পর্যন্ত বরিশাল বিভাগের ৬টি জেলার ১লাখ ১০হাজার টন ধারন ক্ষমতার গুদামগুলোতে চালের মজুদ ছিল ১২হাজার টনেরও কম। আর গম ছিল মাত্র আড়াই হাজার টনের মত। তবে এব্যপারে খাদ্য বিভাগের দায়িত্বশীল মহলের বক্তব্য, ‘খুব শীঘ্রই আরো বিপুল পরিমান চাল এ অঞ্চলের গুদামগুলোতে পৌছবে’। সিদ্ধ চালের পরিবর্তে আতপ চাল সরবারহ প্রসঙ্গে স্থানীয় খাদ্য বিভাগের বক্তব্য, ‘কেন্দ্রীয়ভাবে এ চাল সংগ্রহ করা হয়েছ, বিষয়টি নিয়ে তাদের কোন মন্তব্য নেই’।
তবে আতপ চালের প্রতি সাধারণ ভোক্তাদের কোন আগ্রহ না থাকার কারণেই গত তিন দিনে দক্ষিণাঞ্চলে সরকারি চাল বিক্রি হচ্ছে না বলে জানা গেছে। অনেক সাধারণ মানুষই চাল কিনতে এসে ফিরেও যাচ্ছেন। উপরন্তু এবার ট্রাক যোগে চাল বিক্রির কার্যক্রম না থাকায় তা ভোক্তাদের কাছ পৌছানো যাচ্ছে না। গতকাল কয়েকজন ডিলারের দোকান ঘুরে কোন ক্রেতাকেই আতপ চাল কিনতে দেখা যায়নি। এমনকি এক ডিলারের দোকানে এসে আতপ চাল দেখে ফেরত যাওয়া একজন ভোক্তা গতকাল দুপুরে ক্রুদ্ধ মনোভাব ব্যক্ত করে জানান, ‘এদেশের মানুষ যে আতপ চাল খায়না তা বুঝতে কি খাদ্য বিভাগের লোকজনদের পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করতে হবে?’।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চাল

১১ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ